দেশের প্রথম বিশেষায়িত ‘জায়েন্ট এগ্রো পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্র’ উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধন করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুস শহীদ। বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সকালে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ভরাডোবা ক্লাবের বাজার এলাকায় ওই পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়। আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে বছরব্যাপী পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে পেঁয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে ভোক্তাদের ধারাবাহিকভাবে ভালো মানের পেঁয়াজ যৌক্তিক দামে সরবরাহের লক্ষ্যে পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জায়েন্ট এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেড। অনিয়ন ইমপেক্ট ক্লাস্টার প্রকল্প (২০২২-২৪) এর আওতায় পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রটি চালু করা হয়। নেদারল্যান্ডস সরকার ও বিভিন্ন বাংলাদেশী ও নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশী ভোক্তাদের জন্য ভালো মানের পেঁয়াজের ধারাবাহিক সরবরাহের পাশাপাশি চাষীদের কাছে মানসম্পন্ন পেঁয়াজ বীজ সরবরাহ করা, পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। পাশাপাশি প্রকল্পটি ভারতীয় পেঁয়াজের উপর নির্ভরতা কমিয়ে বাংলাদেশী পেঁয়াজে স্বনির্ভরতা অর্জনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে অবদান রাখবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুস শহীদ বলেন, জায়েন্ট এগ্রো পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রে আধুনিক পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে বছরব্যাপী দেশবাসীকে পেঁয়াজ সরবরাহ করতে পারবে। এমন উদ্যোগের জন্য আমি নেদারল্যান্ডস সরকার ও দেশী বিদেশী সকল অংশীদার প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানাই। এসময় জায়েন্ট এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেড এর চেয়ারম্যান জনাব ফিরোজ এম হাসান বলেন, পচনশীল বস্তু হওয়ায় প্রতি বছরই একটা নির্দিষ্ট সময়ে দেশব্যাপী পেঁয়াজের সংকট দেখা যায়। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে সংরক্ষণের অভাবেই নষ্ট হয় ৩০ ভাগ পেঁয়াজ। যার ফলে প্রান্তিক কৃষক ও ভোক্তা উভয়পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমরা এই পেঁয়াজ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে বছরব্যাপী ধারাবাহিকভাবে ভোক্তাদের ভালো মানের পেঁয়াজ যৌক্তিক দামে সরবরাহ করতে পারবো। পাশাপাশি কৃষকরাও পেঁয়াজ যৌক্তিক দাম পাবেন। সামগ্রিকভাবে, কৃষক ও ভোক্তা পর্যায়ে অবদান রাখোর জন্যই জায়েন্ট এগ্রো এই প্রজেক্টের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পেঁয়াজের বীজ পরীক্ষার বিভিন্ন উপায়, বক্স-ভিত্তিক পেঁয়াজ সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের যন্ত্রপাতি প্রদর্শন করা হয়। এসময় আরো উপিস্থিত ছিলেন নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডুরেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মিসেস ওয়াহিদা আক্তার, অনিয়ন ইমপেক্ট ক্লাস্টার প্রকল্পের সমন্বয়কারী মিসেস ইরমা ভারহুসেল, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিক সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। উল্লেখ্য, জায়েন্ট এগ্রো প্রসেসিং লিমিটেড বিভিন্ন ফসল ও উদ্ভিদের বীজ উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণে কাজ করে। প্রতিষ্ঠানটি প্রধানত বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আলু উৎপাদনে শীর্ষ জেলা ঠাকুরগাঁও ভিত্তিক কাজ করে থাকে। জায়েন্ট এগ্রোই বাংলাদেশের প্রথম প্রতিষ্ঠান যারা ২০০৬ সালে বৈজ্ঞানিক ও আধুনিক গবেষণার ভিত্তিতে আলুর বীজ উৎপাদন শুরু করে। জায়েন্ট এগ্রো জায়েন্ট সীড” ও বাংলা সীড” নামে কৃষকদের জন্য উন্নতমানের বীজ সরবরাহ করে থাকে। কৃষকদের ভাইরাসমুক্ত ও উচ্চ উৎপাদনশীল বীজ সরবরাহের মাধ্যমে দেশের উত্তরাঞ্চলে আলুর উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে প্রতিষ্ঠানটি। শহরের অধিবাসীদের দোরগোড়ায় নিজস্ব খামারে উৎপাদিত কৃষি পণ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ করছে জায়েন্ট এগ্রোর ফারমার্স বেস্ট নামক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম।