পাকিস্তানের সাম্প্রতিক জাতীয় নির্বাচনে ৩০ থেকে ৪০টি আসনে বিশেষ মহলের ইচ্ছায় ‘হস্তক্ষেপ’ হয়েছে দাবি করেছ জামায়াতে ইসলামি পাকিস্তান। আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন জামায়াতের নায়েবে আমির লিয়াকত বেলুচ।
লাহোরে সংবাদ সম্মেলনে লিয়াকত বেলুচ বলেন, ‘পাকিস্তানের রাজনীতিতে ৩০-৪০টি আসনের একটি খেলা হয়। এসব আসনকে টার্গেট করে ফলাফল বদলে দেয়া হয়।’ তিনি দাবি করেন, ‘কারো পছন্দের’ কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়ার জন্য এমনটা করা হয়। তিনি বলেন, ‘১৯৭৭ সালে এই হস্তক্ষেপ হয়েছিল। এবং মনে হচ্ছে, এমনটা প্রতিটি নির্বাচনেই হয়ে থাকে।’
জামায়াত নেতা অভিযোগ করেন, পরবর্তী পাঁচ বছর যাতে রাজনীতি, গণতন্ত্র এবং পার্লামেন্ট ‘শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানগুলোর হাতে থাকে’ সেজন্য এমনটা করা হয়। সরকার গঠন নিয়ে ইমরানের দলের সাথে সহযোগিতা করবে না জামায়াত এদিকে জামায়াতে ইসলামি পাকিস্তান বুধবার ঘোষণা করেছে যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির সাথে সরকার গঠন নিয়ে তারা সহযোগিতা করবে না।
জামায়াতের নায়েবে আমির লিয়াকত বেলুচ জিও নিউজকে বলেন, পিটিআইলে সাথে সহযোগিতা না করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের দল। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় পর্যায়ে আরেকটি দলের সাথে জোট গঠন করেছে পিটিআই। ফলে কেবল খাইবার পাকতুনখাওয়ায় পিটিআইয়েল সাথে জোট করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’ বেলুচ বলেন, ‘পিটিআইয়ের সাথে যে আলোচনা চলছিল, তা উভয় সরকার নিয়ে।’
উল্লেখ্য, খাইবার পাকতুনখাওয়ায় পিটিআই একাই সরকার গঠন করার মতো অবস্থায় রয়েছে ইমরান খানের দল। আর কেন্দ্রে তাদের ব্যাপক সমর্থন লাগবে। তবে কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টে জামায়াতের কোনো আসন নেই। পিটিআই মূলত জামায়াতের সাথে জোট গঠন করতে চেয়েছিল সংরক্ষিত নারী ও সংখ্যালঘুদের জন্য নির্ধারিত ৭০টি আসনের হিস্যা পেতে। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, স্বতন্ত্ররা কোনো সংরক্ষিত আসন পাবে না। এ কারণে জামায়াতের সাথে জোট বেঁধে তারা ওই আসনগুলো থেকে তাদের হিস্যা আদায় করতে চেয়েছিল পিটিআই।
পিটিআই দৃশ্যত মজলিস-ই-ওয়াদাত-মুসলিমিন (এমডব্লিউএম) পার্টির সাথে কেন্দ্রে জোট গড়ছে। তবে এর মাধ্যমে তারা সংরক্ষিত আসন পাবে কিনা তা নিশ্চিত নয়।
উল্লেখ্য, সরকার গঠন নিয়ে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) মধ্যে ইতোমধ্যে সমঝোতা হয়েছে। মিডিয়ায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী শাহবাজ শরিফ হতে যাচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। আর নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ হবেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। পিপিপির আসিফ আলি জারদারি হবেন দেশটির রাষ্ট্রপতি। সূত্র : ডন, দি নিউজ ইন্টারন্যাশনাল এবং অন্যান্য