বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হলিউড অভিনেতা জেমস উডস। ৭৭ বছর বয়সী এই অভিনেতা সম্প্রতি লস অ্যাঞ্জেলেসে ঘটে যাওয়া দাবানালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তার প্যাসিফিক প্যালিসেডসের বাড়িটি পুড়ে গেছে। এ দুর্বিষহ দুর্ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। সিএনএন-এর সাথে এক আবেগপূর্ণ সাক্ষাৎকারে উডস বলেন, ‘আগেরদিন পুলে সাঁতার কাটছিলাম। পরের দিন সব কিছু চলে গেল।’
এখনও জ্বলছে দাবান। এই অগ্নিকা-ে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বহু বাড়ি পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। উডসের বাড়ি ছিল সেই এলাকাতেই যেখানে খুব দ্রুত আগুনে ছড়িয়ে গিয়েছিল। ‘ভ্যাম্পায়ার্স’ এবং ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’ সিনেমার এই তারকা জানান, চোখের নিমিষে তার বাড়িটি আগুনে পড়ে গেল। তিনি কোনোভাবেই প্রস্তুত ছিলেন না এমন বিপদের জন্য।
এই বিপর্যয়ের মধ্যে উডস তার পরিবারের এক হৃদয়বিদারক মুহূর্তও শেয়ার করেছেন। তার স্ত্রী সারা মিলার-উডস এবং তার ৮ বছরের ভাগ্নি বাড়ি পুনর্র্নিমাণের জন্য নিজেদের জমানো টাকা নিয়ে উডসকে দিয়েছেন। ছোট্ট মেয়েটির সমর্থনমূলক এই পদক্ষেপে আবেগে আপ্লুত উডস। তিনি বলেন, ‘তাদের বিষয়টি খুবই ছোট কিন্তু অনেক বড় পদক্ষেপ’।
এছাড়াও তিনি জানান, তার এক ৯৪ বছর বয়সী প্রতিবেশী ডিমেনশিয়া রোগে ভুগছেন, তিনিও আগুনে আটকে গিয়েছিলেন। তাকে উদ্ধার করেছেন উডস। তিনি বলেন, ‘তাকে একা ফেলে যাওয়া হয়েছিল। সবকিছু যেন এক বিশাল অগ্নিকা-ের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছিল। প্রতিবেশীকে সাহায্য করতে গিয়ে ভীষণ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি আমি।’
কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘ভাবছিলাম আমি আরও শক্তিশালী হবো। কিন্তু আমি ঠিকই কান্না থামাতে পারিনি।’
এই বিপর্যয়ের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন উডস। এক্স (আগের নাম টুইটার)-এ পোস্ট করে তিনি তার প্রতিবেশীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘এমন বিপর্যয়ের সময়ে বন্ধুত্ব এবং ভালো প্রতিবেশী থাকা সবচেয়ে অমূল্য।’ তিনি তার প্রতিবেশীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং তাদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
একদিকে উডস ও তার প্রতিবেশীরা মানবিক সাহায্য নিয়ে একে অপরকে শক্তি যুগিয়ে চলেছেন অন্যদিকে এই অগ্নিকা-ে গোটা লস অ্যাঞ্জেলেসের জীবনে ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছে, আর চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি বাধাগ্রস্ত হয়েছে। হ্যাকস এবং সুইটস এলএ-এর মতো টিভি প্রোডাকশন বন্ধ হয়েছে এবং সমালোচক পুরস্কারের অনুষ্ঠানও স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত হয়েছে অস্কারের কর্মসূচিও।