আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। আগামী এপ্রিলে রাজধানী ঢাকায় হচ্ছে বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জমকালো এই মিলনমেলা এ তথ্য জানিয়েছে সহযোগী দৈনিক মানবজমিন। সম্মেলনে অংশ নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ব্যবসায়িক টাইকুন ইলন মাস্কের। দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র মানবজমিনকে জানিয়েছে, ইলন মাস্কের উপস্থিতি নিয়ে খুবই আশাবাদী সরকার। এরইমধ্যে ইলন মাস্কের জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা উপদেষ্টা ঢাকা ঘুরে গেছেন।
অতি সম্প্রতি ইলন মাস্ক বিশ্ব অর্থনীতির ইতিহাসে নতুন নজির স্থাপন করেছেন। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনি প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ৪০ হাজার কোটি বা ৪০০ বিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার কোম্পানি টেসলা এবং স্পেসএক্সের দ্রুত বাজার বৃদ্ধিতে বিশ্বের এক নম্বর ধনীর তালিকায় উঠে আসে তার নাম।
দায়িত্বশীল একাধিক কূটনৈতিক ও সরকারি সূত্র মানবজমিনকে জানিয়েছে, এপ্রিলের প্রথমার্ধে হতে পারে কাঙ্ক্ষিত সেই বিনিয়োগ সম্মেলন। ৩ দিনের সূচি এবং অতিথি তালিকা প্রস্তাব করে এরইমধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দেশে বা বিদেশের কোনো কর্মসূচি যাতে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিনিয়োগ সম্মেলনের সূচি বিঘিœত না করে সে কারণে আগেভাগেই বিষয়টি তার বিবেচনায় উপস্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) বিনিয়োগ সম্মেলনটি আয়োজনের মূল দায়িত্বে থাকছে। তবে পুরো সরকার তথা প্রশাসনযন্ত্র ওই মেগা ইভেন্ট বাস্তবায়নে যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি- এপ্রিলের প্রথমার্ধকে টার্গেট করেই ৫৩ বছরের ইতিহাসের সেরা বিনিয়োগ সম্মেলনটির প্রস্তুতি কর্ম এগিয়ে চলেছে। প্রস্তাবিত তারিখ কিংবা কাছাকাছি সময়েই সম্মেলনটি হবে বলে ধারণা মিলেছে।
সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর টার্গেটে তালিকায় রয়েছেন বিশ্বের ধনী ব্যক্তিরা। অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস, ওরাকলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসনকেও আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। ওয়াকিবহাল সূত্র বলছে, বিনিয়োগ আকর্ষণে বৈশ্বিক টাইকুনদের কাছে টানার চেষ্টা রয়েছে বাংলাদেশের। তাদের আমন্ত্রণ জানানো এবং উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের গুড অফিস ব্যবহারের চিন্তা রয়েছে বিডার।
উল্লেখ্য, ইলন মাস্কের সম্পদ বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তার রাজনৈতিক সক্রিয়তাও। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবার নির্বাচিত হয়েছেন ডনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় ইলন মাস্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে মার্কিন বাজার পরিস্থিতি তার ব্যবসায়িক স্বার্থের পক্ষে সহায়ক হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় হোয়াইট হাউসের হয়ে এআই-এর নীতি নির্ধারক কমিটিতে এবার স্থান পেতে যাচ্ছেন ইলন মাস্কের সহযোগী ভারতীয় বংশোদ্ভূত শ্রীরাম কৃষ্ণাণ। সমপ্রতি এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প জানিয়েছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-এর নীতি-নির্ধারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে শ্রীরাম কৃষ্ণাণকে। তিনি হবেন নীতি- নির্ধারণী কমিটির এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।
স্মরণ করা যায়, অতীতেও দেশ-বিদেশে ‘বিনিয়োগ সম্মেলন’ করেছে বাংলাদেশ, তবে কোনটাতেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি।