পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে মৌসুম শুরুর আগেই বরিশালের বাজার তরমুজে ভরে গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য মতে, দক্ষিণাঞ্চলে গত মৌসুমের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে তরমুজ। বাড়তি মুনাফা নিতে অপরিপক্ব তরমুজই বিক্রি হচ্ছে বেশি। তবে এর দাম নিয়ে চলছে টালবাহানা। ক্ষেত থেকে পাইকাররা ঠিকা কিনলেও বাজারে বিক্রি হয় কেজি দরে। কৃষক আগেভাগে তরমুজের চাষাবাদ করে বাড়তি দামের আশা করছে। আর পাইকার (মধ্যস্বত্বভোগী) তাদের কাছ থেকে স্বল্প মূল্যে কিনে এর সুফল ভোগ করছেন। প্রশাসনের নজরদারি অভিযানেই সীমাবদ্ধ বলে দাবি ক্রেতাদের।
ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেন জেলা প্রশাসক। এ বছর বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কৃষক মো. ইমরান প্রায় ১৩০ একর জমিতে আগাম তরমুজ আবাদ করেছেন। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। ১০ রমজানে তার খেতের তরমুজ বাজারজাত করবেন। এতে লাভবান হওয়ার আশা করছেন ইমরান। বাউফল থেকে ট্রলারে করে ১৭০০টি তরমুজ নিয়ে বরিশাল ফলের আড়তে এসেছেন কৃষক খোকন। ১৬০ টাকা প্রতিটি করে ১০০ তরমুজের দর উঠেছে ১৬ হাজার টাকা। তার চাহিদা ছিলো ২০ হাজার টাকা। খোকন বলেন, চাহিদা অনুযায়ী আড়ৎদার দাম না বলায় হতাশ তিনি। সার, ওষুধ, শ্রমিকের খরচ মিটিয়ে ভালো দাম না পাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার কথা জানালেন কৃষক খোকন। বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড হাওলাদার ফল ভান্ডারের স্বত্বাধীকারি মনির হোসেন হাওলাদার বলেন, এবছর তরমুজের বিচির দাম বেশি সব কিছুর দাম বেশি। তাই তরমুজের দামও বেড়েছে। চৈত্রের শেষ দিকে তরমুজের দাম কমার সম্ভাবনার কথা জানালে তিনি। নগরীর চৌমাথা বাজার এলাকার ফলের দোকান গুলোতে প্রতিটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ঠিকা এবং কেজি দরে। এরকমই নগরীর সব জায়গাতে মৌসুমী রসালো এই ফল বিক্রি হয়। যা কিনে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না সাধারণ ক্রেতারা। তরমুজ কিনতে আসা ট্রাস্ট ইউনিভারসিটি বরিশালে সহযোগী অধ্যাপক মো. রমজান আলী বলেন, একটি মাঝারি তরমুজ কিনতে হলে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা লাগে একজন ক্রেতার। আমার বাবা দাদারাও কোনোদিন কেজিতে তরমুজ কিনে খায়নি। আমাকে কিনতে হচ্ছে। সাধ থাকলেও সাধ্য না থাকায় মৌসুমী ফল খেতে আগ্রহ হারাতে হচ্ছে। তার মতই অনেক ক্রেতা মৌসুমী এই ফল সহজলভ্য করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। এবিষয়ে জেলা প্রশাসেনর ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান করে সতর্ক করলেও বাস্তবে মানছে না কেউ । তবে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য কিংবা ফলের দাম বেশি রাখা হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাজার নজরদারির অংশ হিসেবে প্রতিদিনই ভ্রাম্যমাণ আদালত অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা এবং সতর্ক করছে। চলতি মৌসুমে বিভাগের ছয় জেলায় ৫৪ হাজার ২ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। যা গত বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি। ইতোমধ্যে আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৬১৮ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে বরিশাল জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াই ৯৪২ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে।