পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ২নং মালিখালী ইউনিয়নের সাচিয়া গ্রামের মাধব চন্দ্র রায় এর কণিষ্ঠ কন্যা ঈশিতা রানী (নীপন)(২৫) নারী-শিশু নির্যাতন মামলা প্রত্যাহার না করায় মৃত্যুশহ্যায়। জানা গেছে গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু কলেজের অনার্স বিভাগের ছাত্রী ঈশিতা রানী (নীপন) দীর্ঘদিন একই গ্রামের রমেশ মন্ডলের পুত্র জিৎ মন্ডল(৩৫) এর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের জেরে গোপালগঞ্জ নোটারী পাবলিক আদালত হইতে এবং সনাতন ধর্মীয় নিয়মানুযায়ী মন্দিরে গিয়ে ২০২০ সালে বিবাহ সম্পন্ন করে গোপালগঞ্জ জেলা সদর সহ ঢাকায় ভাড়া বাসায় থেকে সংসার শুরু করে। কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামী জিৎ মন্ডলের বেড়িয়ে আসে আসল চেহারা, জিৎ মন্ডলের পিতা ঐ এলাকার বিশিষ্ট সুদ ব্যবসায়ী চড়া সুদে টাকা লগ্নি করে টাকার পাহাড় গড়েছে। ঐ টাকার অহংকারে গরীব পরিবারের কন্যা হওয়ায়, কারণে-অকারণে ৩ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের ষ্টীমরোলার চলিয়ে যেতে থাকে ঈশিতার উপরে। নিজের পছন্দ ও পরিবারের অসম্মতিতে বিবাহ করায় লজ্জায় নিভৃতে সহ্য করতে থাকে অসহ্য নির্যাতন। এক পর্যায়ে ঈশিতা গোপালগঞ্জ ভাড়া বাসায় থাকা অবস্থায় নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রাতের আঁধারে পালিয়ে যায় জনৈক এক বান্ধুবীর বাসায়। পাষন্ড স্বামীর ভয়ে কোন চিকিৎসা করাতেও পারেনি ঈশিতা এমনকি পালিয়ে রয়েছে বহুদিন। অত:পর ভুক্তভোগীর ভগ্নিপতি একই উপজেলার ৭নং সেখমাটিয়া ইউনিয়নের বাকসী গ্রামের শ্রীবাসকে বান্ধবীর মোবাইল দিয়া ঘটনার বিষয় জানাইলে শ্রীবাস ঈশিতাকে উদ্ধার করিয়া নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসা করাইয়া নাজিরপুর থানায় অভিযোগ করেন। উক্ত অভিযোগে কোন সুরাহা না হইলে যৌতুকলোভী পাষ- স্বামী জিৎ মন্ডলের বিরুদ্ধে পিরোজপুর বিজ্ঞ কোর্টে বিজ্ঞ কৌশলী এ্যাড: আউয়াল এর মাধ্যমে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন যাহা বর্তমানে ১৯৮/২৩ নং মামলা হিসেবে বিচারাধীন রয়েছে। উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে জিৎ মন্ডলকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেল-হাজতে প্রেরণ করেন। দীর্ঘ ১৭ দিন জেল খাটার পরে ২২ ফেব্রুয়ারি জিৎ মন্ডল জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ী এসে ২৪ ফেব্রুয়ারি দুপুর অনুমান ১টায় ঈশিতাদের বাড়ীতে আসিয়া আক্রমন চালায়। ঈশিতা জীবন বাঁচানের জন্য দৌড়াইয়া পাশের বাড়ী সমর মন্ডলের উঠান পর্যন্ত গেলে জিৎ মন্ডল দৌড়াইয়া আসিয়া দাও দিয়া ঈশিতার মাথায় কোপাইয়া জখম করে। আহত অবস্থায় প্রতিবেশী উত্তম মন্ডলের ঘরের মধ্যে ঢুকিয়া আশ্রয় নিয়া ৯৯৯ এ কল করলে থানা-পুলিশের এসআই মোঃ মোশারেফ হোসেনের সহায়তায় ঈশিতার জীবন রক্ষা হয় বলে জানা যায়। ঈশিতাকে রক্ষা করতে গিয়া সমর মন্ডলও আহত হয় বলে সমর মন্ডল এ প্রতিনিধিকে জানান। এ ব্যাপারে উত্তম মন্ডলের সাথে আলপ করলে উত্তম মন্ডল এ প্রনিধিকে জানান, আমার ঘরে আশ্রয় না নিলে ঈশিতাকে কুপিয়ে শেষ করে ফেলত জিৎ মন্ডল। আহত ঈশিতাকে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন ও থানা-পুলিশের সহায়তায় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করেন। বিষয়টি নিয়ে নাজিরপুর থানা-পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পুলিশ জানায়, ৯৯৯ এর সংবাদ পাইয়া আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং ঈশিতাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পেরণ করি, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগী ঈশিতা আরো জানায় পাষ- স্বামী জিৎ মন্ডল মুঠো ফোনে ফোন দিয়ে হত্যার হুমকি অব্যহত রেখেছে। ঈশিতা এখন আইনগত সু-বিচার কামনা করছে।