ইরান বিশ্বের একমাত্র দেশ যে দেশের অর্থনীতি ইসলামের বুনিয়াদের ওপর প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বময় দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ইসলামী ব্যাংকিং সম্পর্কে ইসলামবিরোধী বুদ্ধিজীবীদের যেমন সমালোচনা রয়েছে তেমনি আলেম-ওলামাদের একটি অংশও বর্তমান ইসলামী ব্যাংকিং পদ্ধতিকে সত্যিকার ইসলামী বলতে নারাজ। তাদের বক্তব্য হলো, বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের নামে যা হচ্ছে তা সুদভিত্তিক পশ্চিমা পুঁজিবাদী ব্যাংকিং কাঠামোয় ইসলামী শরিয়ার প্রলেপ মাত্র। তাদের মতে, ওই ব্যাংক ব্যবস্থাকেই কেবল ইসলামী ব্যাংক ব্যবস্থা বলা যেতে পারে যার উৎস ও ভিত্তি হবে একান্তভাবেই কুরআন ও সুন্নাহ, আর কিছু নয়। তাদের বক্তব্যে কোনো ভ্রান্তি নেই। কিন্তু সেটা সম্ভব কেবল একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী অর্থব্যবস্থায়। পুঁজিবাদী বা মিশ্র অর্থব্যবস্থায় শতভাগ শরিয়াহসম্মত ব্যাংকিং সেবা আশা করা যায় না।
এ অর্থে ইরানের ব্যাংক ব্যবস্থা ইসলামী শরিয়াহর সবচেয়ে বেশি কাছাকাছি। কিন্তু ‘আকিদার প্রশ্ন থাকায় ইসলামী বিশ্বে, বিশেষ করে আমাদের বাঙালি মুসলিম সমাজে, ইরানের ব্যাংকিং সৌন্দর্য অজানাই রয়ে গেছে। অথচ ইরানের ইসলামী ব্যাংকিং পদ্ধতি চর্চা করে আমরা লাভবান হতে পারি। এই চিন্তা থেকেই বর্তমান নিবন্ধটির অবতারণা। নিম্নে সম্পূর্ণ সুদমুক্ত ইরানি ব্যাংক ব্যবস্থার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরা হলো-
ক. আমানত গ্রহণ পদ্ধতি : সুদমুক্ত ব্যাংকিং আইন-১৯৮৩ অনুযায়ী ইরানি ব্যাংকগুলো দুই পদ্ধতিতে জনগণের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করে। যেমন-
কর্র্জে হাসানা আমানত : ইরানে চলতি হিসাব ও স য়ী হিসাবের মাধ্যমে গৃহীত আমানত কর্জে হাসানা ডিপোজিট হিসেবে বিবেচিত হয়। এসব আমানতের ওপর মুনাফা দেয়া হয় না। মুনাফার পরিবর্তে এসব হিসাবের গ্রাহকরা পেয়ে থাকেন অনির্ধারিত উপঢৌকন ও ক্যাশ প্রণোদনা এবং অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করলে পেয়ে থাকেন কমিশন বা ফি রেয়াত।
মেয়াদি বিনিয়োগ আমানত : ইরানের বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ দুই প্রকারে মেয়াদি বিনিয়োগ আমানত গ্রহণ করে থাকে: স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি। স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগ আমানত গ্রহণ করা হয় সর্বনিম্ন তিন মাস মেয়াদ ও দুই হাজার টাকায়; দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ আমানত হিসাব খোলা হয় সর্বনি¤œ ৫০ হাজার টাকায়Ñ এক বছরের জন্য। আইনের বিধান অনুযায়ী ব্যাংক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তার নিজের তহবিল ও কর্জে হাসানা ডিপোজিটের ওপর মেয়াদি বিনিয়োগ আমানতকে প্রাধান্য দেয়। তবে মেয়াদি বিনিয়োগ আমানতের সাথে একই প্রকল্পে ব্যাংক নিজের তহবিল ও কর্জে হাসানা আমানতও বিনিয়োগ করতে পারে। তাতে কোনো মুনাফা হলে সব পক্ষ তা ভাগ করে নেয়। আবার ব্যাংক কোনো প্রকল্পে শুধু আমানতকারীদের টাকা বিনিয়োগ করে নিজে ট্রাস্টি হিসেবেও কাজ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে মুনাফা ও মূলধনী আয় সবই পান আমানত গ্রাহকরা। ব্যাংক পায় কমিশন। ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল ও গ্রাহকের আমানত যৌথভাবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গ্রাহককে প্রদেয় মুনাফা হিসাব করা হয় তাদের মূল অঙ্ক থেকে প্রয়োজনীয় রিজার্ভ (সিআরআর/এসএলআর) বাদ দিয়ে যা থাকে তার অনুপাতে।
