নিচু জমি কেনা মাটিতে ভরাট করে সেখানে ইটের গাঁথুনি দিয়ে তৈরি করেছেন দোকান ঘর। এ দোকানটি তার জীবন জীবিকার একমাত্র উৎস। কিন্তু তার এই দোকানের মূল ভিতের দুপাশ থেকে এক্সেভেটর মেশিন(ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে দেওয়া হয়েছে দোকানের সামনে দিয়ে যাওয়া রাস্তায়। ফলে যে কোনো সময় তার দোকানটি ধ্বসে পড়তে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেন। রাস্তাটি নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষকে বারবার নিষেধ করলেও তা তারা মোটেও আমলে নেইনি। এভাবেই ঠিকাদার দ্বারা ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার কথা আক্ষেপের সাথে বলছিলেন উপজেলা ঈশ্বেরবা গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে সহোরাব হোসেন। একই গল্প ওই গ্রামের মৃত ইব্রাহিম হোসেনের স্ত্রী আলিয়া বেগমেরও। হতদরিদ্র বিধবা এই বৃদ্ধার একমাত্র মাথা গোজার টিনের ছাবড়ার ঘরটিও ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে, ঘরের গোড়া থেকে মাটি কেটে রাস্তায় দেওয়ায়। এরকম অনেকের বাড়ির পাশের, কারোর বাড়ির উঠান, বাগান কিংবা ফসলের ক্ষেত থেকে মাটি কেটে দেওয়া হচ্ছে রাস্তার দুই ধারে। সম্প্রতি এমন দৃশ্য চোখে পড়ে উপজেলা এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত কাশিপুর বাজার থেকে বালিয়াডাঙ্গা অভিমুখে রাস্তাটিতে। রুরাল কানেক্টিভ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট এর অধীনে ঠিকাদার মিজানুর রহমান রাস্তাটি নির্মাণে কাজ করছেন। ২৮০০ মিটার দীর্ঘ এ রাস্তাটি নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬৮ টাকা।
অনুমতি ছাড়াই জোরপূর্বক ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে মাটি কেটে ঠিকাদার রাস্তায় দেওয়ায় স্থানীয় মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে মুখে ক্লুপ এটে বসে আছে। রাস্তা নির্মাণে এসব অনিয়ম তারা দেখেও না দেখার ভান করে।এমনকি রাস্তাটির কাজ চলমান থাকলেও সেখানে মানুষের ক্ষতি করে এভাবে অন্যের জমির মাটি কেটে রাস্তায় দেওয়ার ব্যাপারে ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুমের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি। উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী এমদাদুল হকের নিকট ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে মাটি কেটে রাস্তার দুপাশে দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারোর ক্ষতি করে রাস্তার কাজ করা যাবে না। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে মাটি কাটতে হলে তার অনুমতি নিতে হবে। অন্যথায় অনুমতি না মিললে বাইরে থেকে মাটি কিনে এনে রাস্তার দুপাশে দিতে হবে। উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আহসান হাবিব এ ব্যাপারে বলেন, এমটি হওয়ার কথা নয়। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।