কক্সবাজারের চকরিয়ায় ইট ব্লক (হলো ব্লক) তৈরির মিক্সচার মেশিনের পাখার উপরে বসে মস্কারা করতে গিযে হঠাৎ চালু হয়ে তিন শ্রমিকের দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মেশিনের পাখায় জড়িয়ে দুই শ্রমিকের শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। বেচে গেছে জিহাদ নামের এক কিশোর শ্রমিক। নিহত দুই পরিবারকে দুই লক্ষ করে ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরনের মাধ্যমে দফারফা হচ্ছে দাবী করেছেন কারখানার চেয়ারম্যান প্রকৌশলী কফিল উদ্দীন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঘটনাটি ঘটে চকরিয়া পৌরসভার তরছপাড়া বিল এলাকায় মাস্টারমাইন্ড ব্লক ফ্যাক্টরিতে। সরেজমিনে, মাস্টারমাইন্ড ব্লক ফ্যাক্টরির প্রকৌশলী কাম হিসাব রক্ষক সাদ্দাম জানান, সরকারের অগোচরে সিমেন্টের ব্লক তৈরি কোনো অনুমতি ছাড়া চকরিয়া পৌরশহরে তরছপাড়ায় একটি কারখানা চালু করে ইঞ্জিনিয়ার কফিল উদ্দিন ও মাস্টার গিয়াস উদ্দিন। অন্যান্য দিনের মতে বিকেল ৫টায় চকরিয়া পৌরসভা করাইয়া ঘোনার জিহাদ(২০) চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘুনিয়া এলাকার মো. শাহজাহানের ছেলে মো. শাহিন(১৮) এবং চকরিয়া পৌরসভার করাইয়াঘোনা এলাকার রুহুল কাদেরের ছেলে কামরান ইসলাম(২০)সহ ৮ জন জন কারখানার ডিউটি শেষ করে। এরপর সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে সিমেন্টের ব্লক তৈরির মিক্সার মেশিনের কামরান মেশিনের পাখার উপর বসে গল্প করছিলেন ৩ বন্ধু শ্রমিক শাহিন, কামরান ও জিহাদ। প্রকৌশলী কাম হিসাব রক্ষক সাদ্দাম আরো জানান, তিন জনের মধ্যে মস্কারা করে একে অপরকে বলে এক পাক ঘুরাই দেব নাকি? তাচ্ছিল্যের মধ্যেই স্টার্ট সুইচের গোড়ায় থাকা জাহিদের হাতের চাপ পড়ে হঠাৎ করে মেশিনটি চালু হয়ে যায়। এতে মেশিনের পাখার উপরে থাকা শাহিন ও কামরান পাখার সঙ্গে জড়িয়ে মেশিনে ঢুকে যায়। পরে জিহাদ দ্রুত মেশিনটি বন্ধ করে দেয়। ততক্ষণে ক্ষতবিক্ষত হয়ে নিস্প্রাণ হয়ে যায়। পরে অপরাপর লোকজন এসে দেহ দুটি উদ্ধার করে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্য ডাক্তার মৃত ঘোষনা করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। নিহত কিশোর শ্রমিকেরা হলেন- চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘুনিয়া এলাকার মো. শাহজাহানের ছেলে মো. শাহিন(১৮) এবং চকরিয়া পৌরসভার করাইয়াঘোনা এলাকার রুহুল কাদেরের ছেলে কামরান ইসলাম(২০)। শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, কারখানার মালিকপক্ষ তাদের হাসপাতালে না নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রমিকেরা তাদের দুজনকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে নিহত দুজনের পরিবার এসে তাদের লাশ শনাক্ত করে। নিহত দুজনের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে চকরিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাকিম হোসাইন বলেন, দুজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কারখানার চেয়ারম্যান প্রকৌশলী কফিল উদ্দীন জানান, নিহতের দুই পরিবারকে দুই লক্ষ করে টাকা দিয়ে আপসের ব্যবস্থা হয়েছে। চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনজুর কাদের বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ দুইটি উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের চাহিদা মোতাবেক পোষ্ট মর্টেম ছাড়াই লাশ পরিবারকে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে। এ ব্যাপারে দুর্ঘটনা জনিত অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হচ্ছে বলেও জানান ওসি মনজুর কাদের।