রাজধানীতে ঝরছে আষাঢ়ের বৃষ্টি। কালো মেঘে ঢাকা পড়েছে ঢাকা। মেঘের কারণে দিনেই যেন রাজধানীতে নেমেছে সন্ধ্যা। সেই সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি যেন থামার নামই নেই। থেমে থেমে ঝরছে। যদিও গত ১৭ আষাঢ় দিনভর বৃষ্টি নামবে তা আগেই জানিয়ে রেখেছিল আবহাওয়া অফিস। আর এই বৃষ্টির কারণে দিনভর ভিজছে ঢাকা, সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও যানবাহনের সংখ্যা কম আবার কোথাও লাগছে যানজট। পাশাপাশি দিনভর বৃষ্টিতে রাজধানীর কোথাও কোথাও সৃষ্টি হয়েছে জলজটের। সব মিলিয়ে আষাঢ়ের বৃষ্টি বিড়ম্বনায় রাজধানীবাসী।
দিনভর বৃষ্টির কারণে কাজে বের হওয়া মানুষরা পড়েছেন দারুণ ভোগান্তিতে। পাশাপাশি রাজধানীর অনেক স্থানে লেগে রয়েছে যানজট, আবার অনেক স্থানেই রয়েছে গণপরিবহন সংকট। রাস্তায় বের হওয়া মানুষরা ছাতা মাথায় চলাচল করছেন। সেইসঙ্গে রিকশা-সিএনজি চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া চেয়ে বসছেন, বাধ্য হয়ে যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়াতেই যাতায়াত করছেন। আবার থেমে থেমে দিনভর বৃষ্টির কারণে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অলি গলিতে কিছুটা জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও মষুলধারে বৃষ্টির পরপরই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পরক্ষণেই নেমে যাচ্ছে পানি। একদিকে দিনভর বৃষ্টি, অন্যদিকে গণপরিবহন সংকট, পাশাপাশি কিছুকিছু সড়কে যানজট, জলজট সব মিলিয়ে রাজধানীতে কাজে বের হওয়া মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।
মোহাম্মদপুরের দিক থেকে আসা সিএনজি চালক রহিদুল ইসলাম জানান, বনানী, মহাখালী, বিজয় সরণি, ফার্মগেট এলাকায় সকাল থেকে যানজট দেখেছি। এখন আবার মোহাম্মদপুরের দিক থেকে আসলাম, রাস্তায় দেখেছি গণপরিবহন তুলনামূলক কম, তবে বিভিন্ন জায়গায় যানজট সৃষ্টি হয়ে আছে। পাশাপাশি বৃষ্টির পরপরই বিভিন্ন স্থানে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। হাতিরঝিলের বিভিন্ন অংশে এখনো পানি জমে থাকতে দেখেছি। মানুষ রাস্তায় আছে তবে যাত্রী তুলনামূলক কম। সে কারণে ট্রিপ কম পাওয়া যাচ্ছে, তাই যখন পাচ্ছি যাত্রীদের কাছ থেকে কিছু টাকা বেশি চেয়ে নিচ্ছি।
গাবতলীর দিক থেকে আসা বৈশাখী বাসের হেলপার রাজিব আহমেদ বলেন, বিভিন্ন রাস্তায় কিছু সময়ের জন্য করে যানজটে আটকা থাকতে হচ্ছে। তবে রাস্তায় যাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। বাসে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গাবতলীর দিক থেকে আসলাম, যদিও সড়কে আজ গণপরিমাণের সংখ্যা তুলনামূলক কম। বিজয় সরণির দিকের রাস্তায় কিছুটা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে যানবাহনগুলো খুব ধীরগতিতে যাচ্ছে, ফলে পেছনের দিকে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ছাতা মাথায় হাতিরঝিল ফুটপাতের অস্থায়ী খাবারের দোকানি আলতাফ হোসেন সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, সকাল থেকে বৃষ্টি কারণে সাধারণ মানুষসহ আমাদের মতো দোকানিদের ভোগান্তির শেষ নেই। সকাল থেকে ঠিকমতো দোকানই খুলতে পারিনি, কাস্টমারতো একেবারে নেই। সব মানুষ ছাতা নিয়ে চলাফেরা করছে, অনেক জায়গায় জমেছে পানি। ফলে মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। দোকানগুলোতে আজ কোনো কাস্টমারই নেই, ব্যবসার অবস্থা একেবারেই খারাপ। আবার খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ আজ বাইরে বের হয়নি। দিনভর এমন বৃষ্টির কারণে আমার ব্যবসার বারোটা বেজে গেছে। উল্লেখ্য, আগেই আবহাওয়া অধিদপ্তর আগামী ৪৮ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বৃষ্টির আভাস দিয়েছিল। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। ফলে সারা দেশে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। যা আগামী কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে।