নড়াইলের নড়াগাতী থানার কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামের ভ্যানচালক রাজা শেখকে(৫৫) পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর আয়োজনে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে শ্রীনগর গ্রামে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তব্য দেন-ভুক্তভোগী রাজা শেখ ও মোহাম্মাদ আলহাজসহ এলাকাবাসীর পক্ষে ইমরান মিনা, তারিকুল ইসলাম, শহিদ খান প্রমুখ। বক্তারা বলেন, নড়াইলের শ্রীনগর গ্রামের টুলু মোল্যার ছেলে রবিউল মোল্যা কয়েক বছর আগে ওমান দেশে যান। বিদেশে থেকে এলাকার বিভিন্ন লোকজনকে ওমানে নেয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেয় রবিউলসহ তার বাবা টুলু মোল্যা ও মা রেকসোনা বেগম। এরই ধারাবাহিকতায় শ্রীনগর গ্রামের রাজা শেখ তার জামাতা মোহাম্মাদ আলহাজকে ওমানে পাঠাতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন।
ইজিবাইকসহ সহায় সম্পদ বিক্রি করে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে রাজা শেখ তার জামাতা মোহাম্মাদ আলহাজকে ওমান দেশে পাঠাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। রবিউল মোল্যা বৈধ ভিসা দিতে না পারায় ওমানের বিমানবন্দর থেকেই গত ৩ জানুয়ারি বাংলাদেশে ফেরত আসতে হয়েছে ভুক্তভোগী মোহাম্মাদ আলহাজকে। রাজা শেখ ও তার জামাতা মোহাম্মাদ আলহাজ প্রতারণার শিকার হয়ে টুলু মোল্যার কাছে পাওনা ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা আদায়ের চেষ্টা করেন। তবে ন্যায্য টাকা না পেয়ে ভুক্তভোগী মোহাম্মাদ আলহাজ প্রায় তিন মাস আগে নড়াগাতী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর নড়াগাতী থানার এসআই খান মাহবুবুর রহমান সালিশির মাধ্যমে ভুক্তভোগী ভ্যানচালক রাজা শেখকে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা আদায় করে দেন। এখনো এক লাখ ৫৫ হাজার টাকা আদায় করা সম্ভব হয়নি। এ পরিস্থিতিতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি নড়াইল আদালতে মামলা করেন ভুক্তভোগী মোহাম্মাদ আলহাজ। আদালতে মামলা দায়েরের পর এসআই খান মাহবুবুর রহমান ভুক্তভোগী রাজা শেখকে মামলা তুলে নিতে বলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া মোবাইল ফোনে রাজা শেখকে গালিগালাজ করেন। উল্টো মামলা দিয়ে থানায় এনে চালান করে দেয়ার হুমকি দেন। এছাড়া রাজা শেখদের বাড়িতে প্রায়ই পুলিশ পাঠিয়ে তার (রাজা) স্ত্রীকে গালিগালাজ করার অভিযোগ রয়েছে। কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে রাজা শেখ জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ২৪ মার্চ পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন করেন।
এ ঘটনায় এসআই খান মাহবুবুর রহমান আরো ক্ষেপে গিয়ে মোবাইল ফোনে রাজা শেখকে আবারো হুমকি দেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রবিউলের বাবা টুলু মোল্যা ও মা রেকসোনা বেগম বলেন, ওমানে গিয়ে ভিসা জটিলতায় মোহাম্মাদ আলহাজ্ব দেশে এসে টাকা চায়লে আমরা তা পরিশোধ করেছি। সব টাকা পরিশোধ করেছেন কিনা-এ প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, আমাদের কাছে রাজা শেখ বা তার জামাই আর টাকা পাবেন না। এ বিষয়ে নড়াগাতী থানার এসআই খান মাহবুবুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী অভিযোগ করলে দুইপক্ষকে থানায় ডেকে আলোচনার মাধ্যমে রাজা শেখকে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা আদায় করে দেয়া হয়েছে। তবে রাজা শেখকে গালমন্দসহ হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।