সারাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিমকোর্ট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিলটি মাজার গেট হয়ে হাইকোর্ট মোড়ে পৌঁছালে পেছন থেকে পাল্টা স্লোগান দিয়ে মিছিল করে যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা কয়েকজন আইনজীবীকে ধাক্কা দেয় ও গালমন্দ করে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় হাইকোর্ট মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ভবনের কাছে সুপ্রিমকোর্টের গেটের সামনে গিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ঘুরে দাঁড়ায়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে আইনজীবীরা ধাওয়া দিলে যুবলীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায় এবং বার ভবনের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার ভুঁইয়া, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল প্রমুখ। কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়ে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘সুপ্রিমকোর্টসহ সারাদেশের আদালতে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের আইনি সহায়তা দেয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সরাসরি কোটার পক্ষে অবস্থান নিয়ে আদালত অবমাননা করেছেন। কারণ বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে ২০১৮ সালে রাগের বশবর্তী হয়ে কোটাপদ্ধতি বাতিল করেছিলেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার সময় তিনি অঙ্গীকার করেছেন, রাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। এ কথা বলে প্রধানমন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করেছেন।’
৪‘দেশে কি মৌলিক অধিকার নেই, ইমারজেন্সি চলছে?’: ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, ‘গতরাতে ঢাকাতেই কয়েক শ’ অহত হয়েছে। আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা মৌলিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। আমাদের প্রশ্ন দেশে কি মৌলিক অধিকার নেই, সাংবিধানিক অধিকার নেই, দেশে কি ইমারজেন্সি চলছে?’ গতকাল মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে সমিতির ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার খোকন দেশের প্রধান প্রধান জাতীয় দৈনিক পত্রিকা দেখিয়ে বলেন, ‘পত্রিকায় লেখা হয়েছে যে নিরীহ ছাত্রছাত্রিদের ওপর হামলা করা হয়েছে। সেখানে পুলিশ ছিল, কিন্তু তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না। পুলিশ বাধা না দিয়ে সন্ত্রাসীদের সহায়তা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আহত অনেক ছাত্রছাত্রী ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছে। সেখানে ছাত্রলীগ হামলা করেছে। আমরা কি সভ্য দেশে আছি? এত কিছুর পর সরকার কেন প্রতিক্রিয়া দেয়নি। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি।’
ব্যারিস্টার খোকন কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘সুপ্রিমকোর্টসহ সারাদেশের আদালতে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের আইনি সহায়তা দেয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সরাসরি কোটার পক্ষে অবস্থান নিয়ে আদালত অবমাননা করেছেন। কারণ বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে ২০১৮ সালে রাগের বশবর্তী হয়ে কোটাপদ্ধতি বাতিল করেছিলেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার সময় তিনি অঙ্গীকার করেছেন, রাগ-অনুরাগের বশবর্তী হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। এ কথা বলে প্রধানমন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করেছেন।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিমকোর্ট বারের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ ফজলে ইলাহী অভি, শফিকুল ইসলাম শফিক, ফাতিমা আক্তার।