মিয়ানমারের ১৮ বয়সী একটি মেয়ের জীবনযন্ত্রণার গল্প এ বছর বুসান চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার জিতেছে। সামরিক জান্তার হাত থেকে বাঁচতে গ্রাম ছেড়ে সে গিয়েছিল শহরে। চাকরি নিয়েছিল গার্মেন্টসে। কিন্তু সেখানেও বঞ্চনার শিকার সে। দীর্ঘ কর্মঘণ্টা, সুপারভাইজরের কর্কশ আচরণ আর শরীর স্পর্শ করার চেয়ে কষ্টকর হয়ে ওঠে বেতন বকেয়া হয়ে যাওয়া! মিয়ানমারের গার্মেন্টস শ্রমিকের গল্প নিয়ে সিনেমাটির নাম ‘এমএ-ক্রাই অব সাইলেন্স’।
গত ১০ অক্টোবর শেষ হল বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৯তম আসর। এ আসরে আলোচনায় থাকে প্রতিযোগিতামূলক বিভাগ নিউ কারেন্টস। প্রথম ও দ্বিতীয় সিনেমার নির্মাতারা এই শাখায় সিনেমা জমা দেওয়ার সুযোগ পান। এ বিভাগে এবার যৌথভাবে পুরস্কার জিতেছে মিয়ানমারের সিনেমা ‘এমএ-ক্রাই অব সাইলেন্স’ ও কোরিয়ার সিনেমা ‘দ্য ল্যান্ড অব মর্নিং কাম’। মিয়ানমারের সিনেমাটি কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, নরওয়ে ও কাতারের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত। পুরস্কার হিসেবে দুটি সিনেমাই পাচ্ছে ৩০ হাজার করে ডলার, বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৭০ লাখ টাকা।
এ উৎসবে প্রতিযোগিতামূলক আরেকটি বিভাগ কিম জিসোক। এ বিভাগে যৌথভাবে পুরস্কার পেয়েছেন ভারতের চলচ্চিত্র নির্মাতা রিমা দাস ও তাইওয়ানের নির্মাতা টম লিন ইউ। তাদের সিনেমা যথাক্রমে ‘ভিলেজ রকস্টার-২’ ও ‘ইয়েন অ্যান্ড এআই-লি’। বুসান মের্চেন্যান্ট পুরস্কার জিতেছে পার্ক মিনসো ও কেয়ানিয়াং পরিচালিত সিনেমা ‘ওয়ার্ক অ্যান্ড ডেজস’। যৌথভাবে অ্যানাদার হোম সিনেমার জন্য পুরস্কারটি জিতেছেন ফ্রাঙ্কি সিন। সিনেমাটি তাইওয়ান, হংকং, চীন ও ফ্রান্সের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত। উৎসবে অ্যাক্টর অব দ্য ইয়ার হয়েছেন ‘দ্য ফাইনাল সেমিস্টার’ সিনেমার অভিনেতা ইয়ো লি হা ও ‘হামিং’ সিনেমার জন্য অভিনেত্রী পার্ক সিয়ন।
নিউ কারেন্টস ও নেটপ্যাক পুরস্কারের পাশাপাশি কেবি নিউ কারেন্টস অডিয়েন্স পুরস্কার পেয়েছে ‘দ্য ল্যান্ড অব মর্নিং কাম’। উৎসবে কোস্টারিকা ও স্পেনের সিনেমা ‘মেমোরিজ অব আ বার্নিং বডি’ ফ্লাশ ফরোয়ার্ড অডিয়েন্স অ্যাওয়ার্ড জিতেছে। কোরিয়ার ‘কে-নম্বর’ তথ্যচিত্র বিভাগে ডকুমেন্টারি অডিয়েন্স পুরস্কার জিতেছে। সিনেমা দুটি পরিচালনা করেছেন আন্তোনেল্লা সুদাসাসি ফার্নিস ও জো সিইং। ইন্দোনেশিয়ার সিনেমা ‘টেল অব দ্য ল্যান্ড’ ফিপরেস্কি শাখায় পুরস্কার জিতেছে।
গত ২ অক্টোবর শুরু হয় উৎসব। এর সমাপনী সিনেমা ছিল ‘স্পিরিট ওয়ার্ল্ড’। উৎসবের শেষে ঘোষণা করা হয়েছে আগামী উৎসবের দিনক্ষণ। জানানো হয়েছে, ৩০তম বুসান চলচ্চিত্র উৎসব আর অক্টোবরে হবে না। আগামী বছর উৎসবটি সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখ থেকে শুরু হয়ে চলবে ২৬ তারিখ পর্যন্ত। উৎসবে এশিয়ান ফিল্ম বাজার চলবে ২০-২৩ সেপ্টেম্বর।
এবার ২৯তম বুসানে বাংলাদেশ থেকে আ উইন্ডো অন এশিয়ান সিনেমা বিভাগে মাকসুদ হোসাইনের ‘সাবা’ ও বুসান ফিল্ম বাজারে অংশ নেয় ইকবাল হোসাইন চৌধুরীর ‘ঢাকার নাগিন’ ছবি দুটি। গত বছর বাংলাদেশের ইকবাল হোসাইন চৌধুরীর ‘বলী’ নিউ কারেন্টস পুরস্কার জয় করে।