বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:২২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
পাঁচবিবি পৌরসভার প্রধান ড্রেনটি দীর্ঘ ২৫ বছরেও সংস্কার হয়নি: দুর্ভোগে এলাকাবাসী বর্ণাঢ্য আয়োজনে উলিপুর প্রেসক্লাবের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত জগন্নাথপুর থানার ওসি রুহুল আমীন জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত চকরিয়ায় মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধে সড়ক পুলিশের মাইকিং কালীগঞ্জ পৌরসভায় টিসিবি-র পণ্য বিতরণে অব্যবস্থাপনা এবং ব্যাপক অনিয়ম রূপগঞ্জে টায়ারস কারখানায় আগুনে ১৮২জন নিখোঁজ, স্বজনদের থানায় অবস্থান চরফ্যাসনের চরাঞ্চলে মহিষ পালনে সংকট ও সম্ভাবনা চকরিয়ার বদরখালীতে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় আটক ৮ পটুয়াখালীতে সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের মিলনমেলা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা পিরোজপুরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ

মায়োপিয়া: শিশুর দৃষ্টিশক্তির নীরব শত্রু

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২৫

মায়োপিয়া বা নিকট দৃষ্টি-সমস্যা এমন একটি দৃষ্টিশক্তির অবস্থা, যেখানে নিকটবর্তী বস্তু স্পষ্ট দেখা যায় কিন্তু দূরের বস্তু ঝাপসা দেখায়। এটি সাধারণত চোখের আকৃতির পরিবর্তনের কারণে ঘটে। ফলে আলো রেটিনার ওপর সঠিকভাবে ফোকাস করতে পারে না।
বিশ্বব্যাপী মায়োপিয়া এখন গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা মায়োপিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। বাংলাদেশে শহরাঞ্চলে শিশুদের মধ্যে মায়োপিয়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে। যা স্ক্রিনের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং বাইরের কার্যক্রমের অভাবে আরও তীব্র হচ্ছে।
যদিও হালকা মায়োপিয়া দৈনন্দিন জীবনে তেমন প্রভাব ফেলে না। উচ্চ মায়োপিয়া দীর্ঘমেয়াদে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি দৃষ্টিশক্তি হারানোর ঝুঁকিও থাকে।
উচ্চ মায়োপিয়ার জটিলতা
রেটিনার বিচ্ছিন্নতা
উচ্চ মায়োপিয়া রেটিনার ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যা বিচ্ছিন্নতার ঝুঁকি বাড়ায়। যদি সময়মতো চিকিৎসা না করা হয়, রেটিনার বিচ্ছিন্নতা স্থায়ী দৃষ্টিহীনতার কারণ হতে পারে।
গ্লুকোমা
চোখের তরল নিষ্কাশনে অসুবিধার কারণে চোখের ভেতরের চাপ বেড়ে যায় এবং অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উচ্চ মায়োপিয়ার ফলে গ্লুকোমার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
মায়োপিক ম্যাকুলোপ্যাথি
রেটিনা এবং ম্যাকুলার ওপর চাপ পড়ে, যা দৃষ্টির কিছু অংশে অন্ধত্ব এবং সূক্ষ্ম কাজ, যেমন পড়া বা গাড়ি চালানোর মতো কাজ করতে অসুবিধা তৈরি করে।
শিশুর মায়োপিয়া ব্যবস্থাপনায় বাবা-মায়ের করণীয়
আপনার শিশুর দৃষ্টিশক্তি রক্ষা এবং মায়োপিয়ার অগ্রগতি ধীর করার জন্য কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেন:
নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করুন
প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত চোখ পরীক্ষা মায়োপিয়া শনাক্ত করতে এবং সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। একটি মায়োপিয়া ঝুঁকি মূল্যায়ন আপনার শিশুর জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার প্রয়োজন কি না তা নির্ধারণ করতে পারে।
বাইরের খেলাধুলার প্রতি উৎসাহ
প্রাকৃতিক আলো চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। প্রতিদিন অন্তত ১-২ ঘণ্টা বাইরের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করুন।
স্ক্রিন টাইম সীমিত করুন
ডিজিটাল ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহার চোখের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং মায়োপিয়ার অগ্রগতি বাড়ায়। ২০-২০-২০ নিয়ম অনুসরণ করুন: প্রতি ২০ মিনিট স্ক্রিন ব্যবহারের পর, ২০ সেকেন্ডের জন্য ২০ ফুট দূরের কিছু দেখুন।
মায়োপিয়া ব্যবস্থাপনার সমাধান অন্বেষণ
আপনার চোখের বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন এবং নি¤œলিখিত সমাধানগুলো বিবেচনা করুন:
কাস্টম চশমা বা কনট্যাক্ট লেন্স: মায়োপিয়ার অগ্রগতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা।
অর্থোকারেটোলজি (অর্থো-কে): রাতারাতি কর্নিয়া পুনরায় আকার দেওয়ার থেরাপি।
অ্যাট্রোপিন আই ড্রপস: মায়োপিয়ার অগ্রগতি ধীর করার নিরাপদ এবং কার্যকর পদ্ধতি।
মায়োপিয়া প্রতিরোধ: সহজ জীবনধারার পরিবর্তন
সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন: ভিটামিন এ, লুটেইন এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাদ্য চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। গাজর, শাক-সবজি এবং মাছ শিশুর খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।
যথাযথ আলো নিশ্চিত করুন: অন্ধকারে পড়া বা স্ক্রিন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
প্রচুর বিরতি নিন: পড়াশোনা বা কাজের সময় চোখে বিশ্রাম দেওয়ার জন্য মাঝে মাঝে বিরতি নিন।
মায়োপিয়ার চিকিৎসাপদ্ধতি
১. মায়োপিয়া নিয়ন্ত্রণ চশমা এবং লেন্স: দৃষ্টিশক্তি সংশোধন এবং মায়োপিয়ার অগ্রগতি ধীর করার কার্যকর পদ্ধতি।
২. অর্থোকারেটোলজি (অর্থো-কে): রাতারাতি কর্নিয়া পুনরায় আকার দিয়ে দিনের বেলায় পরিষ্কার দৃষ্টি প্রদান করে।
৩. অ্যাট্রোপিন আই ড্রপস: নিয়মিত ব্যবহারে মায়োপিয়ার অগ্রগতি ধীর করে।
৪. মায়োপিয়া নিয়ন্ত্রণ কনট্যাক্ট লেন্স: শিশুর জন্য বিশেষভাবে তৈরি, যা দৃষ্টিশক্তি সংশোধনের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা দেয়।
আজই ব্যবস্থা নিন
আপনার শিশুর দৃষ্টিশক্তি অমূল্য। প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিক চিকিৎসা ভবিষ্যতে জটিলতা এড়াতে সহায়ক হতে পারে। নিয়মিত চোখ পরীক্ষা, স্ক্রিন টাইম সীমাবদ্ধ এবং আধুনিক চিকিৎসার সাহায্যে তাদের চোখের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করুন। বিশেষজ্ঞ পরামর্শ এবং সর্বাধুনিক সমাধানের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারেন।
লেখক: ড. গাজী রিয়াজ রহমান, সিইও, ঢাকা অপটিক্যাল প্যাভিলিয়ন, কারওয়ান বাজার, ঢাকা।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com