বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে রেশনিং ব্যবস্থা তুলে নিয়েছিলেন। আজকে দেশের অর্থনীতিকে লুটতরাজ করে ভঙ্গুর করে ফেলেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। মুখে স্বয়ংসম্পূর্ণের কথা বলে আবার রেশনিং ব্যবস্থা চালু করেছেন। তাও সাধারণ মানুষের আওতায় নয়, আওয়ামী গোষ্ঠী এই রেশনিং কার্ডও দলীয়করণ করেছে। তিনি বলেন, প্রতিদিন দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলছে। আদা, রসুন পেয়াজ ডলারের দামে আমদানি করতে হচ্ছে। মানুষ পেট ভরে ভাত খেতে পারছে না। আজকে সন্তান বিক্রি করে পেট চালাতে হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাত দিন ধারাবাহিক কর্মসূচির প্রথমদিনে তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ জনসাধারণের মাঝে বোতলজাত পানি, স্যালাইন বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে রফিকুল আলম মজনুর স ালনায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখন আবার ডামি উপজেলা নির্বাচন করতে যাচ্ছে। আজকে সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতারাও সুযোগ পাচ্ছে না। মন্ত্রী-এমপিদের ভাই, সালা, ভাগিনা, ভায়রাদের কারণে জিম্মি স্থানীয় জনগণ। প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় এমপি-রাজ তৈরি হয়েছে। তাও ডামি এমপি। আজকে ডামি এমপির স্ত্রী, শ্যালক, ভাই দিয়ে সৃষ্টি করা হচ্ছে এমপি-রাজ। এমপি রাজত্বের কারণে জিম্মি গোটা এলাকা।
তিনি বলেন, আমাদের বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা বার বার বলেছেন, কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবেন না। কিন্তু গণবিরোধী প্রধানমন্ত্রী গণবিরোধী প্রজেক্ট করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা গলাচিপা, বাউফলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করছে।
রিজভী বলেন, ‘ফরিদপুরে ছাত্রলীগের সভাপতির কাছে দুই হাজার কোটি টাকা, সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর ভাই না কি ১৫ হাজার কোটি টাকা অর্জন করেছে। এই আলাদীনের চেরাগ কই থেকে আসলো? কানাডা, দুবাই, মালয়েশিয়া এতো বাড়িঘরের মালিক কিভাবে হলেন? একসময় আজিমপুর কবরস্থানে যেতে হবে সেটা তারা ভুলে গেছেন।’
ওবায়দুল কাদের প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চেয়েছেন বিএনপির কর্মসূচির দিন কেন আপনারা পাল্টা কর্মসূচি দেন? তিনি বললেন, বিএনপিকে মানসিকভাবে বাধা দেয়ার জন্য আমরা পাল্টা কর্মসূচি দেই। এতেই প্রমাণিত হয় যে ওবায়দুল কাদেরের মানসিক সমস্যা রয়েছে। তিনি সন্ত্রাসী ভাষায় কথা বলেন। তিনি (ওবায়দুল কাদের) চাঁদাবাজ ও গুন্ডাদের গডফাদার।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, সারাদেশ আগুনে পুড়ছে, মানুষ অভুক্ত আছে। আর প্রধানমন্ত্রী বলে কোনো অসুবিধা নেই। মানুষ খুব ভালো আছে। জনগণের কোনো কষ্টই তাদের গায়ে লাগে না। কারণ সাধারণ মানুষকে তাদের চোখে পড়ে না। তিনি শুধু দেখেন মুজিব কোট। আজকে এক টাকার কাজ করা হচ্ছে এক শ’ টাকায়। বাকি ৯৯ টাকা খরচ হয় মুজিব কোটের পিছনে।
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু বলেন, সরকারের সবাই এসিতে ঘুমান। তাই জনগণের কষ্ট তাদের উপলব্ধি হয় না। এরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তাই মানুষের কষ্টে এদের কিছু আসে যায় না। এদের লক্ষ্য শুধু বিএনপিকে দমন করা আর লুটপাট করা। তাই এ থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হলে প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক, সহ অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন প্রমুখ।