প্রধানমন্ত্রীর হজ কার্যক্রম উদ্বোধনের পর ৯ মে থেকে শুরু হচ্ছে হজ ফ্লাইট। কিন্তু এখনো বেশিরভাগ হজযাত্রীর ভিসা হয়নি। আবার আগের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবারই (৭ মে) ভিসা আবেদনের শেষদিন। তাই বিপর্যয় এড়াতে ভিসা আবেদনের সময় বাড়ানোর জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, সময় আরও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৪ সালের হজে বাংলাদেশ থেকে ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজযাত্রী হজ পালন করবেন। ৯ মে থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ৩৫ হাজারের মতো হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার বলেন, ‘ভিসা আবেদনের সময় বাড়বে। আমাদের টেনশন আছে। আমরা কাজ করছি।’
হজের ফ্লাইট শুরু ৯ মে, প্রস্তুত বিমান: এর আগে গত ৪ মে হজ এজেন্সিগুলোকে ভিসা আবেদনের তাগাদা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। সেখানে বলেছিল, হজ ভিসা সম্পন্নকরণের প্রথম পর্বের মেয়াদ (২৯ এপ্রিল) শেষ হওয়ার পর আগামী ৭ মে পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। বেসরকারি মাধ্যমে এ বছর ৮০ হাজার ৬৯৫ জন হজযাত্রী ২৫৯টি এজেন্সি/লিড এজেন্সির মাধ্যমে পবিত্র হজ পালন করবেন। তবে অধিকাংশ এজেন্সি (২০৪টি) এখন পর্যন্ত হজযাত্রীর জন্য ভিসা প্রসেস শুরুই করেনি; যা হজযাত্রীদের হজে গমনে আশঙ্কার সৃষ্টি করেছে। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে ওই চিঠিতে এজেন্সিগুলোতে নির্দেশনা দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ভিসা আবেদনে কেন বিলম্ব হচ্ছে- জানতে চাইলে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) মহাসচিব ফারুক আহমদ সরদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার হজ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম করেছে সৌদি আরব। তাই সবকিছু বুঝে কাজ করতে একটু সময় লাগছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কাজ এখন দ্রুত হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে ভিসা হয়ে যাবে। আর সময়ও তো তারা বাড়াবে। তাই আশা করি সমস্যা হবে না।’
হজ ভিসায় নতুন নিয়ম আনলো সৌদি আরব: এর আগে জেদ্দার বাংলাদেশ হজ অফিস থেকে এ বিষয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, এ বছর হজ পরিচালনাকারী এজেন্সির সৌদি আরব পর্বের খরচ বাবদ পাঠানো পুরো অর্থ এরই মধ্যে তাদের স্ব-স্ব আইবিএএন-এ পাঠানো নিশ্চিত করা হয়েছে। হজ ভিসা প্রক্রিয়াকরণের প্রথম পর্বের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর ৭ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। ৩০ এপ্রিল থেকে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা সময়ব্যাপী ই-হজ সিস্টেমে বাড়িভাড়া চুক্তি সম্পাদন বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। মুচলেকা দেওয়ার পর বিভিন্ন দেশের বাড়িভাড়া চুক্তির জন্য ই-হজ সিস্টেম খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, ৭ মে পরবর্তী সময়ে তাৎক্ষণিকভাবে ভিসা প্রক্রিয়াকরণ বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। তাই ৭ মের মধ্যে ভিসা প্রক্রিয়াকরণ শেষ করা প্রয়োজন।
ভিসা প্রক্রিয়াকরণের অন্যতম বাধ্যতামূলক ক্ষেত্র হচ্ছে মক্কা/মদিনায় বাড়িভাড়া চুক্তি সম্পাদন। বাড়িভাড়ার চুক্তি সম্পাদন সংক্রান্ত অগ্রগতি পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রায় অর্ধেকের বেশি সংখ্যক হজযাত্রীর জন্য অদ্যাবধি মক্কা/মদিনার বাড়িভাড়া সম্পন্ন হয়নি, যা অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক। বাড়িভাড়া ই-হজ চুক্তি ছাড়া ভিসা প্রক্রিয়াকরণ সম্ভব নয়। তাই এজেন্সিগুলোর দ্রুততর সময়ের মধ্যে বাড়িভাড়া চুক্তি সম্পাদন ও ভিসা নিশ্চিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাওয়া হয় ওই চিঠিতে।