বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তিন বৃটিশ এমপি। তারা হলেন রুশনারা আলী , আপসানা বেগম ও রুপা হক। তিনজনই বর্তমান সরকার দলীয় এমপি, যার যার অবস্থান থেকে সরব রয়েছেন তারা। বাংলাদেশ প্রসঙ্গ তুলছেন পার্লামেন্টে। ১৯শে জুলাই নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রুশনারা আলী। সাংবাদিকদের তিনি বলেন ,সম্প্রতি বাংলাদেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি দেখছি এতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আমার সহকর্মীরা গণতান্ত্রিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং প্রতিবাদ করার স্বাধীনতার অধিকারকে সম্মান করার গুরুত্ব দিতে একটি বিবৃতি দিয়েছেন । আমি জানি এরকম পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্যরা আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এই আসনের এমপি হিসেবে আমি সবাইকে বলছি এখানের কোনো নাগরিকের বাংলাদেশে অবস্থানরত পরিবারের কোনো সদস্য যদি বর্তমান পরিস্থিতি দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আমাকে সাথে সাথে জানাবেন। অন্য আসনের নাগরিকদেরকেও বলছি- এরকম পরিস্থিতিতে আপনাদের এমপির সাথে সরাসরি যোগাযোগ করুন। এটি খুব জরুরি, এটি অত্যন্ত উদ্বিগ্নের সময়।
গত ২২ জুলাই আরেক এমপি আপসানা বেগম বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাত, প্রাণহানির ঘটনায় যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে ‘আর্লি ডে মোশন’ উত্থাপন করেন। এতে এখন পর্যন্ত সাবেক লেবার নেতা ও বর্তমান স্বতন্ত্র এমপি জেরেমি করবিনসহ ২২ জন বৃটিশ এমপি স্বাক্ষর করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার রুপা হক বৃটিশ পার্লামেন্টের অধিবেশনে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের অবস্থান জানতে চান। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রুপা হক বলেন, ‘বাংলাদেশে যা চলছে, তা নিয়ে সম্প্রতি রোম, প্যারিস, ম্যানচেস্টার ও লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে বিক্ষোভ দেখা গেছে। বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক ছাত্র ও বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়ার কারণে আমরা সঠিক সংখ্যাটি জানি না।’
এ সময় লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত এই এমপি আরও বলেন, ‘আমরা কি এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের অবস্থান সম্পর্কে একটি জরুরি সরকারি বিবৃতি দিতে পারি? এমন পরিস্থিতিতে আমাদের একটি ঐতিহাসিক ও অনন্য ভূমিকার ইতিহাস আছে।’ জবাবে পার্লামেন্টে লেবার সরকারের মুখপাত্র ও এমপি পাওয়েল বলেন, ‘রুপা হক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন করেছেন। তিনি আগেই বলেছেন, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে সহিংসতার বিষয়ে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। প্রাণহানি অগ্রহণযোগ্য। প্রতিবাদ করার অধিকার ও ইন্টারনেট পরিষেবা পুনরুদ্ধার করতে হবে।’
পাওয়েল রুপার বক্তব্য উদ্ধৃত করে আরও বলেন, ‘আর এ ব্যাপারে আমরা সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’ এ সময় পাওয়েল জানান, তিনি জানেন যে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পররাষ্ট্র দপ্তরের মন্ত্রীরা এসব হালনাগাদ তথ্য জানতে চাইবেন। আর যেহেতু কিছুদিন পরই ছুটি শুরু হতে যাচ্ছে তাই এই বিষয়ে কাজ করার যে সময় তা দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। তবে ছুটির আগে এই গুরুত্বপূর্ণ হালনাগাদ তথ্যগুলো যাতে আনা হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য সব সম্ভাব্য পদক্ষেপ নেয়া হবে।