দেশের আর্থিক খাতসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কার চলছে জানিয়ে অর্থনীতিবিদ ও বেসরকারি খাতের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, সংস্কারের ফলে সাময়িক ব্যথা হলেও মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি লাভের জন্য তা সহ্য করতে হবে।
গতকাল শনিবার (২১ আগস্ট) রাজধানী ঢাকার এফডিসিতে আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে করণীয় নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন একটা সংস্কারের পিরিয়ড চলছে। আমাদের হাউজ ক্লিনিং করতে হবে। সেটাতে কিছু কিছু পেইন হবে, এটা অস্বীকার করা যাবে না। আমাদের মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি গেইনের (লাভ)জন্য এই সাময়িক পেইনকে মেনে নিতে হবে।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ৫টি শিল্পগ্রুপের আর্থিক লেনদেনের তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। ব্যাংক, আর্থিক খাত ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যে সংস্কার হচ্ছে তাতে আমানতকারী কিংবা ভালো ব্যবসায়ীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানান তিনি।
ব্যবসায়ীদের অনেকেই আর্থিক খাতকে ধ্বংস করেছেন জানিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, এখন অনেকেই বলছেন, ওমুক ব্যবসায়ী। তার অধীনে অনেক লোক কাজ করছে। সেখানে যদি হাত দেওয়া হয় তাহলে অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। আমাদের এখানে সংস্কার যেভাবে করা হচ্ছে ব্যক্তিকে হাত দেওয়া হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানে হাত দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিষ্ঠান যাতে কাজ করতে পারছে সেটা নিশ্চিত করা হচ্ছে। বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা কঠিন হবে বলেও জানান তিনি।
কিছু ব্যাংকে অস্থীতিশীলতা রয়েছে। এতে আমানতকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেভাবে সংস্কার করা হচ্ছে এটা নিশ্চিত করা হচ্ছে যাতে আমানতকারীদের সমস্যা না হয়। বিভিন্নভাবে সংস্কার করা হচ্ছে। সেখানে এক্সিট করা দরকার সেখানে এক্সিট পলিসি নেওয়া হচ্ছে। যেগুলো দুর্বল সেখানে প্রশাসক বা নতুন বোর্ড করে স্বস্তির অবস্থায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমানতকারীদের দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই।
হাসান আহমেদ বলেন, অন্তবর্তী সরকার যে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে যাচ্ছে আশা করি এতে সব আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য প্রকাশিত হবে। আর্থিক খাতে যে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল তা বন্ধ করতে হবে। ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ পাচারকারীদের বিচারের আওতায় এনে দৃশ্যমান শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে মেরুদ- সোজা করে দাঁড়াতে দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীন সত্তা ফিরিয়ে আনতে হবে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সদিচ্ছাই আর্থিক খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবে।