বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
পাঁচবিবি পৌরসভার প্রধান ড্রেনটি দীর্ঘ ২৫ বছরেও সংস্কার হয়নি: দুর্ভোগে এলাকাবাসী বর্ণাঢ্য আয়োজনে উলিপুর প্রেসক্লাবের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত জগন্নাথপুর থানার ওসি রুহুল আমীন জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত চকরিয়ায় মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধে সড়ক পুলিশের মাইকিং কালীগঞ্জ পৌরসভায় টিসিবি-র পণ্য বিতরণে অব্যবস্থাপনা এবং ব্যাপক অনিয়ম রূপগঞ্জে টায়ারস কারখানায় আগুনে ১৮২জন নিখোঁজ, স্বজনদের থানায় অবস্থান চরফ্যাসনের চরাঞ্চলে মহিষ পালনে সংকট ও সম্ভাবনা চকরিয়ার বদরখালীতে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় আটক ৮ পটুয়াখালীতে সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের মিলনমেলা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা পিরোজপুরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ

ইলিয়াস ‍আলীকে হত্যার পর মেজর জিয়াউল: ‘শেষ করে তাকে যমুনায় ফেলে দিয়ে এসেছি’

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২৫

প্রভাবশালী বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলী ও তার গাড়িচালক আনসার আলীকে ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে বনানীর রাস্তা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা তুলে নেয়। এরপর ইলিয়াস আলীর পরিবার দীর্ঘ এক যুগ ধরে সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তি ও দপ্তরে যোগাযোগ করেও ইলিয়াস আলীর হদিস পাননি।
৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর ইলিয়াস আলী গুম রহস্য আবারও আলোচনায় আসে। সম্প্রতি এই ঘটনার চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া গ্রেপ্তার র‌্যাব সদস্য সার্জেন্ট তাহেরুল ইসলামের ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিতে।
তাহেরুল ইসলাম বলেন, ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যার পর দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ইলিয়াস আলী সভা করেন তৎকালীন শেরাটন হোটেলে (বর্তমান ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল)। সভা শেষ করে রাত ১১টায় তিনি বের হন এবং গাড়িতে করে বাসায় ফিরছিলেন। ওই দিন জিয়াউল আহসানের নির্দেশে শেরাটন হোটেল থেকে তিনি ইলিয়াস আলীকে অনুসরণ করেন। মহাখালী পৌঁছার পর জিয়াউল আহসান নিজেই আরেকটি টিম নিয়ে ইলিয়াস আলীর গাড়ি অনুসরণ করেন। ইলিয়াস আলীর গাড়ি বনানীর ২ নম্বর সড়কের বাসার সামনে পৌঁছার আগেই বনানীর সাউথ পয়েন্ট স্কুলের সামনে থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয়। ইলিয়াস আলীর সঙ্গে তার ড্রাইভার আনসারকেও অপহরণ করা হয়।
জবানবন্দিতে তিনি আরও বলেছেন, “‘আমার দায়িত্ব ছিল শেরাটন থেকে অনুসরণ এবং বেতার বার্তায় গতিপথ জিয়াউল স্যারকে জানানো। মহাখালী পৌঁছার পর ইলিয়াস আলীর গাড়ি সরাসরি অনুসরণ শুরু করেন জিয়ার টিম। পরে মহাখালী জলখাবার হোটেলের অদূরে বনানীর ২ নম্বর সড়কে ইলিয়াস আলীর গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে থামানোর পর ড্রাইভার আনসারসহ ইলিয়াস আলীকে অপহরণ করে জিয়া টিমের সদস্যরা। এরপর জিয়া বলেন, ‘তোমার ডিউটি শেষ, চলে যাও।’ নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব শেষে তিনি ফিরে যান। জিয়ার টিম ইলিয়াস আলীকে নিয়ে যাওয়ার পর কী হয়েছে সেটা তিনি বলতে পারবেন না।’”
ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানা যায়, ইলিয়াস আলীকে হত্যা ছাড়াও র‌্যাবের জিয়াউল আহসানের কিলিং স্কোয়াডের এক সদস্য একদিনে ১১ জন এবং আরেক সদস্য ১৩ জনকে খুন করেছিল। সেই সময় জিয়াউল আহসান র‌্যাবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক রয়েছেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও গুম তদন্ত কমিশন সূত্রে আরও জানা গেছে, ইলিয়াস আলীকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত দুজন সেনাসদস্য বর্তমানে সেনাবাহিনীতে রয়েছেন। এরা হলেন, ওয়ারেন্ট অফিসার জিয়া ও ইমরুল। জিয়াউল আহসানের রানার হিসেবে গুম ও খুন মিশনের হুকুম তারা তামিল করতেন। খুনিচক্রের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার পর গুম তদন্ত কমিশন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত টিমের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী এ দুই সদস্যকে ক্লোজড এবং অন্তরীণ করেছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইলিয়াস আলীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছিল। হত্যার পর তৎকালীন র‌্যাব কর্মকর্তা এবং পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীতে পদোন্নতি পেয়ে মেজর জেনারেল হওয়া জিয়াউল আহসান অফিসে ফিরে স্বস্তি ও আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘আজ বড় একটি অপারেশনে সাকসেসফুল হলাম। শেষ করে তাকে যমুনায় ফেলে দিয়ে এসেছি।’
জিয়া এ কথাও বলেন যে, ইলিয়াস আলী অপারেশনের কথা ঊর্ধ্বতনকে জানিয়েছি। ঊর্ধ্বতন বলতে তিনি মেজর জেনারেল তারেক সিদ্দিকি কিংবা শেখ হাসিনাকে বুঝিয়েছেন বলে সূত্রের ধারণা। যাদের সামনে এই কথা জিয়াউল আহসান বলেছিলেন, তাদেরকেও চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত টিম।
গুম তদন্ত কমিশন সূত্র জানায়, শেখ হাসিনার নির্দেশেই ইলিয়াস আলীকে গুম এবং খুন করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে এসএসএফ-এর মহাপরিচালক ছিলেন লে. জেনারেল চৌধুরী হাসান সওরাওয়ার্দী। তার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, ডিজিএফআইর তৎকালীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ডেকে নিয়ে ইলিয়াস আলীকে গুম করার নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। অথচ পরবর্তী সময়ে ইলিয়াস আলীর স্ত্রীকে ডেকে এনে নাটকও করেছিলেন।
পুরাতন শাড়ি পরে জড়িয়ে ধরেছিলেন ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও কন্যাকে। এ সময় ইলিয়াস আলীর স্ত্রীকে শেখ হাসিনা জানিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে অপহরণ করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিরোধের জের হিসেবে এটা করা হয়েছে বলে ইলিয়াস আলীর স্ত্রীকে অবহিত করেছিলেন শেখ হাসিনা। সূত্র/আমার দেশ




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com