শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::

সাধারণ ঠান্ডা-কাশি নাকি নিউমোনিয়া?

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৪

ঋতু পরিবর্তনের জেরে অনেকেই ঠান্ডা-কাশির সমস্যায় ভোগেন। আর এসব সমস্যাকে সাধারণ ফ্লু ভেবে বেশিরভাগ মানুষ অবহেলা করেন। সাধারণ সর্দি-কাশির সমস্যা ৩-৫ দিনের মধ্যেই সাধারণত সেরে যায়। যদি দীর্ঘদিন আপনি এই সমস্যায় ভোগেন তাহলে সতর্ক হতে হবে। কারণ শুধু ফ্লুর কারণেই নয় ফুসফুসের সংক্রমণেও কিন্তু দেখা দিতে পারে ঠান্ডা-কাশি, জ্বর কিংবা শ্বাসকষ্টের লক্ষণ। জানলে অবাক হবেন, ফুসফুসজনিত অসুখে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। নিউমোনিয়ার পাশাপাশি আছে অ্যাজমা, সিওপিডি এগুলোও কিন্তু বেশ জটিল ফুসফুসের ব্যাধি। বিশেষ করে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর মধ্যে সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টের লক্ষণই বেশি দেখা দেয়।
নিউমোনিয়া কী?
নিউমোনিয়া হলে ফুসফুসে বায়ুপ্রবাহের নানা জায়গায় তরল ও পুঁজ জমে। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে কফও জমে। যদিও বিভিন্ন কারণে হতে পারে নিউমোনিয়া। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় ব্যাকটেরিয়া থেকে শুরু করে ভাইরাস, ফাঙ্গাসের কারণে এই রোগ বেশি করে দেখা যায়। কাদের নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি?
১. ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে
৩. ডায়াবেটিস রোগীদের
৪. হাই প্রেশার থাকলে
৫. ক্যানসারে আক্রান্ত হলে কিংবা
৬. এইচআইভি সংক্রমিতদের মধ্যে নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি।
কী কী লক্ষণ দেখা যায়?
যদিও একেকজনের শরীরে ভিন্ন ভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে নিউমোনিয়ার উপসর্গের। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যে লক্ষণগুলো দেখা দেয় সেগুলো হলো-
>> কাশি
>> শ্বাস নিতে বুকে ব্যথা
>> বিভ্রান্তি
>> কাশির সঙ্গে কফ ওঠা
>> ক্লান্তিতে ভোগা
>> কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা
>> শরীরের তাপমাত্রা কমে যাওয়া ও
>> তীব্র শ্বাসকষ্ট।
শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, জ্বর ১০২ ডিগ্রির বেশি, কাশির সঙ্গে পুঁজ বের হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। এছাড়া বয়স ৬৫ এর বেশি হলে ও শিশুর বয়স ২ বছরের নিচে হলে কিংবা ইমিউনিটি দুর্বল, কেমোথেরাপি চললে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
নিউমোনিয়ার গুরুতর যে লক্ষণ দেখলে দ্রুত যাবেন হাসপাতালে-
১. জ্বর ও কাশি না সারলে
২. বিশ্রামের সময়ও শ্বাস নিতে অসুবিধা হলে
৩. শ্বাসের সঙ্গে বুকে ব্যথা
৪. সর্দি বা ফ্লু না সারা
৫. বয়স্কদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের সঙ্গে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া ইত্যাদি।
রোগ নির্ণয় করা হয় কীভাবে?
শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি বুকের এক্স-রে দ্বারা নির্ণয় করা হয় নিউমোনিয়া। রক্ত পরীক্ষা, স্পুটাম পরীক্ষা, সিটি স্ক্যান ও ব্রঙ্কোস্কোপির প্রয়োজনও পড়তে পারে। যারা গুরুতর অসুস্থ বা জটিলতার ঝুঁকিতে আছেন তাদের হৃদস্পন্দন, শ্বাস-প্রশ্বাসের হার, তাপমাত্রা ও অক্সিজেনের মাত্রা পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হতে পারে।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধে করণীয়
নিউমোনিয়া ও এর জটিলতা প্রতিরোধের জন্য টিকা গ্রহণ হলো সর্বোত্তম সুরক্ষাকবচ। নিউমোকোকাল ভ্যাকসিনের পাশাপাশি ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু ভ্যাকসিন বেশ কার্যকরী। নিউমোনিয়া প্রতিরোধে ধূমপান ত্যাগ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর পাশাপাশি সাবান ও পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজার ব্যবহারের মাধ্যমে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যাদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ আছে তাদের কাশি বা হাঁচির সময় তাদের মুখ ও নাক ঢেকে রাখা উচিত, তাদের ব্যবহৃত টিস্যুগুলো নির্দিষ্ট স্থানে ফেলঅ উচিত ও ঘন ঘন তাদের হাত ধুতে হবে।
গতকাল ১২ নভেম্বর ছিল বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস। প্রতিবছর ১২ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী এ দিবস পালিত হয়। ২০০৯ সাল থেকে নিউমোনিয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে পালিত হয়ে আসছে দিবসটি। বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস ২০২৪ এর প্রতিপাদ্য হলো ‘আসুন নিউমোনিয়া বন্ধ করার লড়াইয়ে সক্রিয় সহযোগী হই’। সূত্র: এনএইচএস/মায়োক্লিনিক/টাইমস অব ইন্ডিয়া




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com