বাংলাদেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের ধরপাকড় বা দমনপীড়ন করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্টচেকিং ফেসবুক পেইজে জানায়, ছাত্রনেতৃত্বাধীন গণআন্দোলনের মাধ্যমে আগস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে কিছু ভারতীয় পত্রিকা আক্রমণাত্মকভাবে ভ্রান্ত তথ্য ছড়াচ্ছে। এতে আরো বলা হয়, ‘তারা বিপ্লবের পরে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার সংবাদ অতিরঞ্জিত করেছে। আওয়ামী লীগের সমর্থকদের আজকের ধরপাকড়ের সাথে সম্পর্কিত তথ্য প্রচারের ক্ষেত্রে একইভাবে মিথ্যাচার।’ গত রোববার (১০ নভেম্বর) রাজধানীতে উসকানিমূলক কর্মকা-ের অভিযোগে আওয়ামী লীগের কয়েক ডজন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ একটি বিবৃতি দিয়েছে।
প্রেস উইং জানায়, ‘গ্রেফতারদের মধ্যে কয়েকজনের হাতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি ছিল। পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হাসিনা তার সমর্থকদের গ্রেফতার এড়াতে ঢাল হিসেবে ট্রাম্পের ছবি ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।’
প্রেস উইং আরো জানায়, ‘গ্রেফতাররা পুলিশকে জানিয়েছেন, তারা মার্কিন রাজনীতি অনুসরণ করেন না এবং শুধু হাসিনার নির্দেশে ট্রাম্পের ছবি নিয়ে বের হয়েছিলেন।’ ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে গতকালের বাংলাদেশের ঘটনাগুলো সম্পর্কে পুরোপুরি ভুল রিপোর্ট করেছে।
তারা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গুলিস্তানের জিরো পয়েন্টে নূর হোসেন দিবস (১০ নভেম্বর) উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সমাবেশকে ‘ট্রাম্প সমর্থকদের’ সমাবেশ হিসেবে বর্ণনা করেছে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের বিজয় উদযাপন করতে এসেছিলেন তারা।
বাংলাদেশে কোনো গোষ্ঠী নিজেদের ‘ট্রাম্প সমর্থক’ হিসেবে পরিচয় দেয়নি বা অতীতে তার সফলতা উদযাপন করেনি। এছাড়া, আওয়ামী লীগের নূর হোসেন দিবসের কর্মসূচির সাথে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বিজয় উদযাপনের কোনো বিষয় উল্লেখ ছিল না।
তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেটি প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ কর্মীদের রোববারের অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর পোস্টারের পাশাপাশি ট্রাম্পের পোস্টারও বহন করতে হবে। বিশেষভাবে ট্রাম্পের পোস্টারগুলো পুলিশি কার্যক্রম থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
আওয়ামী লীগের কর্মীদের এই ঘটনার ছবি তোলার এবং তাদের নেতাদের কাছে পাঠানোর নির্দেশ ছিল; যাতে সেগুলো ট্রাম্পের কাছে পাঠানো যায়। এসব যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে অন্তর্র্বতী সরকারের বিরুদ্ধে উসকে দেয়ার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে দাবি প্রেস উইংয়ের। এই নির্দেশনাসম্বলিত একটি কল রেকর্ড গত সপ্তাহে ফাঁস হয়েছিল। যদিও ইউএনবি এই রেকর্ডিংটির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করেনি। তবে আওয়ামী লীগের অনেক কর্মী পরে একই নির্দেশনা অনুসরণ করে গ্রেফতার হওয়ায় এই রেকর্ডিংটির সত্যতা প্রমাণ হয়।