খ. বিনিয়োগ পদ্ধতি : সুদমুক্ত ব্যাংকিং আইন-১৯৮৩ অনুযায়ী, ইরানি ব্যাংক ব্যবস্থায় তহবিল বিনিয়োগের প্রধান পদ্ধতিগুলো নিম্নরূপ-
মুশারাকা বিনিয়োগ পদ্ধতি : ইরানে দুই ধরনের মুশারাকা বিনিয়োগ পদ্ধতি চালু রয়েছে। একটি হলো সিভিল মুশারাকা; অন্যটি লিগ্যাল মুশারাকা। সিভিল মুশারাকা হলো বাণিজ্যিক উৎপাদন বা বাণিজ্যিক সেবা কার্যক্রমে স্বল্পমেয়াদি ও নির্দিষ্ট প্রকল্পে অংশীদারিত্ব। এখানে প্রত্যেক অংশীদার প্রয়োজনীয় মূলধন জোগানে অংশ নেয়। প্রকল্পটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত এর সম্পদ ও সম্পত্তিগুলো সমষ্টির সম্পত্তি হিসাবে পরিগণিত হয়।
লিগ্যাল মুশারাকা হলো- নির্দিষ্ট প্রকল্পে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব। এটি কোনো নতুন প্রকল্প হতে পারে; অথবা বিদ্যমান কোনো প্রকল্পও কিনে নেয়া যেতে পারে। ব্যাংক এখানে মোট ইকুইটির একটি অংশ সরবরাহ করে থাকে। ব্যাংকগুলো সাধারণত প্রকল্পের কারিগরি, অর্থনৈতিক ও আর্থিক সম্ভাবনা যাচাই শেষে ন্যূনতম মুনাফা অর্জন নিশ্চিত হওয়ার পরই তাতে অংশগ্রহণ করে থাকে। ব্যাংক মারকাজিই ঠিক করে দেয় এ ধরনের প্রকল্পে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ কত টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবে এবং অন্যান্য অংশীদারের ন্যূনতম অংশীদারিত্ব কত হবে।
মুদারাবা বিনিয়োগ পদ্ধতি : মুদারাবা হলো সুনির্দিষ্ট বাণিজ্যিক প্রকল্পে চুক্তিভিত্তিক স্বল্পমেয়াদি অংশীদারি কারবার। এখানে একপক্ষ হলো ব্যাংক; অন্যপক্ষ উদ্যোক্তা প্রতিনিধি। এখানে ফাইন্যান্সিয়াল ক্যাপিটাল সরবরাহ করে ব্যাংক; ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেন উদ্যোক্তা। মুদারাবা কার্যক্রমে সমবায় সমিতিগুলোকে অগ্রাধিকার দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। প্রাইভেট সেক্টরের আমদানি অর্থায়নে মুদারাবা পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করা নিষেধ।
সালাফ বা সালাম বিনিয়োগ পদ্ধতি : কৃষিখামার বা শিল্প-কারখানার কার্যকরী মূলধন জোগানোর নিমিত্তে ব্যাংক ওই খামার বা কারখানার ভবিষ্যৎ উৎপাদিতব্য পণ্য সালাফ বা সালাম বিনিয়োগ পদ্ধতিতে অগ্রিম ক্রয় করে নেয়। এই অগ্রিম ক্রয়-বিক্রয় হালাল হওয়ার জন্য কতগুলো শর্ত কঠোরভাবে পরিপালন করতে হয়। যেমনÑ
ক. সালাম চুক্তি স্বাক্ষরকালেই পণ্যের বর্ণনা সুস্পষ্ট করে নিতে হয়; খ. লেনদেনকালে ওই পণ্যের যে বাজার দর থাকবে সে দরের অতিরিক্ত হতে পারবে না সালাফ পণ্যের মূল্য; গ. পণ্যের কার্যকর দখল বুঝে পাওয়ার আগে ব্যাংক সালাফ পণ্য বিক্রি করতে পারবে না; এবং ঘ. ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিতে নির্ধারিতব্য সরবরাহ তারিখ এক উৎপাদনচক্র বা এক বছর অতিক্রম করতে পারবে না। পণ্য উৎপাদন মৌসুমও এক বছর- এ দুটোর যেটি আগে আসবে সেই তারিখের মধ্যে সালাফ পণ্য সরবরাহ করতে হবে। কিস্তিভিত্তিক ক্রয়-বিক্রয় পদ্ধতি : বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ কৃষিখামার ও শিল্প-কারখানার জন্য কাঁচামাল এবং হালকা ও ভারী যন্ত্রপাতি ক্রয় করে তা ওইসব কারখানায় বিক্রয় করে থাকে। এ ধরনের বিনিয়োগের শর্তাবলি হলো-
