নীলফামারীতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার অভিযোগে চারটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে নীলফামারী সদর থানায় একটি ও সৈয়দপুর থানায় তিনটি মামলা করা হয়। এসব মামলায় শুক্রবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে সদরে ১৭ জন ও সৈয়দপুরে ৪৫ জন। এদিকে সৈয়দপুরে সংঘর্ষের সময় দুটি রাইফেল ও একটি রিভলভার ছিনতাই হয়েছিল। রাইফেল দুটি উদ্ধার হলেও রিভলবারটি এখনো উদ্ধার করা যায়নি। গত ১৮ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলাকালে জেলা সদর ও সৈয়দপুরে সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
এ সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ বক্সসহ নানা স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। হামলায় পুলিশ, সাংবাদিক, সাধারণ মানুষসহ অন্তত শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। ঘটনার পর জেলা সদরে একটি ও সৈয়দপুর থানায় তিনটি মামলা করা হয়। এসব মামলার নামীয় আসামি ১১৬ জন এবং অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে দুই সহস্রাধিক।পুলিশ জানায়, ছাত্রদের আন্দোলনকে পুঁজি করে দুর্বৃত্তরা ওই হামলায় অংশ নেয়। বাধা দিতে গেলে তারা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ঘটনার সময় জেলা সদরে ১০ জন ও সৈয়দপুরে ১৬ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বলেন, গত ১৮ ও ১৯ জুলাই জেলা শহরের বাটার মোড়, শহীদ মিনার, চৌরঙ্গীর মোড়, বঙ্গবন্ধু চত্বর, পিটিআই মোড়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ ও সাংবাদিকসহ ২৫ জন আহত হন। এর মধ্যে ১০ জন গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।সৈয়দপুর থানা পুলিশের (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম বলেন, হামলা, সংঘর্ষ ও অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে সৈয়দপুর থানায় তিনটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও যারা ঘটনায় জড়িত তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। নীলফামারীর পুলিশ সুপার মোকবুল হোসেন বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়াসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনে পুলিশ বাদী হয়ে চারটি মামলা করেছে। এসব মামলায় এজাহারনামীয় ছাড়াও অনেককে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। গত কয়েকদিনে ৬২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হামলার সময়ে দুই উপজেলায় প্রায় ২৫-২৬ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।