শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ডিইউজে’র সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খানকে গ্রেফতার:বিএফইউজে ও ডিইউজে’র তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ আহতরা যেই দলেরই হোক চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী ঢালাওভাবে মামলা-গ্রেপ্তার বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি সুজনের নিরীহ মানুষ হত্যাকারী রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা  দিতে ব্যর্থ সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন  অধিকার নেই: মির্জা ফখরুল ছাত্র-জনতার খুনের দায়ে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে: বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ জনরোষ থেকে বাঁচাতে সরকার জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির ও বিরোধীদলের ওপর দোষ চাপানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে: মাওলানা এটিএম মা’ছুম কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্র নিন্দা:ম্যাথিউ মিলার পবিত্র আশুরার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে সমাজে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর আহবান ব্লাকবেঙ্গল জাতের ছাগল মেহেরপুরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয়ের অন্যতম উৎস দিনাজপুর হাবিপ্রবিতে সাপ নিয়ে গবেষণায় সফল শিক্ষার্থী কামরুন নাহার কনা

‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার অগ্রযাত্রায় মার্কিন ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

বাসস:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি ‘উন্নত ও স্মার্ট’ দেশে পরিণত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে একটি ‘উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট’ বাংলাদেশের আমাদের অগ্রযাত্রায় অংশীদার হওয়ার জন্য আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের একটি প্রতিনিধিদল সৌজন্য সাক্ষাতে এলে তাদের উদ্দেশে ভাষণে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ‘স্মার্ট নেশন’ হয়ে উঠতে আকাঙ্খা পোষণ করি। আমাদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা বাড়াতে এবং রপ্তানির ভিত্তি সম্প্রসারণে আপনাদের সমর্থন প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে ‘স্বল্পোন্নত’ থেকে ‘উন্নয়নশীল’ দেশে পরিণত হবে।
সরকার প্রধান বলেন, তাঁরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। তাদের প্রচেষ্টা গত ১৫ বছরে বাংলাদেশকে উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী ‘আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের রোল মডেল’ হিসেবে স্বীকৃত। এটা সম্ভব হয়েছে সুশাসন, আইনের শাসন ও স্থিতিশীলতা, গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ, নারীর ক্ষমতায়ন, এবং আইসিটি, যা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ রুপান্তর ঘটিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য একটি প্রধান অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগী।
তিনি আরো বলেন, উভয় দেশের অনেক ক্ষেত্রেই নিবিড় সম্পৃক্ততা রয়েছে, বিশেষ করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যৌথ লক্ষ্য হল জনগণের জন্য পারস্পরিক সুবিধা এবং সমৃদ্ধি অর্জন করা। এটি আমাদের ক্রমবর্ধমান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং জনগণের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ায় প্রকাশ পেয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে আমাদের রপ্তানির বৃহত্তম একক-দেশীয় গন্তব্য, সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগের বৃহত্তম এবং জ্ঞান ও প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ তিনি বলেন, আগামী দিনে এই অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা আরও বাড়বে বলে তিনি আশাবাদী।
এই প্রসঙ্গে সরকার প্রধান বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি স্থানান্তরের এবং পারস্পরিক সুবিধার জন্য একটি মসৃণ এবং অনুমানযোগ্য সরবরাহ শৃঙ্খল তৈরির মাধ্যমে আমাদের উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে দীর্ঘমেয়াদী অংশীদার হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, ‘অতএব, আমি আপনাদেরকে আমাদের অনেক প্রাণবন্ত এবং উচ্চ-সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র যেমন নবায়নযোগ্য জ্বালানী, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, হালকা ও ভারী যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক সার, আইসিটি, সামুদ্রিক সম্পদ আহরণএবং চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি’।
শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল আমাদের দুই বন্ধু প্রতীম দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
‘পরিশেষে, তিনি সকল মার্কিন ব্যবসায়ী নেতাদের বাংলাদেশে ব্যবসার সুযোগ নিতে এবং বিনিয়োগের অনুরোধ জানান।’
