নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি এবং দশম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কাঠামোর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসিসি)। কিছু সংশোধন প্রস্তাবসহ এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নের প্রারম্ভিক, বিকাশমান, অনুসন্ধানী, সক্রিয়, অগ্রগামী, অর্জনমুখী ও অনন্য— এই সাতটি স্কেল বা ধাপকে বোঝাতে ইংরেজি বর্ণমালা (অ্যালফাবেট) ব্যবহার করা হবে। এ মূল্যায়ন পদ্ধতিতে কোন শিক্ষার্থী কোন ধাপে আছে তা জানা যাবে। শুরুতে ওই সাতটি স্তরের ঘর ভরাট করে বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন দেখানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। এটি অভিভাবকদের কাছে সহজে উপস্থাপন করতেই সংশোধন প্রস্তাবসহ মূল্যায়ন পদ্ধতির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে এনসিসিসি। এদিকে, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার বিশেষায়িত বিষয়ের পরীক্ষা আগের মতোই অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষায়িত বিষয়গুলোর জন্য নতুন কারিকুলাম প্রস্তুত হওয়ার পর নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা হবে।
গত সোমবার (১ জুলাই) মন্ত্রণালয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এনসিসিসির বৈঠকে মূল্যায়ন পদ্ধতির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, ‘কিছু সংশোধন প্রস্তাবসহ মূল্যায়ন পদ্ধতির চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে এনসিসিসি।’
সংশোধন প্রস্তাব সম্পর্কে জানতে চাইলে অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, ‘মূল্যায়ন প্রায় সবই ঠিক আছে। বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নের জন্য সাতটি স্তরের জন্য যে ঘরগুলো রাখা হয়েছিল, সেগুলো ভরাট করে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সংশোধন প্রস্তাব অনুযায়ী অভিভাবকদের বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে অ্যালফাবেট (ইংরেজি বর্ণমালা) ব্যবহার করা হবে।’ অ্যালফাবেট ব্যবহার সম্পর্কে জানতে চাইলে উদাহরণ দিয়ে অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, “‘এ+’, ‘এ’, ‘এ-’, ‘বি+’, ‘বি’, ‘বি-’, ‘সি+’ ‘সি’ ‘সি-’ ইত্যাদি দিয়ে বিষয়ভিত্তিক সাতটি স্তর বোঝানো হবে।”
কারিগরি মাদ্রাসা শিক্ষার বিশেষায়িত বিষয়ের মূল্যায়ন পদ্ধতির বিষয়ে অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, কারিগরি শিক্ষা ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিশেষায়িত বিষয়গুলোর নতুন কারিকুলাম না হওয়া পর্যন্ত আগের মত যেভাবে পরীক্ষা নেওয়া হতো সেভাবে নেওয়া হবে। যখন বিশেষায়িত বিষয়গুলো নতুন কারিকুলামের আওতায় আসবে তখন সেগুলোর মূল্যায়ন নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী হবে।’
এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা-২০২১ অনুযায়ী ২০২৩ সালে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এ বছর (২০২৪) বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন চলছে। ২০২৫ সালে দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। বছর শেষে পাবলিক মূল্যায়ন অনুষ্ঠিত হবে। মূল্যায়ন পদ্ধতিতে প্রচলিত নম্বর ও গ্রেডিং পদ্ধতি বাদ দিয়ে প্রথমে ত্রিভুজ, বৃত্ত, চতুর্ভুজ দিয়ে শিক্ষার্থীর দক্ষতা মূল্যায়ন শুরু করা হয় নতুন শিক্ষাক্রমে। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ৬৫ শতাংশ লিখিত এবং ৩৫ শতাংশ কার্যক্রমভিত্তিক মূল্যায়ন থাকছে। দশম শ্রেণির পাবলিক মূল্যায়নে দুই বিষয়ে অকৃতকার্য হলেও পরের শ্রেণিতে উত্তরণ হতে পারবে শিক্ষার্থীরা। তবে অকৃতকার্য বিষয়গুলোয় পরবর্তীতে মূল্যায়নের মাধ্যমে কৃতকার্য হতে হবে।-বাংলাট্রিবিউন