জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার পল্লীতে শখের বসে ময়নুলের লাগানো গাছে আঙ্গুরের বাম্পার ফলন হয়েছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার পৌর এলাকার রাজবাড়ী আশ্রম প্রকল্প ওই বাড়ির টিনের চালার উপরে মাচায় থোকায় থোকায় ঝুলে আছে সবুজ আঙ্গুর। যা নজর কাড়ছে সকলের। স্বাদ এবং সাইজে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও, শখের বসে অনেকেই আঙ্গুর দেখতে ওই বাড়িতে প্রতিদিন ভিড় করছেন। নজরকাড়া এ আঙ্গুরের দেখা মিলবে দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার পৌর এলাকার রাজবাড়ী আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা ময়নুল ইসলাম এর বাড়িতে।
সেখানে বসবাস করে রিকশা চালক ময়নূল ইসলাম। তার সাথে গতকাল কথা হয়। তিনি জানান, গত ২ বছর আগে ২০২২ সালে জুলাই মাসে শখের বসে স্থানীয় একটি নার্সারী থেকে একটি আঙ্গুরের চারা কিনে নিয়ে এসে বাড়ির কোণে রোপণ করেছিলেন। গত বছর গাছে দেখা মেলে অবিশ্বাস্য আঙ্গুরের। এক বছর বয়সী গাছ থেকে এসেছিল প্রায় ১ মণ আঙ্গুর ফল। এ বছর গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ আঙ্গুর ফল হয়েছে।
লালমাটিতে অর্জিত আঙ্গুর এর বাম্পার ফলন তাক লাগিয়ে দিয়েছে সকলকে। স্থানীয় মাটিতে অনেকেই শখের বসে আঙ্গুরের চারা রোপণ করলেও, ভালো ফলন না হওয়ায় এবং স্বাদে পার্থক্য থাকায় শেষ পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়েছে। তবে এ প্রথম লালমাটিতে আঙ্গুরের চারা রোপণ করে বাম্পার ফলনের মুখ দেখেছেন রিকশাচালক ময়নূল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির বারান্দায় টিনের চালার উপর থোকায় থোকায় ঝুলে আছে আঙ্গুর। টিনের উপরে বাঁশের মাচা তৈরি করেছেন বাড়ির মালিক। আঙ্গুরের ভাড়ে ঝুলে পড়েছে গাছের লতা। বাজারের তুলনায় গাছটিতে থাকা আঙ্গুরের সাইজ কিছুটা ছোট। স্বাদেও রয়েছে কিছুটা ভিন্নতা। তবে দেখতে খুব সুন্দর লাগছে।
বাড়িতে আঙ্গুরের গাছ দেখতে এবং আঙ্গুর খেতে এসেছিলেন কয়েকজন তরুণ। তাদের একজন ফারুক। তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় আঙ্গুরের এমন ফলন দেখে আমি অবাক। বাজার থেকে যে আঙ্গুর কিনে খাই, সেই তুলনায় এ আঙ্গুরের স্বাদ কিছুটা টক। তবে যে পরিমান আঙ্গুর ধরেছে। শুধু দেখতেই ইচ্ছে করছে।
রাশেদ মিয়া নামে একজন বলেন, একটি গাছে এত আঙ্গুর ধরে তা আজ আমি প্রথম দেখলাম। কাঁচা অবস্থায় কিছুটা টক। তবে একেবারে পরিপক্ব হলে টক অনেকাংশ কমে যাবে। আমি আমার বাড়িতে এ আঙ্গুর চারা রোপণ করবো। আগ্রহ সহকারে আঙ্গুরের চাষ করব এটা আমার প্রত্যাশা।
আঙ্গুর চাষি ময়নূল ইসলাম বলেন, গতবার কাঁচা অবস্থাতেই সব আঙ্গুর প্রতিবেশীদেরকে খাইয়েছি। এবারও আমি আঙ্গুর বাজারে বিক্রি করবো না। পরিপক্ক হলে সবার মাঝে বিলিয়ে দিব। এ আঙ্গুর আমার শখের ফল। অনেকেই আমার আঙ্গুর গাছ দেখার জন্য আমার বাড়িতে আসছে। আগামীতে বাণিজ্যিক ভাবে আঙ্গুর চাষের পরিকল্পনা রয়েছে তার।
ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বলেন, এ অঞ্চলের মাটি ফল চাষের জন্য বেশ উপযোগী। তবে লাল মাটিতে আঙ্গুর চাষ অবিশ্বাস্য। যথাযথ ভাবে পরিচর্যা করলে ফলের স্বাদ এবং সাইজ ভালো হবে। আমরা নতুন চাষিদেরকে আঙ্গুর চাষে সবধরণের পরামর্শ প্রদান করছি। এ মাটিতে যদি আঙ্গুর চাষে সাফল্য পাওয়া যায়, তবে আগামীতে সরকারী ভাবে পরীক্ষামূলক আঙ্গুর চাষের জন্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।