শশুরবাড়ির লোকজন পায়ে শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ রেখে দুইদিন আটকে তানিয়া খাতুন নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগে থানায় মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার এমন অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই গৃহবধূ ও তার বাবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার বাদেডিহী নামক গ্রামে। অভিযুক্ত স্বামী ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার বাদেডিহী গ্রামের ট্রাক চালক সোহেল রানা, তার মা মাহমুদা বেগম ও বোন ননদ রুমি বেগম। গৃহবধূ তানিয়া খাতুন একই উপজেলার মঙ্গলপৈতা গ্রামের রিপন গাজির মেয়ে। পারিবারিকভাবে আট বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। তাদের ৫ বছর ও ৩ মাসের দুইটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।মেয়ের বাবা রিপন গাজি জানান, বিয়ের পর থেকে জামাই সোহেল রানা তার মেয়েকে প্রায়ই যৌতুকের জন্য মারধর করতো। যে কারনে আমার মেয়ে বেশির ভাগ সময় আমার বাড়িতেই থাকে। প্রায় এক মাস হলো মেয়েকে জামাই নিয়ে গেছে। ৬ জানুয়ারি সকালে তানিয়াকে মারধর করে পায়ে শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ ঘরে আটকিয়ে রাখে।
খবর পেয়ে ৭ জানুয়ারি সকালে জামাই বাড়ি আসি। সেখানে এসে জামাই সোহেল রানার কাছে ঘটনা জানতে চাই। এসময় উত্তেজিত জামাই আমাকেও মারধর করে। এরপর ধারালো দা দিয়ে আমার পায়ে কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরিস্থিত খারাপ দেখে আমি স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে খবর দিই। পুলিশ বেলা ১১টার দিকে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। তিনি আরো জানান, জামাইকে আমি তিন কিস্তিতে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়েছি। তারপরও টাকা দাবি করে প্রায়ই মেয়ের উপর নির্যাতন করে আসছে। নির্যাতিত গৃহবধূ তানিয়া জানান, বিয়ের থেকে আমার স্বামী আমাকে মারপিট করে। দ্বিতীয় মেয়ে গর্ভে আসার পর আমাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। ২৭ দিন আগে আমাকে বাড়ি নিয়ে আসে। গত সোমবার আমাকে শাশুড়ি, স্বামী ও ননদ মিলে মারধর করে। এরপর আমাকে পায়ে শিকল দিয়ে তাতে তালা মেরে আটকে রাখে। কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনা জানার পর পুলিশ পাঠিয়ে মেয়ে ও বাবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় রিপন গাজি বাদি হয়ে স্বামী সোহেল রানা, শাশুড়ি মাহমুদা খাতুন ও ননদ রুমি বেগমের নামে মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।