শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বরগুনায় বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের সরকারি সহায়তা প্রদান করা হবে হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যু নিশ্চিত করল হিজবুল্লাহ প্রশাসনে আওয়ামী লীগের দোসরদের রেখে সংস্কার সম্ভব নয়: রিজভী বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে: তারেক রহমান এফএসআইবিএল এর চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলের শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বোমা মেশিন দিয়ে অপরিকল্পিত ভাবে পাথর উত্তোলন, ভূমিকম্প ও ভূমি ধ্বসের আশংকা ভরা মৌসুমেও ইলিশের চড়া দাম ক্রেতাদের নাভিঃশ্বাস চিকনিকান্দি সেতুর বেহাল অবস্থা চরম ভোগান্তি জামায়াত নেতারা দেশ থেকে পালায় না: মৌলভীবাজারে এড. মতিউর রহমান আকন্দ কালিয়ায় সেনাবাহিনীর হাতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক-৪

আমের রাজধানীতেই আকাল, দামও দ্বিগুণ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৪ জুন, ২০২৪

চাঁপাইনবাবগঞ্জকে বলা হয় আমের রাজধানী। সেই রাজধানীতেই এবার আমের আকাল। গতবারের তুলনায় ফলন খুবই কম। তাই এখানের বাজারে এখন দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে আম। আরও দাম বাড়বে বলে জানিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারগুলোয় চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে আম আসতে শুরু করে। প্রথমে গুটি আম দিয়ে শুরু হয় বেচাকেনা। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের গুটি, খিরশাপাত, ল্যাংড়া, গোপালভোগ ও লক্ষণভোগ আম। গত বারের তুলনায় এসব আমের দাম অনেক বেশি।
দেশের সবচেয়ে বড় আমবাজার কানসাটে বর্তমানে গুটি জাতের আম ২৫০০ থেকে ২৭০০ টাকা, খিরশাপাত ৩৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা, গোপালভোগ ৩৫০০-৪০০০ টাকা, লক্ষণভোগ ১২০০-১৬০০ টাকা, ল্যাংড়া ৩৩০০-৪০০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, গতবারের তুলনায় এবার আমের ফলন অর্ধেকেরও কম। যার কারণে আমের বাজার খুবই চড়া। বেশি দাম হওয়ার কারণে মানুষ আশানুরুপ এই ফল কিনছেন না। কাঁচা পণ্য হওয়ায় পচে যাওয়ার আশঙ্কায় আশানুরুপ দাম না পাওয়া গেলেও বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। কানসাটে বাজারের আম বিক্রি করতে এসেছেন মোজাম্মেল হোসেন। এই আম বিক্রেতা বলেন, প্রায় ১০ মণ আম এনেছি বাজারে। দাম বেশি হওয়ায় আম কিনতে গড়িমসি করছেন ক্রেতারা। তাও বাজারে মোটামুটি আম বিক্রি হচ্ছে। জাকারিয়া হোসেন নামে আরেক বিক্রেতা জানান, গতবারের তুলনায় এবার আম খুবই কম। যার কারণে আমের দাম অনেক বেশি। বাজারে এখন গুটিসহ কয়েক রকমের আম নেমেছে। আগামিতে আমের দাম আরও বাড়তে পারে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফলন কম হওয়ার অজুহাতে একটি সিন্ডিকেট আমের দাম বাড়াচ্ছে, অভিযোগ খুচরা ক্রেতাদের। সিন্ডিকেট সদস্যরা নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম ধার্য্য করছেন বলে জানান তারা। গতবছর মৌসুমের শুরুতে গোপালভোগ আম ১২০০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকা মণ দরে বেচাকেনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু এবার গোপালভোগ আম বিক্রি শুরু হয়েছে ২০০০ টাকারও বেশি দরে। বাকি সব আমের দামও চড়া। শিবগঞ্জ উপজেলার আব্দুর রহমান নামে এক ব্যক্তি বলেন, গোপালভোগ আমের দাম ২৫০০ টাকা মণ শুনে বাজারে গিয়ে দেখি ৩৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। শুধু আব্দুর রহমানই নয় অনেক ক্রেতাদের এই অভিযোগ। রাতারাতি আমের দাম বেড়ে যাচ্ছে বলে বাজার মনিটরিং নিয়ে প্রশ্ন তাদের। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, এবার আমের ফলন খুবই কম। প্রতিনিয়তই আমের দাম বাড়াচ্ছেন অনলাইন ব্যবসায়ীরা। তারা বেশি দামে বাগান থেকে আম কিনছেন। ফলে বাজারে এর প্রভাব পড়ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের কানসাট, গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর ও ভোলাহাট বাজারে আম বেশি বেচাকেনা হয়। এসব বাজারের আড়তগুলোয় অন্য জেলার ব্যাপারিরা আসেন ও আম কিনেন। কিন্তু এইসব বাজারে আমের ওজনে চলে ব্যাপক অনিয়ম। আম চাষিদের জিম্মি করে ৬০ কেজিতে মণ ধরে আম কেনেন আড়তদারেরা। জানা গেছে, একমণ সমান ৪০ কেজি। কিন্তু মণের হিসেবে চাষিদের কাছ থেকে জিম্মি করে ওজনে বেশি নেওয়া। প্রতিবাদ করে কোন লাভ না হওয়ায় একপর্যায়ে আম বিক্রি করতে বাধ্য হন চাষিরা। জেলার চাষি ও কৃষি সংগঠনগুলো কৃষিমন্ত্রীসহ একাধিক জায়গায় বারবার অভিযোগ দিয়েও এই বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। এ নিয়েও আছে কৃষি সংগঠনগুলোর ক্ষোভ।
আম চাষি ইমরান হোসেন বলেন, চাষিরা কষ্ট করে আম উৎপাদন করেন। কিন্তু তাদের কষ্টের ফসল আড়ৎদারেরা প্রতিমণে ১০-১২ কেজি পর্যন্ত বেশি নিয়ে নেন। এটা খুবই দুঃখজনক। স্থানীয় প্রশাসনসহ ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা যদি এই বিষয়ে নজর দেন তাহলে আম চাষিরা উপকৃত হবেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব বলেন, সারাদেশে আমের ওজন একই রাখতে গতবছর সাবেক কৃষিমন্ত্রীকে লিখিত আবেদন জমা দেওয়া হয়। এই বিষয়ে কোন সিন্ধান্ত না হওয়ায় গতমাসে আবারও বর্তমান কৃষিমন্ত্রীকে একই বিষয়ে লিখিত আবেদন দেওয়া হয়েছে। তিনি এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও এখনও কোনো সমাধান হয়নি।
তিনি বলেন, চাষিরা প্রতিমণে ৪০-৪৫ কেজিতে আম দিতে রাজি আছে। অথচ জেলার বিভিন্ন বাজারগুলো থেকে আড়তদার, ব্যাপারি ও ফড়িয়া সিন্ডিকেট প্রতি মণে ৪৮-৫২ কেজি করে আম নিয়ে যাচ্ছে। হিসেব করে দেখা গেছে, বাড়তি আমে কৃষকের পকেট থেকে গচ্ছা যাচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জেরই প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, এবার আমের জন্য অফ ইয়ার বা কম ফলনের বছর। ফলন কম হওয়ার এবার আমের দামও বেশি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি বিপণনের বাজার কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, এবার আমের ফলন কম হওয়ায় দাম দ্বিগুণ হয়েছে। আমের দাম আরও বাড়বে।- রাইজিংবিডি.কম




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com