অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “যারা আইনাঙ্গনে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছেন, তাদেরকে চলমান জুলুমের অবসান ঘটাতে আইন-আদালত ও বিচার অঙ্গনকে সংগ্রামের অংশ হিসেবে বেছে নিতে হবে। শহীদ নেতৃবৃন্দের প্রতি যে জুলুম করা হয়েছে, তাঁদের কথা বুকে ধারণ করে এবং তাঁদের রেখে যাওয়া আন্দোলনকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আইনজীবীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।”
১৮ মে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির কর্তৃক আয়োজিত নবীণ আইনজীবীদের সংবর্ধনা-২০২৪ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় আইন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার । বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, ঢাকা বার সমিতির সাবেক এ.জি.এস, মো. মঈন উদ্দীন। আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক মো. সিবগাতুল্লাহ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ সময় নবীন আইনজীবীগণ উপস্থিত ছিলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “যে তরুণরা আইনজীবী হিসেবে যাত্রা শুরু করেছেন, তাদের মনে রাখতে হবে আপনাদের এ যাত্রা অত্যন্ত কঠিন! আপনারা একটি সংগ্রামী জীবন থেকে নতুন আরেকটি সংগ্রামী জীবন বেছে নিয়েছেন। এ সংগ্রামের সফলতা নির্ভর করছে আপনাদের ধৈর্য, কঠোর পরিশ্রম এবং দৃঢ়ভাবে লেগে থাকার ওপর।”
তিনি বলেন, “আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে সরকার আমাদের শহীদ নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা মামলা, বানানো সাক্ষী ও সাজানো রায় দিয়ে কাউকে কারারুদ্ধ করে বিনা চিকিৎসায়, কাউকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে। আমাদেরকে সংবিধান প্রদত্ত অধিকার থেকে প্রতিনিয়ত বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমাদের সম্মানিত নেতৃবৃন্দকে ভয়ংকর আসামিদের মতো কোমরে রশি ও পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করা, বারবার জামিন পাওয়ার পরও জেলগেটে নতুন মামলা দিয়ে পুনরায় গ্রেপ্তার করাসহ প্রতিনিয়ত অকথ্য নির্যাতন-নিপীড়ন অব্যহত রেখেছে। এসব জুলুমের অবসানে আপনাদের ধৈর্যের সাথে পথ চলতে হবে। অর্থের পেছনে না ছুটে মানবিক দিক বিবেচনায় নিজেদের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, “আইন অঙ্গনে সাধারণ মানুষসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ওপর যে অবিচার করা হচ্ছে, তার মোকাবিলায় আমাদের সফল আইনজীবীর সংখা বৃদ্ধি করতে হবে। সফলতার প্রধান শর্ত হলো নীতি, সততা ও পরিশ্রম। জানার জন্য পড়াশোনা, অভিজ্ঞতার জন্য বিজ্ঞদের কাছাকাছি থাকা এবং অধ্যবসায় ও প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে পারলে কাঙ্ক্ষিত মঞ্জিলে পৌঁছা সম্ভব। আইন অঙ্গনে সফল ব্যক্তির আধিক্য যেকোনো লক্ষ্য বাস্তবায়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারবে।”
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “যারা নতুন আইন পেশা শুরু করছেন, তাদের পরিচয় শুধু একজন আইনজীবী নয়, তারা একটি বিপ্লবী আন্দোলনের কর্মী। আর বিপ্লবীদের সাহসী হতে হয়। আমাদের আন্দোলনের জন্য আইনজীবীগণ যে ভূমিকা পালন করেছেন, সেটা অবিশ্বাস্য! তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য। আপনাদেরকেও সেই ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হবে। আপনাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে হবে। দেশের প্রতিটি সেক্টরের ন্যায় বিচার বিভাগকেও দলীয়করণ করা হয়েছে। বিচারকের আসনে বসে যারা অবিচার করে তাদের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।”