রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন

দুশ্চিন্তায় ফরিদপুরের পাটচাষিরা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৪

ফরিদপুরে গত কয়েক বছর পাট চাষে লাভের মুখ দেখলেও এবার দুশ্চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা। টানা খরা ও সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় গাছের বৃদ্ধি কমে গেছে। সেচের মাধ্যমে পানি দিলেও আশানুরূপ ফলন না পাওয়ায় চিন্তিত কৃষক। ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার পাটচাষী কুদ্দুস মোল্লা চার বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন এবার। বৃষ্টি না হওয়ায় প্রথমে জমিতে সেচ দিয়ে পাটবীজ বপন করেন। শুরু থেকেই খরচ বেড়েছে। পাট চাষে যে পরিমাণ খরচ হচ্ছে তা তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তিনি।
একই উপজেলার আরেক কৃষক শেখ এনায়েত বলেন, এক একর জমিতে পাট আবাদ করতে খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। পাট উৎপাদন হয়ে থাকে ২০ থেকে ২৫ মণ। কিন্তু এবার উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ১৫ মণ। এরপর কৃষি শ্রমিকের মজুরি ও কীটনাশকের দাম বাড়ায় খরচও বেশি হয়েছে। ফলন ভালো না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
জেলায় সবচেয়ে বেশি পাট চাষ হয় সালথা উপজেলায়। সেখানকার কৃষক মজিদ শেখ বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে পাট চাষ করেছি। গত কয়েকবারের থেকে এবার বেশি টাকা খরচ হয়েছে। এখন আবার নতুন সমস্যা পাট জাগ দেওয়া। খরচ বিবেচনা করে সরকার যেন উপযুক্ত দাম নির্ধারণ করে। ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ জেলায় তোস ও মাস্তে পাটের আবাদ হয়েছে। জেলায় এ বছর পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ৮৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন। জেলায় লক্ষ্যমাত্রার থেকে কম পাটের আবাদ হয়েছে এবার। তারপর বৃষ্টি কম হওয়া, পাটের পাতা পোড়া রোগ ও পাট জাগ দেওয়ার সমস্যা ভোগাচ্ছে চাষিদের। যদিও কৃষি বিভাগ বলছে সামনের কয়েক দিন আরও বৃষ্টি হবে তখন এই সমস্যা কেটে যাবে।
সালথা উপজেলা কৃষি অফিসার সুদর্শন সিকদার বলেন, এ বছর সালথা উপজেলায় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৪ হাজার মেট্রিক টন। প্রচ- খরার কারণে জমিতে বাড়তি সেচ দিতে হয়েছে। পাট উৎপাদনে এবার যে খরচ তাতে পাটের ন্যায্যমূল্য পেলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফরিদপুরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষকরা মূলত বৃষ্টির উপর নির্ভর করেই প্রাকৃতিক সেচ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পাটের আবাদ করে থাকেন। কিন্তু এ বছর প্রায় ৩০ দিন টানা খরা হয়েছে। এ কারণে ফরিদপুরের কৃষকদের প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ জমিতেই সেচ দিতে হয়েছে। যারা সেচ দিয়ে চাষ করেছেন তাদের ফলন ভালো হয়েছে। তবে খরচ বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, পাট কাটা এখনও পুরোপুরি শুরু না হওয়ায় ফলন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। তবে দাম ভালো পেলে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com