খুলনার কয়রায় জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পোস্ট অফিসের কার্যক্রম। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ৪নং কয়রা সিদ্দীকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সীমানা প্রাচীরের পাশেই রয়েছে ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিস। অফিসের ভেতরে প্রবেশ করলেই দেখা যায় পুরাতন, জরাজীর্ণ পরিত্যক্ত ভবনের একটি কক্ষ। ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিসটির ছাদের প্রায় পুরো পলেস্তরা ঝরে পড়ে গেছে এবং লোহার রডগুলো থেকে পলেস্তরা খসে পড়েছে। মরিচা ধরা ছাদের রড যে কোনো সময় মেঝেতে ঝরে পড়তে পারে। মেঝের আবরণও ভাঙা প্রায়। এছাড়া অফিসে কর্মরতদের ব্যবহারের উপকরণগুলোও ব্যবহার অনুপযোগী আর ভাঙাচোরা। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগেও পোস্ট অফিসের প্রয়োজনীয়তা ফুরায়নি। এখনও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের প্রয়োজনীয় চিঠিপত্র পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আদান-প্রদান হয়ে থাকে। সরকারও পোস্ট অফিসের আধুনিকায়নে নানা পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। পোস্ট অফিসগুলোকে ডিজিটাল ও ই-সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। প্রত্যান্ত অঞ্চলের জনসাধারণ ডিজিটাল ডাকসেবা পেয়ে উপকৃত হচ্ছেন। ই-সেন্টারগুলোতে উদ্যোক্তা নিয়োগের মাধ্যমে যুবসমাজের বেকারত্ব দূরীকরণে ভূমিকা রাখছে। পোস্ট অফিস সুত্রে জানা গেছে, কয়রায় ১৭ টি ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিস রয়েছে। এর মধ্যে ৪নং কয়রা ব্রাঞ্চ অফিসটি ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে পোস্ট অফিসের তেমন কোন ভালো অফিস ঘর না থাকায় মাদ্রাসার একটি কক্ষে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। পরে ২০১১ সালের দিকে নিজস্ব যায়গায় নির্মান করা হয় পোস্ট অফিসের ভবন। ২০১৭ সালের ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিসটি সংষ্কারের কাজ করে কর্তৃপক্ষ। এর পরে আর সংস্কার না হওয়ায় জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে অফিসের ভবনটি। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা হলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ৪নং কয়রা ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিসে কর্মরত (ডাক পিওন) রফিকুল ইসলাম বলেন, জরাজীর্ণ এ ভবনে বসে কাজ করার মতো পরিবেশ নেই। পলেস্তরা গুলো খসে পড়ছে, যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। ২০১১ সালে দিকে নির্মিত এ ভাবনটি ২০১৭ সালের দিকে নাম মাত্র সংষ্কারের কাজ করা হলেও সেটা মান সম্মত না হওয়ায় ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। পোষ্ট অফিসের উদ্যেক্তা সালাহউদ্দীন (মুকুল) বলেন, অফিসের সব আসবাবপত্র থেকে শুরু করে ব্যবহার্য সকল যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন সেগুলো দিয়ে কাজ করা যায়না সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বার বার বলার পরেও সেগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি কতৃপক্ষ। পোস্ট মাষ্টার মহিববুল্লাহ বলেন,অফিসের অবস্থা খুবই খারাপ। পাশের মাদ্রাসার একটি কক্ষে বসে অফিসের কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। খুব কষ্ট করে চাকরির স্বার্থে আমরা এখানে দায়িত্ব পালন করছি। কয়রা উপজেলা পোষ্ট মাষ্টার অলিউর রহমান বলেন, আমাদের ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ সরেজমিন এসে জরাজীর্ণ ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিসের ভবনগুলোর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন। আমরা ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিসের জরাজীর্ণ ভবন গুলোর তালিকা করে কতৃপক্ষের নিকট পাঠিয়েছি। নির্দেশনা পেলে সংষ্কারের কাজ শুরু করা হবে। খুলনা বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মিরাজুল হক বলেন, ব্রাঞ্চ পোষ্ট অফিসের ভবন গুলো প্রজেক্টের মাধ্যমে হয়। এর আগে গ্রামীন ডাকঘর নির্মান নামে প্রকল্প ছিল কিন্তু, নতুন কোন প্রকল্প এই মূহুর্তে আমাদের নাই। প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে নতুন প্রকল্প পাশ হলে সংষ্কারের কাজ শুরু হবে।