শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৩ অপরাহ্ন

উলিপুরে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অপসারণ চেয়ে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪

কুড়িগ্রামের উলিপুরে কৃষ্ণমঙ্গল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের অপসারন চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কৃষ্ণমঙ্গল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ পান মাহমুদুল হাসান সরকার। এরপর থেকে তিনি শিক্ষক নিয়োগসহ ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়ার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। পরবর্তীতে অনেকের চাকরি না হওয়ায় তাদের চাপে ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। শিক্ষক প্যাটান অনুযায়ী কলেজ শাখায় কাঙ্খিত ছাত্র-ছাত্রী না থাকলেও শিক্ষকরা নিয়মিত বেতন তুলে আসছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থেকে অধ্যক্ষ এ ধরনের সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন। এদিকে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ও অধ্যক্ষের অপসারনের দাবীতে মঙ্গলবার দুপুরে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে অংশ নেয়া কৃষ্ণমঙ্গল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী হাবিবা আক্তার, মারজানা, জান্নাতুল ফেরদৌস, মিজানুর রহমান, আল আমিন, রোমান মিয়াসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, অধ্যক্ষের সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের কারনে প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনার পরিবেশ নেই বললেই চলে। অধ্যক্ষের দীর্ঘ সময়ে অনুপস্থিতির কারনে শ্রেণি কক্ষে নিয়মিত পাঠদান হয় না। তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষার্থীরা অনেকেই অধ্যক্ষ স্যারকে কখনো দেখেননি। তিনি কখন আসেন, কখন যান আমরা কেউ জানি না। এলাকাবাসী ও ওই প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্র বিপ্লব আনসারী জানান, অধ্যক্ষের সীমাহীন দুর্নীতির মধ্যে একাধিক চাকরি প্রত্যাশীর কাছে টাকা নিয়ে ভূয়া নিয়োগ বোর্ড গঠন করে ভূয়া নিয়োগপত্র প্রদান করেন। প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থেকে নিজ বাড়িতে বসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে ২০১৭ সাল থেকে প্রতিমাস শেষে বিল উত্তোলনসহ নানাবিধ অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নিজের পদ ঠিক রাখতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের ম্যানেজ করে চলেছেন তিনি। দুর্নীতি প্রমানিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে শিক্ষামন্ত্রনালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ শাখা-১১ (মাধ্যমিক-২) বাংলাদেশ সচিবালয় ঢাকা মহোদয়ের স্মারক নং-৩৭.০০.০০০০.০৭২.৩৯.০৬.১৬-৫২৩, তারিখ-১৯/০৬/২০১৭ অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান সরকারকে চাকুরি বিধিমালা ১৯৭৯ এর ১১ (ডি) ধারা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেন প্রমাণিত হওয়ায় চাকরি হতে অপসারনের নির্দেশ প্রদান করেন। এরপরেও অজ্ঞাত কারনে বহাল তবিয়তে থেকে তিনি অধ্যক্ষের পদ আকড়ে ধরে আছেন। এ সংক্রান্ত পত্র উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগের সাথে দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। কৃষ্ণমঙ্গল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান সরকার তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমাকে বেকায়দায় ফেলানো হয়। যখন যে পরিচালনা কমিটির সভাপতি হয় তিনি টাকা নিয়ে থাকেন, এভাবেই অনিয়ম গুলো বেশি হয়েছে। ইতিপূর্বে চাকরি থেকে কোন অপসারনের চিঠি পায়নি বলে তিনি দাবী করেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিরাপত্তাহীনতার কারনে নিয়মিত যাওয়া হয়নি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হাই জানান, আমি এ উপজেলায় নতুন এসেছি। এ বিষয়ে কেউ আমার কাছে অভিযোগ করেনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউর রহমান অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ গুলোর তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com