পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বলেশ্বর নদীর পাড় ঘেঁষে বড় মাছুয়া ও তুষখালী ইউনিয়নের কাটাখাল এলাকায় গড়ে ওঠেছে বিষমুক্ত শুঁটকিপল্লী। চলতি মৌসুমে জেলে পরিবারের ব্যস্ততা বাড়ে ডেলা, ফ্যাপসা, ছুরি, লইট্যা, চাপিলা, পোয়াসহ ৩৫-৪০ প্রজাতির মাছ শুঁটকীকরণের কাজে। এখানে পাঁচটি শুটকির সেড গড়ে উঠেছে। সরকারি নিবন্ধিত তথ্যে উপজেলায় নদী ও সাগরে মাছ শিকার করে জীবন-জীবিকা বহন করে প্রায় ৯ হাজার জেলে। পরিষ্কার ও কাটাকাটি শেষে সারিবদ্ধভাবে বাঁশের মাচায় সূর্যের আলোতে শুকাতে দেয়া হয়। ব্যবসায়ীদের দাবি প্রাকৃতিক উপায় চলে শুটকি তৈরির কাজ। এখানে শুটকিতে কোন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। ঢাকা-চট্টগ্রাম রাজশাহী সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যায় এসব শুঁটকি। বছরে প্রায় কোটি টাকার শুটকি বেচা কিনা হয় কাটাখাল এলাকায়। স্থানীয় খেজুরবাড়িয়া গ্রামের শ্রমিক লাইলী বেগম বলেন, এই পল্লীতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছি। প্রতি ঘন্টা ৫০ টাকা দরে। সারা দিন কাজ করলে ৫ থেকে ৬ শ টাকা মজুরি পাই। কোনদিন কাজ থাকে-কোনদিন কাজ থাকে না। তা দিয়ে আমাদের সংসার চলছে। আমাদের এখানে ১৫-২০ জন শ্রমিক কাজ করে। শুটকি ব্যবসায়ী মিলন হাওলাদার বলেন, এ খাতে রয়েছে নানা সমস্যা। সরকারি কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না। অন্যের কাছ থেকে জমি ভাড়া করে আমাদের এই ব্যবসা পরিচালনা করতে হচ্ছে। আমরা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি শুঁটকিপল্লীর জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান চাই। ব্যবসার প্রসার বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন মঠবাড়িয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক। তিনি জানান, শীত মৌসমে ৭-৮ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদন হয়ে থাকে, যার মূল্য প্রায় কোটি টাকার মত। এই পল্লীতে কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন প্রায় অর্ধশত শ্রমিক। সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে আমারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করবো।