কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় টানা ১০ দিন ধরে বন্ধ মোবাইল ইন্টারনেট সেবা। অনেক গ্রাহকের ডাটা প্যাকেজ কেনা থাকলেও এ সময়ের মধ্যে তার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। গ্রাহকদের এ ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সব মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীকে ৫ জিবি করে ডাটা বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে, যার মেয়াদ হবে তিন দিন। গত রোববার (২৮ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
এর আগে তিনি দেশের মোবাইল অপারেটর কোম্পানি, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস), অ্যাসোয়িশেন অব মোবাইল টেলিফোন অপারেটর বাংলাদেশের (অ্যামটব) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদসহ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারাও। এ বৈঠকে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকদের স্বার্থ বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ব্রিফিংয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, যারা মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহক, তাদের অধিকাংশেরই ডাটা প্যাকেজ কেনা ছিল। আসলে তাদের তো ব্যক্তিগতভাবে কোনো দোষ নেই। নেটওয়ার্কটা নিরবচ্ছিন্নভাবে না থাকায় তারা আসলে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেননি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করে আলোচনা সাপেক্ষে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যারা মোবাইল ইন্টারনেট চালুর পর ফোরজি সেবায় যুক্ত হবেন, তখন প্রত্যেক মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক ৫ জিবি করে বোনাস ডাটা প্যাকেজ পাবেন। এ প্যাকেজের মেয়াদ থাকবে তিন দিন। এ বিষয়ে সব মোবাইল অপারেটরগুলো সম্মত হয়েছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারাদেশে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে গত ১৬ জুলাই থেকেই মোবাইল ইন্টারনেটে ধীরগতি শুরু হয়। ১৮ জুলাই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ওইদিন রাত আনুমানিক ৯টার দিকে সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে যায়। এর পাঁচদিন পর ২৩ জুলাই রাত থেকে পরীক্ষামূলকভাবে সীমিত পরিসরে চালু করা হয় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা।
প্রাথমিকভাবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হয় ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও অফিস-আদালতে। পরে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) রাত থেকে বাসা-বাড়িতেও ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা হয়। পাশাপাশি গুগল ক্যাশ সার্ভার ক্লিয়ার করায় ধীরে ধীরে ইন্টারনেটে স্বাভাবিক গতি ফিরছে।
অন্যদিকে, দেশের ১৩ কোটির বেশি মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহকরা এখনো সেবাবঞ্চিত। তাদের অসুবিধার কথা বিবেচনায় রোববার বিকেল থেকে অবশেষে মোবাইল ইন্টারনেট চালুরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে মেটার তিনটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং টিকটক বাংলাদেশে এখনো বন্ধ। কবে নাগাদ এসব প্ল্যাটফর্ম খুলে দেওয়া হবে, তা এখনো জানায়নি বিটিআরসি।