বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ১১:৪৬ অপরাহ্ন

মিয়ানমারের মর্টারের গোলার শব্দে কেঁপে ওঠছে বাংলাদেশ সীমান্ত

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

রাত হলেই সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বেড়ে যায় গোলাগুলি ও মর্টারের বিকট শব্দ। যার কারণে আতঙ্ক বাড়ে বাংলাদেশ সীমান্তবাসীর। গতকাল মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ভোর পর্যন্ত টেকনাফের ঝিমংখালী বিপরীতে ব্যাপক গোলাগুলি ও গোলার বিকট শব্দ হয়। এতে বাংলাদেশ সীমান্ত কেঁপে ওঠে; বাড়ে আতঙ্ক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাফ নদীর তীরবর্তী সীমান্তের ওপারে রয়েছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির ঘাঁটি। একটি-দুটি নয়; রয়েছে অসংখ্য ঘাঁটি। এসব ঘাঁটি দখলে নিতে মরিয়া দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। যার জন্য দেড় মাসের বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের রাখাইনে বিজিপির সাথে আরাকান আর্মি সংঘাত চলছে। উভয়পক্ষে গোলাগুলি, মর্টারশেল ও গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটছেই। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টেকনাফের হ্নীলা সীমান্তের চৌধুরীপাড়া; তার বিপরীতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একাধিক ঘাঁটি। এসব ঘাঁটিতে উড়ছে মিয়ানমারের পতাকা। আর অবস্থান শক্ত করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি। তবে এসব ঘাঁটি দখলে নিতে আরাকান আর্মি কৌশল পাল্টে রাতের বেলায় আক্রমণ করছে বিজিপিকে। আর পাল্টা জবাব দিচ্ছে বিজিপিও। যা দেখা যাচ্ছে সীমান্তের এপার থেকে। তাদের চলমান সংঘাতের কারণে এর প্রভাব এসে পড়ছে এপারে সীমান্তের বাসিন্দাদের ওপর। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, উঁচু পাহাড়ের ওপর দিয়ে আসার সময় সীমান্তের দিকে তাকালে আগুনের দোলা আর ধোঁয়ার কু-লি দেখা যায়। মাঝে মধ্যে বিকট শব্দ হয়। বিস্ফোরণের শব্দে বসতঘরেও থাকা যায় না। বর্তমানে সীমান্ত পরিস্থিতি খুবই আতঙ্কের।
স্থানীয় জেলেরা জানান, মিয়ানমারের সংঘাতের কারণে বন্ধ রয়েছে নাফ নদীতে মাছ শিকার। যার কারণে ঘাটে নোঙর করা রয়েছে অসংখ্য ট্রলার। দীর্ঘ সময় মাছ শিকারে যেতে না পেরে নষ্ট হচ্ছে ট্রলারের ইঞ্জিনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। আর চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে নাফ নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করা কয়েক হাজার জেলে। জেলেরা জানান, ট্রলার নিয়ে নদীর ওদিকে যাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে প্রচুর গোলাগুলি হচ্ছে। কাজ বন্ধ থাকায় উপোস থাকার অবস্থা তাদের।
নাফ নদীতে মাছ শিকারে না গেলেও জীবিকার তাগিদে অনেকে জেলে ছুটে যাচ্ছে সীমান্তের নিকটবর্তী মৎস্য ঘের, ক্ষেতখামার ও লবণ মাঠে। তবে তাদেরকে নির্ভয় দেয়া হচ্ছে বলে জানান টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী। তিনি আরো বলেন, রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত থেমে থেমে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি ও মর্টারশেলের গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসে সীমান্তের এপারে। হ্নীলার ফুলের ডেইল এবং ওয়াবরাংয়ের ঠিক বিপরীত এলাকায় গোলাগুলি ও মর্টারশেলের গোলার বিকট শব্দ হয়। এপারের সীমান্তের অনেক বাসিন্দা রাতে ঘুমাতে পারেনি গুলি ও গোলার বিকট শব্দে।
সীমান্তে গোলাগুলি, মাদক পাচার ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের শঙ্কায় নাফ নদীতে বন্ধ রয়েছে মাছ শিকার। যার কারণে বিপাকে পড়েছেন ১০ হাজারের বেশি জেলে পরিবার।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com