বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ৬০ শতাংশের বেশি কমিয়েছে ভারতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানি আদানি পাওয়ার। বকেয়া ৮৫০ মিলিয়ন ডলার আদায়ে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। বাংলাদেশের পাওয়ার গ্রিড অপারেটর ও এ সংক্রান্ত আরও দুটি সূত্র রয়টার্সকে এসব তথ্য জানিয়েছে। এর আগে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ৭ নভেম্বরের মধ্যে ৮৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধের জন্য বাংলাদেশকে আলটিমেটাম দিয়েছে আদানি পাওয়ার। গত ৩১ অক্টোবর বকেয়া পরিশোধের নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র খোলার চেষ্টা করেছিল। পিডিবি কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি ইস্যু করেছিল। কিন্তু এটি বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি অনুযায়ী ছিল না। এজন্য ডলার সংকটকে অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে পূর্ব ভারতের ঝাড়খ- রাজ্যের ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গোড্ডা প্লান্ট থেকে ঢাকায় বিদ্যুৎ রপ্তানি করা আদানি পাওয়ার আগস্টের শুরুতে সরবরাহ ১৪০০ থেকে ১৫০০ মেগাওয়াট থেকে কমিয়ে ৭০০ থেকে ৭৫০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) এক কর্মকর্তার মতে, গত বৃহস্পতিবার সরবরাহ আরও কমিয়ে প্রায় ৫২০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনা হয়। বকেয়া পরিশোধ ত্বরান্বিত করা এবং গত ৭ নভেম্বর আদানি বকেয়া পরিশোধের সময়সীমা তুলে নিলেও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ক্রমান্বয়ে কমছে। রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশ আদানির জন্য ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র খুলেছে এবং অর্থ পরিশোধ ত্বরান্বিত করেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ হ্রাস এবং এ বিষয় সম্পর্কে রয়টার্সের প্রশ্নের জবাব দেয়নি আদানি পাওয়ার। তবে আদানি পাওয়ারের একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, বকেয়া পরিশোধের বিষয়টি মাথায় রেখে বাংলাদেশ থেকে চাহিদার ভিত্তিতে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমানো হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, অক্টোবরে আদানিকে ৯০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু আগের মাস গুলোতে যেখানে প্রতিমাসে বিল বাবদ ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার করে দেওয়ার চুক্তি রয়েছে সেখানে মাত্র ২০ থেকে ৫০ মিলিয়ন ডলার করে দেওয়া হয়েছে। আদানির কাছ থেকে বাংলাদেশ প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কেনে ১০ থেকে ১২ টাকায়। ইন্দোনেশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা কেনার দামও এর সঙ্গে সম্পর্কিত।