শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে হাঁটতে অসুবিধা হয় ও পায়ের যন্ত্রণায় অনেকেই কাতরান। জানলে অবাক হবেন, ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে হৃদরোগ, কিডনিতে পাথর এমনকি উচ্চ রক্তচাপের মতো গুরুতর সব সমস্যা দেখা দিতে পারে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরিয়া অ্যাসিড হলো একটি রাসায়নিক যৌগ। যা শরীরে পিউরিনসমৃদ্ধ খাবার খেলে উৎপন্ন হয়। সাধারণত এটি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, তবে এর মাত্রা খুব বেশি বেড়ে গেলে কিডনি তা অপসারণ করতে ব্যর্থ হয়। ফলে শরীরে বাড়তে থাকে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়া। একই সঙ্গে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে জমতে শুরু করে। বিশেষত জয়েন্ট ও আঙ্গুলের মধ্যে। জয়েন্টগুলোতে এর স্ফটিক জমা হলে তীব্র ব্যথা ও ফোলাভাব হতে পারে। আপনিও যদি ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভোগেন তাহলে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার পাশাপাশি কিছু পানীয় আছে যা পান করতে পারেন এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণে বা বশে রাখতে। যেমন-
আপেল সিডার ভিনেগার: আপেল সিডার ভিনেগার ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে। দৈনিক খালি পেটে হালকা গরম পানিতে এক চামচ আপেল সিডার ভিনেগার এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে পান করুন।
তুলসির পানি: তুলসিতে এমন উপাদান পাওয়া যায়, যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। পানিতে তুলসি পাতা সেদ্ধ করে তা ছেঁকে নেওয়া পানিটুকুই হলো তুলসির পানি। এটি প্রতিদিন পান করলে ইউরিক অ্যাসিড কমে যায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী হয়।
লেবু পানি: লেবুতে থাকে সাইট্রিক অ্যাসিড, যা ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া লেবুর পানি শরীরকে আর্দ্র রাখতেও সাহায্য করে। এতে করে শরীর থেকে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড সহজেই প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে যায়।
আদা পানি: আদাতে জিঞ্জেরল নামক একটি যৌগ পাওয়া যায়, যা ইউরিক অ্যাসিডের উৎপাদন কমাতে সাহায্য করতে পারে। এতে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যও আছে, যা শরীরের ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে। আদা পানিতে লেবুর রস মেশালে এই পানীয় আরও বেশি কাজ করে।
হলুদের দুধ: হলুদে কার্কিউমিন নামক একটি যৌগ থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিডের উৎপাদন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
চেরি জুস: চেরিতে অ্যান্থোসায়ানিন নামক একটি যৌগ পাওয়া যায়, যা ইউরিক অ্যাসিডের উৎপাদন কমাতে সাহায্য করতে পারে। চেরি জুস এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতেও সাহায্য করে।
পুদিনার পানি: পুদিনা পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এতে থাকে এমন যৌগ, যা ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে। পুদিনা পাতা পানিতে সেদ্ধ করে পাতা ছেঁকে ওই পানি পান করলে বেশ উপকার মিলবে।
গ্রিন টি: গ্রিন টি’তে মেলে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি পান করলে শরীরের আরও অনেক উপকার মেলে। পাশাপাশি এটি কিডনিকে ভালোভাবে কাজ করতেও সাহায্য করে।
এই ঘরোয়া পানীয়গুলি ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবুও এসব পানীয় পান করার আগে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এছাড়া ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত শরীরচর্চা করা, প্রচুর পানি পান করা ও যেসব খাবারে পিউরিনের পরিমাণ বেশি সেগুলো এড়িয়ে চলা জরুরি। সূত্র: বোল্ডস্কাই