এছাড়া, তিনি বলেন, তাঁর সরকার দেশে ১শ’টি ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অ ল’ (এসইজেড) এবং ২৮টি হাই-টেক পার্ক প্রতিষ্ঠা করেছে। এর মধ্যে কয়েকটি চালু রয়েছে।
তিনি বলেন, বিশেষকরে আইটি সেক্টরে, ১০ লাখেরও বেশি ফ্রি-ল্যান্সিং আইটি পেশাদারসহ, বাংলাদেশ আইটি খাতে বিনিয়োগের জন্য সঠিক গন্তব্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিযোগিতামূলক মজুরিতে একটি তরুণ, দক্ষ এবং প্রাণবন্ত কর্মশক্তির প্রাপ্যতা একটি বিশাল সুবিধা।
তিনি বলেন, ‘এখানে, আমি আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই বাংলাদেশে এই অ লের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ নীতির মর্যাদা রয়েছে। তিনি আরো বলেন নিশ্চিত থাকুন আমরা আমাদের বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নতিতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি।’
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক এম. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মার্কিন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে অবহিত করেছেন, ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে বহুমুখী সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছেন।
এই সময় নজরুল বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য মার্কিন বিনিয়োগকারীরা উচ্চাকাঙ্খা ব্যক্ত করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘কিন্তু তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কিছু চ্যালেজ্ঞ উল্লেখ করেন।’
ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান স্টিভেন কোবোস স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং এর প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রদূত (অব.) অতুল কেসাপ ধন্যবাদ প্রস্তাব উন্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প এবং বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান,বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু ও অ্যাম্বাসেডর এট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এই সময় উপস্থিত ছিলে।্
প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব এম. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান স ালনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে নারীর ক্ষমতায়নে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ দেশ এবং বিশ্বব্যাপী নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে রেটিং দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ১৭ কোটি মানুষের বাজার এবং এর অবস্থান (ভৌগলিক) এটিকে ৩ বিলিয়ন মানুষের বাজারের কেন্দ্রস্থলে পরিণত করেছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে এর বর্ধিত সংযোগ এটিকে এই অ ল এবং এর বাইরে বিনিয়োগ এবং বাণিজ্যের জন্য একটি আদর্শ জায়গা করে তুলেছে।
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের ফোকাস এখন শুধু আ লিক নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বৈশ্বিক অংশীদারদের সাথেও অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত করা।’
গত ১৫ বছরে বেশ কয়েকটি মেগা-অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, কয়েকটির নাম বলতে গেলে, পদ্মা নদীর ওপর সেতু, ঢাকায় মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকায় একটি আধুনিক আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইত্যাদি।
আইনি ও আর্থিক অবকাঠামোও উন্নত করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এইগুলো আমাদের অভ্যন্তরীণ এবং আ লিক সংযোগ বাড়িয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি।
তিনি আরো বলেন, ‘এটি এখন ৩৫ তম বৃহত্তম অর্থনীতি, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫ তম হবে বলে অনুমান করা হয়েছে। এই বৃদ্ধি একটি প্রাণবন্ত বেসরকারি খাতের কারণে যেখানে মার্কিন ব্যবসায়ীদের একটি উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ অনেক আর্থ-সামাজিক সূচকে দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দেয়।
তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিত উন্নয়ন প্রচেষ্টার কারণে দারিদ্র্যের হার ২০০৫ সালে থাকা ৪১ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ১৮ দমমিক ৭ শতাংশে এবং হতদরিদ্রের হার ৫ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। গত এক দশকে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি হয়েছে।’
আরও চমকপ্রদ তথ্য হলো- প্রত্যাশিত গড় আয়ু যা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর ছিল ৪৬ দশমিক ৬ বছর তা বর্তমানে বেড়ে ৭৩ দশমিক ৪ বছরে উন্নীত হয়েছে।
‘এখন প্রায় সব শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয় শেষ করছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, নারী সাক্ষরতার হার ৭৩ দশমিক ২৫ শতাংশ যা দক্ষিণ এশিয়ার গড় ৬৫ শতাংশের চেয়ে বেশি।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com