সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
সদরপুরে বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন সোনালী আঁশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হাজী দিদার পাশার পক্ষে আলোচনা সভা পঞ্চগড়ের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশুতোষ বর্মণের বদলীর দাবীতে মানববন্ধন নগরকান্দায় ভূত আতংকে অসুস্থ হয়েছে শিক্ষার্থীরা ডিমলায় ১০০ পরিবারের মাঝে ঢেউটিন ও অর্থ বিতরণ ভয় পাবার কোন কারণ নাই, আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন টুঙ্গিপাড়া জাতির পিতার সমাধিতে যুব লীগের চেয়ারম্যানের শ্রদ্ধা নিবেদন টিয়া পাখির মতো আপনাদের কাছে প্রিয় হয়ে থাকতে চাই-সাংবাদিক বাবু পলাশবাড়ী উপজেলা দলিল লেখক সমিতির ত্রি বার্ষিক নির্বাচন কুয়াকাটায় মধ্যরাত থেকে শুরু মাছ ধরার উপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা

ধামরাইয়ে দপ্তরি দিয়ে চলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান

ওয়াসিম হোসেন (ধামরাই) ঢাকা
  • আপডেট সময় বুধবার, ৮ মে, ২০২৪

ঢাকার ধামরাইয়ে দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী দিয়েই গত রবিবার থেকে তিন দিন ধরে চলছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান। বিষয়টি জানেন না প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আশুতোষ মন্ডল । উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের উদাসীনতার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। গত রবিবার ও সোমবার দপ্তরি হযরত আলী বিদ্যালয়ের পাঠদান চালালেও আজ মঙ্গলবার তিনি বহিরাগত লোক এনে স্কুলে পাঠদানের জন্য রেখে তিনিও চলে যান। এ নিয়ে ওই এলাকায় চলছে সমালোচনার ঝড়। এমন ঘটনা ঘটেছে উপজেলার রোয়াইল ইউনিয়নের ৯৭ নং রোয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মঙ্গলবার (৭ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৯৭নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচ জন শিক্ষক কাগজে কলমে থাকলেও বিদ্যালয়ের পাঠদানে কাউকেই দেখা যায়নি। স্কুলের দপ্তরি দিয়ে গত রবিবার ও সোমবার স্কুলের পাঠদান কার্যক্রম চালালেও মঙ্গলবার (৭ মে) ওই বিদ্যালয়ের দপ্তরি হযরত আলীও নেই বিদ্যালয়ে। তিনি বিদ্যালয় খুলে পাশেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে দাওয়াতের অনুষ্ঠানে চলে গেছে। দপ্তরি হযরত আলীর এক ফুপাত ভাই একাই সবগুলো ক্লাস পরিচালনা করছে। শিক্ষার্থীদের বাইরে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা যায়। কেন বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকও নেই জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরি হযরত আলী জানান, বিদ্যালয়ে পাঁচ জন শিক্ষকের মধ্যে সেলিনা আক্তার নামে এক শিক্ষক পিটিআই ট্রেনিং এ আসেন, মোনালিসা হক কনা নামে আরেক শিক্ষক রয়েছেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে এবং শর্মিষ্ঠা দাস সুমা নামে এক শিক্ষক ডেপুটেশনে ঢাকার মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছেন। বর্তমানে অত্র প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফরিন সুলতানা ও সহকারী শিক্ষক জহুরা জেসমিন এতোদিন বিদ্যালয়ের পাঠদান করে আসছিলেন। কিন্তু গত রবিবার থেকে ওই দুই শিক্ষক সরকারি ট্রেনিং করতে চলে গেলে দপ্তরি হযরত আলী একাই বিদ্যালয় পরিচালনা করছিলেন। কিন্তু তিনি আজ আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যায়। পরে খবর পেয়ে তিনি বিদ্যালয়ে চলে আসেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, তিন দিন ধরে বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষক নেই। স্কুলের দপ্তরি হযরত আলীই ক্লাস নেন। কোন শিক্ষক নেই। আমাদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারি শিক্ষক জহুরা জেসমিনকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমাদের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা লিয়াকত হোসাইন স্যার ট্রেনিং করতে নামের তালিকা দিয়েছেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের বিষয়টি জানালেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেন নি। তবে বাসিন্দা নেপাল চন্দ্র পাল বলেন, বিদ্যালয়ে আছেই মাত্র দুই জন শিক্ষক। আবার তারাও রয়েছেন ট্রেনিং এ। কিভাবে শিক্ষক শূন্য একটি বিদ্যালয় চলতে পারে। তবে রোয়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আশুতোষ মন্ডল বলেন, আমি বিষয়টি আজকেই জানতে পেরেছি। বিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষকের মধ্যে তিন জন অনুপস্থিত। দুই জন শিক্ষক দিয়ে স্কুলের পাঠদান চললেও গত তিন দিন ধরে তারাও রয়েছেন ট্রেনিং এ। এখন শুধু দপ্তরি ছাড়া আর কেউ নেই। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।আপনাদের অনুপস্থিতিতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কোন ক্ষতি হলে দায়ভার কে নিবে এমন কোন প্রশ্নের সদুত্তর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফরিন সুলতানার কাছে থেকে পাওয়া যায় নি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফরিন সুলতানা বলেন, আমাদের স্কুলে বর্তমানে দুই জন শিক্ষক আছি। বাকি বিভিন্ন কারণে ছুটিতে অনুপস্থিত। তবে শর্মিষ্ঠা দাস সুমা ডেপুটেশনে অন্যত্র চাকরি করছেন এ বিষয়ে তার কাছে কোন প্রমাণপত্র নেই। তিনি বলেন, আমার বিদ্যালয়ে আমরা মাত্র দুই জন শিক্ষক রয়েছি। কিন্তু সরকারি ট্রেনিং এর আগে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা লিয়াকত হোসাইনকে জানালেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেন নি। স্কুলে শুধু মাত্র দপ্তরি হযরত আলীই রয়েছেন। ডেপুটেশন ও পিটিআই এ থাকা শিক্ষকদের সম্পর্কে বলেন, ২০২৩ সালের জুন মাসে শর্মিষ্ঠা দাস সুমা ডেপুটেশনে চলে যায় এবং সেলিনা আক্তার ২০২৪ সালের ১৫ ই জানুয়ারি পিটিআই ট্রেনিং এ আছেন। আপনাদের অনুপস্থিতিতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কোন ক্ষতি হলে দায়ভার কে নিবে এমন কোন প্রশ্নের সদুত্তর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফরিন সুলতানার কাছে থেকে পাওয়া যায় নি। ধামরাই উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা লিয়াকত হোসাইনকে প্রশ্ন করলে তিনি এ বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারে নি। তবে তিনি সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তাজমুন নাহারকে খুঁজতে অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায় নি।
পরে বার বার তার মুঠোফোনে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খান মো: আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, আমি বিষয়টি দেখে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নেব। ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল আজিজ বলেন, স্কুল কখনো শিক্ষক শূন্য থাকতে পারে না। বিষয়টি দেখে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com