অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা আর নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবার আজ বড় অসহায়। স্বীয় সম্মানের কথা ভেবে টিসিবির লাইনে দাঁড়াতে পারে না আবার ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়ে কর্মমুখী হতে সাহস পায় না। আবার সরকারি সুযোগ-সুবিধা দু-হাত পেতে গ্রহণ করতেও মধ্যবিত্তের সম্মানে বাধে। উর্ধ্বমুখী বাজারে পরিবারের সদস্যদের প্রতিদিন খাবারে আমিষ যোগাড় করা প্রায়শই অসম্ভব হয়ে উঠে। টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে ঘুরে দেখা যায়, নিত্যপণ্যের দাম এখন আকাশছোঁয়া। প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। লাগাম নেই শাক-সবজিতেও। চলতি সপ্তাহে বাজারে ঝিঙে ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০টাকা পেঁয়াজ ১৩০ মান ভেদে কম বেশি আছে, ঢেঁড়স ৯০ টাকা, পটল ১০০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কাঁচকলা হালি (৪টি) ৩০থেকে ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ফালি ৩০, বেগুন ১০০ থেকে ১১০ টাকা, খিরা ১২০ টাকা, মুলার শাকের আটি২০ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়া মাছও ২০০ থেকে ২৩০ টাকা কেজির নিচে বিক্রি হচ্ছে না। চাষের ছোট আকারের পাঙ্গাশ প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় আকারের পাঙ্গাশ কেজি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৮০ টাকা দরে। ছোট আকারের রুই কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, মাঝারি আকারের রুই কেজি ৩২০ থেকে ৪০০ টাকায় এবং বড় আকারের রুই কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। কাতল কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরপুঁটির কেজি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির কেজি ২১০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি মানভেদে ৩১০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজি। গরুর মাংসের কেজি ৭০০ থেকে ৭৫০ এবং খাসির মাংস এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাতে সবজি তুলে দিতে মধ্যআয়ের মানুষের চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে। সেখানে আমিষর যোগান বিলাসিতা। বাজার করতে আসা নাঈম বলেন, ‘মুরগির দাম চড়া ভাবলাম ডিম কিনবো, ডিমও নিতে পারলাম না।অনেক দাম। খালি হাতে বাড়ী ফিরছি। কাঁচা বাজারে আসা ক্রেতা মিজান বলেন, আমি ঢাকায় একটা বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করি। ছুটিতে বাড়ীতে এসেছি। বাজারে এলাম কিন্তু সাধ্যের মধ্যে কিছু নেই। ‘মাছ-গোশত, সবজি সবকিছুই আমাদের ক্রয় সীমার বাহিরে চলে গেছে। বেশিরভাগ সবজির দাম শতক ছুঁইছুঁই। আবার কোনটি আবার ছাড়িয়েছে সেই শতকের ঘর।’ বিলকিস নামে এক গৃহিনী বলেন, ‘গেল সপ্তাহে কাঁচা মরিচ পাওয়া যেত ২৪০ টাকা কেজিতে। সপ্তাহের ব্যবধানে সেই কাঁচা মরিচের কেজি দাম বেড়ে হয়ে ৪০০ টাকা কেজি।’ ধনবাড়ী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা ও বৃষ্টিপাতের কারণে সবজি উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। উৎপাদন বাড়লে বাজারে সবজির দাম নাগালের মধ্যে চলে আসবে।’