করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে সারাদেশের চা বাগানগুলোতে সাধারণ ছুটির দাবীতে সারাদেশের ন্যায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ২৩টি চা বাগানের শ্রমিকরা সামাজিক নিরাপত্তা বজায় রেখে মানববন্ধন করেছে। চা শ্রমিকদের প্রতি একটু মানবিক হয়ে তাদের জীবন রক্ষায় অবিলম্বে চা বাগানে সাধারণ ছুটি ঘোষণার দাবিতে শনিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৯টায় কমলগঞ্জের ২৩ টি চা বাগানে একযোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনয়িনের কেন্দ্রীয় কমিটির জরুরী সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধকালে সাধারণ ছুটির দাবিতে শনিবার (১১ এপ্রিল) সকাল ৯টায় এক যোগে দেশের ২৩০টি চা বাগানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় শমশেরনগর চা বাগান কারখানার প্রধান ফটকের সামনে চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি নিপেন্দ্র বাউরীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসিবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রাম ভজন কৈরী। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলাই ভ্যালির কার্যকরী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা, চা শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন, মোহন রবিদাস ও চা বাগান কর্মচারী পরিষদের আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি তানভীর হাসান। সকাল ৯টায় মিরতিংগা চাবাগানের কারখানার প্রধান ফটকের সামনে পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মন্টু অলমিকের সভাপতিত্বে মাসুদ রানার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসিবে উপস্থিত ছিলেন মনু-দলই সবাপতি বাবু ধনা বাউরী , অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্বা কুল চন্দ্র তাতী, ইউপি সদস্য সেলিম আহমদ চৌধুরী, নওশাদ আহমদ প্রমুখ।
সকাল ৯টায় দেওরাছড়া চাবাগান কারখানার সামনে মানববন্বন অনুষ্টিত হয়। উপস্তিত ছিলেন ইউপি সদস্য সিতাংশু কর্মকার, পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সুবোধ কুর্মিসহ অন্যান্য নের্তবৃন্দ। সকাল সাড়ে ৯টায় আলীনগর চা বাগান কারখানার প্রধান ফটকের সামনে চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি গনেশ পাত্রের সভাপতিত্বে ও চা ছাত্র যুব পরিষদ নেতা সজল কৈরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসিবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রাম ভজন কৈরী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চা বাগান কর্মচারী ইউনিয়ন আলীনগর ইউনিটের সদস্য দীপক বাড়ই, মাসিক চা মজদুর সম্পাদক সীতারাম বীন প্রমুখ। একই সময়ে চাতলাপুর চা বাগান, মাধবপুর, ফুলবাড়ি, মৃর্ত্তিঙ্গা, পাত্রখোলা, ধলই, মদনমোহনপুর, কুরমা, চাম্পারায়সহ ফাঁড়ি ও মূল বাগান মিলিয়ে কমলগঞ্জে মোট ২৩ টি চা বাগানে একযোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিযনের কেন্দ্রীয় কার্যকরি কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী তার বক্তব্যে বলেন, চা বাগান এলাকা অনেকটা অসচেতন। এখানকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুবই নাজুক। তারা মনে করেন চা বাগান মারিক পক্ষের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদের কর্ত ব্যক্তিরা প্রধানমন্ত্রীকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে চা বাগানের সাধারণ ছুটি বন্ধ রেখেছেন। চা বাগানে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হলে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতদিন অপেক্ষার পর ৭ এপ্রিলের জরুরী সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার সারাদেশের ২৩০টি চা বাগানে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে চা শ্রমিকরা। মানববন্ধন শেষে চা বাগানে সাধারণ ছুটির দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রেরণ করে। সাথে সাথে আবার বৈঠক করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এমআইপি/প্রিন্স/খবরপত্র