শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২২ অপরাহ্ন

শ্রমিক সমাজের এখন বেঁচে থাকাই কষ্ট : রিজভী

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

শ্রমিক সমাজের এখন বেঁচে থাকাই কষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে আগামীকাল মহান মে দিবসের সমাবেশ উপলক্ষে আলোচনা সভা করে শ্রমিক দল।
এ সময় রিজভী বলেন, ১ মে ঐতিহাসিক মহান মে দিবসে শ্রমিক দল আগামীকাল দুপুর আড়াইটায় নয়া পল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে শ্রমিক সমাবেশ করবে এবং সমাবেশ শেষে একটি বর্ণাঢ্য শ্রমিক র‌্যালি নয়া পল্টন থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ করবে। এ বিষয়ে শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে পুলিশ কমিশনার বরাবরে পত্র দিয়ে তাদেরকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান রিজভী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিবিএস এর হিসাব অনুযায়ী ১২ কোটি ভোটারের মধ্যে ৭ কোটি ৩৫ লাখ শ্রমিক। শ্রমিক সমাজের মর্যাদার জন্য একটি দিন বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে- মে দিবস। বাংলাদেশে আজ সবচেয়ে অবহেলিত শ্রমিক সমাজ। দব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবনযাত্রার ব্যায় বৃদ্ধি, বাজারমূল্যের সাথে অসংগতি, কম মজুরিতে শ্রমিক সমাজের এখন বেঁচে থাকাই কষ্টকর। এছাড়াও সরকারের ফ্যাসিবাদী মনোভাব ও অগণতান্ত্রিক শ্রম আইনে মালিক পক্ষের স্বার্থকে প্রধান্য দেয়ায় শ্রমিক সমাজ সর্বত্র হয়রানিসহ নানাবিধ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়া ও অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার থেকে দূরে ঠেলে দেয়া হয়েছে। উপরোক্ত প্রস্তাবিত অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল ২০২৩-এর মাধ্যমে শ্রমিক কর্মচারীদের দাবি উত্থাপনের অধিকারকে আইন করে বন্ধ কারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, বর্তমানে অগণতান্ত্রিক ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে সাজানো সংসদ তৈরি করে একক ক্ষমতায় স্বৈরাচারী কায়দায় দেশ পরিচালনা করা হচ্ছে। ২৮ অক্টোবর আন্দলোনের সময় কারাবন্দী শ্রমিকদল নেতা ফজলুর রহমান কাজলের হাতে হ্যান্ডকাপ, পায়ে ডান্ডা বেড়ি পরা অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দার ফ্লোরে বিনা চিকিৎসায় হত্যা, মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে চারজন গার্মেন্টস শ্রমিক- আঞ্জুয়ারা খাতুন, রাসেল হাওলাদার, জালাল উদ্দিন ও মোঃ ইমরানকে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমজীবি মানুষের জীবন আজ ওষ্ঠাগত। সরকারের-গ্যাস বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে এর প্রভাব শুধু সাধারণ জনগণের ওপরই নয়, উৎপাদন খাত শিল্প কলকারখানাগুলোতেও পড়েছে। ফলে বন্ধ হচ্ছে কলকারখানা। সরকারি খাতের পাটকল ও চিনিকলগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে বেকার হয়েছে লাখ লাখ শ্রমিক। মানবেতর পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের পরিবার। টাকার অভাবে তাদের সন্তানদের লেখাপড়া বন্ধ হচ্ছে। অন্যদিকে সরকারি দফতরগুলোতে নিয়মিত পদ বিলুপ্ত করে আউট সোর্সিং নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ফলে শ্রমের ক্ষেত্রগুলো ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে শিক্ষিত লাখ লাখ বেকার। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্র অর্জনকারী সোনালী আশঁ খ্যাত পাটের উৎপাদন ও বিপনন বন্ধ, বাংলাদেশের মানুষের খাদ্য তালিকার অন্যতম উপাদান আমাদের দেশে তৈরি স্বাস্থ্যসম্মত চিনির পরিবর্তে কেমিক্যালযুক্ত বিদেশী চিনির ওপর বিদেশ নির্ভরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশ হারাচ্ছে শ্রমজীবী মানুষের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা।
অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন গঠন, শোভন কাজ, নিরাপদ কর্মক্ষেত্রসহ অন্যান্যদের ন্যায় শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থার দাবিতে শ্রমিক শ্রেণী তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে শ্রমিক দল কর্তৃক আয়োজিত মে দিবসের শ্রমিক সমাবেশ ও র‌্যালিতে সর্বস্তরের শ্রমজীবি মানুষ অংশ নেবেন- এমন বিএনপি আশা করছেন রিজভী। তিনি বলেন, শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে ১২ দফা দাবি সম্বলিত লিফলেট, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন করা হয়েছে। মহান মে দিবস পালনের লক্ষ্যে শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে গঠিত পাঁচটি উপ-কমিটি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি স্মরণকালের ভয়াবহ দাপদাহ উপেক্ষা করে অধিকার প্রতিষ্ঠার এই মহান দিনে শ্রমজিবী মানুষ তাদের দুঃখ কষ্ট যাতনার প্রতিবাদে শ্রমিক দলের সমাবেশে উপস্থিত হবেন। সেই সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বর্তমান শ্রম পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখবেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com