শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ অপরাহ্ন

ঢাবির পরীক্ষার প্রশ্নে ‘এমপি হত্যা’ ও ‘বেনজীরের দুর্নীতি’!

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ৫ জুন, ২০২৪

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তুঙ্গে। তার মধ্যেই ভারতে গিয়ে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। এ দুই ইস্যু বর্তমানে ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। ঘটনা দুটি যখন আলোচনা-সমালোচনার তুঙ্গে, ঠিক তখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের একটি কোর্সের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে এলো বিষয় দুটি। সাবেক আইজিপি বেনজীরের দুর্নীতি ও এমপি আনার হত্যাকা-কে বিষয়বস্তু করে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। অধিকাংশ নেটিজেন এটিকে ‘প্রশ্নেপত্রে শিক্ষকের সৃজনশীলতা’ হিসেবে উল্লেখ করছেন। তারা ওই কোর্সের শিক্ষকের ভূয়সী প্রশংসা করে বিভিন্ন পোস্ট দিচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার (৩ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) প্রথম সেমিস্টারের ৫০২ নম্বর কোর্সের প্রথম ও দ্বিতীয় মিডটার্ম পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কোর্সটির নাম ‘থিওরিস অব সোশ্যাল চেঞ্জ: ফ্রম মর্ডানিটি টু পোস্টমর্ডানিটি’। এ কোর্সটির শিক্ষক অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ। কোর্সটির প্রশ্নপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, প্রথম প্রশ্নটি করা হয়েছে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের নৃশংস হত্যাকা- নিয়ে। কলকাতা পুলিশের বরাতে এনডিটিভির খবরকে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করে ‘হানি-ট্রাপে বাংলাদেশি এমপি: ৫ কোটি টাকার চুক্তিতে হত্যা’শিরোনামে খবরের কিছু অংশ তুলে দিয়ে তা বিশ্লেষণ করতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তনে যে ধারা তা মার্কস, ফ্রয়েড, মারকুস এবং হার্ভের তত্ত্বের আলোকে বিশ্লেষণ করতে বলা হয়েছে।
দুই নম্বর প্রশ্নে সময় টিভির একটি সংবাদের বরাতে ‘বেনজীরের দুর্নীতি: সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ও দুর্নীতি দমন কমিশন সক্রিয় হবে কি?’ শিরোনামে বাংলাদেশের পুঁজিবাদী প্রক্রিয়া নিয়ে মার্কস ও হার্ভের থিওরি অনুযায়ী বিশ্লেষণ করতে বলা হয়েছে।
পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম বলেন, আজকের পরীক্ষায় স্যার যে প্রশ্ন করেছেন, সেটা আমাদের কোর্সের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কালমার্কসসহ বিভিন্ন পণ্ডিতদের তত্ত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তিনি প্রশ্ন করেছেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো মিশ্র প্রতিক্রিয়া নেই। স্যার যে প্রশ্ন করেছেন, এটি সত্য ও বাস্তবতার নিরিখে হয়েছে।

এদিকে, প্রশ্নপত্রের ছবি দিয়ে ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে অনেকে ওই শিক্ষকের প্রশংসা করেছেন। বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মারুফ রায়হান তার ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে লিখেছেন, ‘অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ স্যার ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একটি রতœ।’
আরিফ বিল্লাহ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রশ্নগুলো পড়লাম। সত্যিই অসাধারণ ও ক্রিয়েটিভ প্রশ্ন বলতেই হবে।’
তবে প্রথম দুটি প্রশ্ন নিয়ে অনেকে প্রশংসা করলেও একই প্রশ্নপত্রের পাঁচ নম্বর প্রশ্ন নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। সেখানে ‘অশ্লীলতা’ ও ‘স্পর্শকাতর’ বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘নিয়ম মেনে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশ্ন প্রস্তুত করা হয়েছে। এখানে কোনটা নিয়ে কেউ প্রশংসা করলেন, কোনটাকে খারাপ বললেন, তা আমার কাছে বড় বিষয় নয়। শিক্ষার্থীরা প্রশ্নগুলোর ধরন ও গভীরতা বুঝে উত্তর করবে। তারা প্রশ্ন বুঝতে পারছে কি না, সেটাই আমার কাজের মূল্যায়ন।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com