বৃটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের খালা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের সঙ্গে সম্পর্কিত তার সম্পত্তি ব্যবহারের বিষয়টি বৃটেনের রাজস্ব ও শুল্ক বিভাগ এইচএমআরসি কর্তৃক তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে দেশটির অন্যতম প্রধান বৃহৎ রাজনৈতিক দল কনজারভেটিভ পার্টি। এ নিয়ে বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমারকে চিঠি দিয়েছেন ছায়া মন্ত্রীপরিষদ কার্যালয়ের মন্ত্রী অ্যালেক্স বার্গহার্ট। চিঠিতে টিউলিপের সম্পত্তি বৃটেনের রাজস্ব ও শুল্ক বিভাগের তদন্তকারীদের খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
স্টারমারকে লেখা চিঠিতে লন্ডনে টিউলিপের সম্পত্তির ওপর আরোপিত সকল কর পরিশোধ করা হয়েছে কিনা সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন বার্গার্ট । চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘লেবার সরকার কি এটা নিশ্চিত করবে যে- এইচএমআরসি কোনো ব্যক্তির সম্পত্তি হস্তান্তর এবং বিক্রয়ের ওপর কর নির্ধারণ করছে। বিশেষ করে স্ট্যাম্প শুল্ক, মূলধন কর এবং উপহার পাওয়া সুবিধা বা বিদেশী কর্মকা-ে অর্থ প্রদান কি আয়করের অন্তর্ভুক্ত হবে না?’
সম্প্রতি টিউলিপ সিদ্দিকের দুটি ফ্ল্যাট বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তার খালা বাংলাদেশের পতিত সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা ফ্ল্যাট দুটি উপহার দিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এরমধ্যে একটি ফ্ল্যাট লন্ডনের কিংস ক্রসে অবস্থিত। যেটির মূল্য প্রায় ৭ লাখ পাউন্ড। এটি আব্দুল মোতালিফ নামের এক আওয়ামী ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি টিউলিপকে উপহার দিয়েছিলেন। টিউলিপ আরেকটি ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন। যেটি শেখ হাসিনার আরেক ঘনিষ্ঠ টিউলিপের বোনোর নামে উপহার দিয়েছেন। এই ফ্ল্যাটের খবর প্রকাশিত হওয়ায় বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছেন টিউলিপ। যদিও তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এছাড়া এসব সম্পত্তি তার দলের সঙ্গে জড়ানো স্পষ্টতই ভুল বলে দাবি করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, টিউলিপ বৃটেনের ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টির সংসদ সদস্য এবং সিটি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। বর্তমানে, টিউলিপ পূর্ব ফিঞ্চলেতে ২ দশমিক ১ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি বাড়ি ভাড়া নিচ্ছেন যা আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার একজন নির্বাহী সদস্যের মালিকানাধীন বলে জানা গেছে।
চিঠিতে বার্গহার্ট আরও লিখেছেন, ‘টিউলিপের সকল সম্পত্তি তদন্ত করা হোক এবং এর কর পরিশোধ করা হয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হোক। স্যার কিয়ের স্টারমারসহ মন্ত্রীদের কি রাজস্ব বিভাগকে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়ার অনুমতি নেই?’
টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে ১০ নং ডাউনিং স্টিটের নীতিশাস্ত্র উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন, যার কর সংক্রান্ত বিষয়গুলো দেখার ক্ষমতা রয়েছে। টিউলিপের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তীব্রতা এবং দুর্নীতি দমন মন্ত্রী হিসেবে তার মন্ত্রীত্বের ভূমিকার গুরুত্ব বিবেচনা করে, তদন্ত চলাকালীন টিউলিপ কি সরে দাঁড়াবেন না- এমন প্রশ্নও জুড়ে দেয়া হয়েছে চিঠিতে।