মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে একজন শিক্ষার্থী তার উদ্যোক্তা স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছেন মিশরীয় ফাউমি মুরগির খামারের মাধ্যমে। জমির উদ্দিন(৩০), শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের খোশবাস গ্রামে লতিফিয়া ফাউমি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করে, এক বছরের মধ্যে খামারের পরিধি বাড়িয়ে সফলতার পথে এগিয়ে চলেছেন। পেশায় ছাত্র, জমির বর্তমানে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার পাশাপাশি শ্রীমঙ্গল আনোয়ারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসার ফাজিল ২য় বর্ষেও অধ্যয়নরত। পরিবারের বড় ছেলে হওয়ায়, সংসারের আর্থিক দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারকেও সহায়তা দিতে তিনি প্রথমে মুদির দোকান দেন। কিন্তু ধীরে ধীরে তার মনে উদ্দীপ্ত হয় উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা, এবং সেই ইচ্ছেই তাকে মিশরীয় ফাউমি মুরগির খামারের দিকে পরিচালিত করে। ২০২৩ সালের শেষের দিকে দুই লাখ টাকা পুঁজিতে জমির শুরু করেন তার খামার। প্রথমে ২,১০০ মুরগির বাচ্চা নিয়ে পথচলা শুরু হলেও এখন তার খামারে মুরগির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩,৫০০। জমির উদ্দিন বলেন, খামার শুরু করতে অনেক টাকা দরকার ছিল, তবে আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। এখন মুরগি ও ডিম বিক্রি করে প্রায় সাত লাখ টাকা পুঁজি তৈরি হয়েছে। মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী শাকির আহম্মেদ বলেন, জমির উদ্দিন একজন শিক্ষিত যুবক, যে তার মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে খামারের মাধ্যমে নতুন দিশা তৈরি করেছে। তার মতো শিক্ষিত যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার পথ অনুসরণ করা উচিত। জমিরের মতো উদ্যোক্তাদের সফলতার পথ অনুসরণ করতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, জমির উদ্দিনের মতো উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য আমাদের যুবকদের পরামর্শ দেওয়া উচিত, কারণ তিনি শুধু চাকরির চিন্তা না করে নিজের ব্যবসা শুরু করেছেন। জমির উদ্দিনের খামারের বিশেষত্ব হলো মিশরীয় ফাউমি জাতের মুরগি, যা মিশরের ফায়ুম অঞ্চলের একটি প্রাচীন জাত। এই মুরগি উচ্চমাত্রায় ডিম দেয় এবং দ্রুত বৃদ্ধি পায়, যা খামারিদের জন্য লাভজনক। এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরও বলেন, ফাউমি মুরগির খামারের জন্য জমির উদ্দিন উদাহরণ হয়ে উঠেছেন। তার ব্যবসা এবং শিক্ষার সঙ্গে সমন্বয় ঘটানো একটি দৃষ্টান্ত। জমির উদ্দিনের মতো উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে তরুণদের উচিত, চাকরি পাওয়ার অপেক্ষায় না থেকে নিজেদের উদ্যোগে কিছু করার চিন্তা করা। তিনি বিশ্বাস করেন, চাকরির চেয়ে ব্যবসা অনেক ভালো। এখানে রয়েছে স্বাধীনতা, সফলতা এবং আত্মনির্ভরশীলতা।