শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৯ অপরাহ্ন

এক হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে সালমান এফ রহমানসহ ২৮ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৭ মামলা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

রপ্তানি বাণিজ্যের আড়ালে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের স্বত্বাধিকারী সালমান এফ রহমানসহ ২৮ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা করেছে সিআইডি। গতকাল বুধবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বিধি অনুযায়ী সিআইডির পরিচালিত অনুসন্ধানে সালমান এফ রহমান (বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান) ও তাঁর ভাই এ এস এফ রহমানের (বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান) স্বার্থ–সংশ্লিষ্ট বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকানাধীন মোট ১৭টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের নামে ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিস শাখা, দিলকুশা, মতিঝিল থেকে ৯৩টি এলসি/সেলস কন্ট্রাক্টের (বিক্রয় চুক্তি) বিপরীতে পণ্য রপ্তানি করে নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও রপ্তানিমূল্য প্রায় ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা) বাংলাদেশে না এনে বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো অ্যাডভে ার গার্মেন্টস, অ্যাপোলো অ্যাপারেলস, অটাম লুপ অ্যাপারেলস, বেক্সটেক্স গার্মেন্টস, কসমোপলিটান অ্যাপারেলস, কোজি অ্যাপারেলস, এসেস ফ্যাশন, ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস, কাঁচপুর অ্যাপারেলস, মিডওয়েস্ট গার্মেন্টস, পিয়ারলেস গার্মেন্টস, পিংক মেকার গার্মেন্টস, প্ল্যাটিনাম গার্মেন্টস, স্কাইনেট অ্যাপারেলস, স্প্রিংফুল অ্যাপারেলস, আরবান ফ্যাশনস ও উইন্টার স্প্রিন্ট গার্মেন্টস লিমিটেড।
এ ছাড়াও সালমান এফ রহমান ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোম্পানি বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ও বেনামে প্রায় ৩৩ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার এবং অন্যান্য আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে পৃথক অনুসন্ধান কার্যক্রম সিআইডি চালিয়ে যাচ্ছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে প্রায় ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যমানের পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়েছে। দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, পণ্য রপ্তানি করার পর রপ্তানিমূল্য ৪ মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন করার বাধ্যবাধকতা আছে, তা সত্ত্বেও যথাসময়ে রপ্তানিমূল্য দেশে প্রত্যাবাসন না করে সালমান এফ রহমানসহ বেক্সিমকো গ্রুপের অন্যান্য স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এ অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন—এ অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিদেশে রপ্তানি হওয়া পণ্যের বেশির ভাগই বেক্সিমকো গ্রুপের মালিক সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং এ এস এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের যৌথ মালিকানাধীন আর আর গ্লোবাল ট্রডিং এফজেডই–এর শারজাহ, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবের ঠিকানায় রপ্তানি করা হয়েছে। এ ছাড়া জার্মানি, নেদারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে রপ্তানিমূল্য দেশে না এনে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আসামিরা বৈদেশিক বাণিজ্যের আড়ালে বিদেশে টাকা পাচারের অসদুদ্দেশ্যে নিজেদের স্বার্থ–সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে পণ্য রপ্তানি করে ইচ্ছাকৃতভাবে রপ্তানিমূল্য প্রত্যাবাসন না করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ২(শ) এর (১৪) ও (২৬) ধারায় সম্পৃক্ত অপরাধ করেছেন; যা একই আইনের ৪(২)/৪(৪) ধারা অনুযায়ী দ-নীয় অপরাধ।
বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান ও তাঁর সহযোগীরা ব্যক্তিগত প্রভাব খাঁটিয়ে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সহযোগিতায় বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন বলে অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হওয়ায় সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট মতিঝিল থানায় ১৭টি মামলা রুজু করেছে।এ ছাড়া সালমান এফ রহমান ও তাঁর স্বার্থ–সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ও বেনামে প্রায় ৩৩ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার এবং অন্যান্য আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে পৃথক অনুসন্ধান কার্যক্রম সিআইডি চালিয়ে যাচ্ছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com