ক. কাঁচামালের পরিমাণ একটা উৎপাদন চক্রের জন্য যা প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি হতে পারবে না; খ. কাঁচামালের ক্ষেত্রে ব্যাংকের বিনিয়োগ পরিশোধের সময়কাল এক বছরের বেশি হতে পারবে না; গ. পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করতে হবে কস্ট-প্লাস ভিত্তিতে; ঘ. যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে ব্যাংকের বিনিয়োগ পরিশোধের সময়কাল ওইসব যন্ত্রপাতির ব্যবহারিক জীবনের চেয়ে বেশি হবে না; গণনা শুরু হবে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় তার ব্যবহার শুরুর তারিখ থেকে। যন্ত্রপাতির ব্যবহারিক জীবনকাল নির্ধারণ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ঙ. আবাসিক গৃহায়ন প্রকল্পেও ব্যাংক কিস্তিভিত্তিক বিনিয়োগ প্রদান করে থাকে।
ভাড়া-ক্রয়ভিত্তিক বিনিয়োগ পদ্ধতি : ইরানি ব্যাংকগুলো শিল্পের যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রয় করে শিল্প-কারখানায় ভাড়া দিয়ে থাকে। শর্ত হলো- ক. চুক্তির সময় সংশ্লিষ্ট শিল্প-কারখানাকে এ মর্মে অঙ্গীকার করতে হবে যে, সে চুক্তির মেয়াদ শেষে ওই প্রপার্টি কিনে নেবে; খ. এই লেনদেনের সময়কাল ওইসব যন্ত্রপাতির ব্যবহারিক জীবনের চেয়ে বেশি হবে না; গ. যেসব যন্ত্রপাতির দুই বছরের কম সেসব যন্ত্রপাতির জন্য এ প্রকার বিনিয়োগ প্রযোজ্য হবে না।
জুআলা (কমিশনভিত্তিক) বিনিয়োগ পদ্ধতি : এই পদ্ধতিতে ব্যাংক গ্রাহকের প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে। বিনিময়ে কমিশন বা ফি আদায় করে। প্রদত্ত সেবার জন্য কী পরিমাণ কমিশন বা ফি আদায় করা হবে তা চুক্তি স্বাক্ষরকালেই নির্ধারণ করে নিতে হয়।
মুজারাআ (ফসলের জমি বর্গাচাষ) বিনিয়োগ পদ্ধতি : ইরানের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের মালিকানাধীন বা দখলে থাকা জমি চাষাবাদের জন্য কৃষকদের দিতে পারে। সেটা করতে হয় একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য। জমি থেকে যে ফসল উৎপাদিত হবে তার কত ভাগ কে পাবে তা চুক্তিকালেই ঠিক করে নিতে হয়। এ ধরনের চাষাবাদে ব্যাংক প্রয়োজনে বীজ ও সার সরবরাহ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে উৎপাদিত ফসলে ব্যাংকের শেয়ার বেশি হয়ে থাকে। মুজারাআ চুক্তির বিষয়বস্তু হলো শস্য ও ফসল।
মুসাকাত (বাগান বর্গাচাষ) বিনিয়োগ পদ্ধতি : বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেদের মালিকানায় বা দখলে থাকা ফলের বাগান বা গাছ-গাছালি সেচ ও পরিচর্যার জন্য কৃষক বা মালিদের দিতে পারে। সেটা করতে হয় একটা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য। বাগান বা গাছ-গাছালি থেকে যে ফল বা ফসল উৎপাদিত হয় তার কত অংশ কে পাবে তা আগেই চুক্তি মারফত ঠিক করে নিতে হয়। মুসাকাত চুক্তির বিষয়বস্তু হলো গাছ।
কর্জে হাসানা বিনিয়োগ পদ্ধতি: কর্জে হাসানা দেয়ার জন্য ইরানের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের সম্পদের একটা অংশ বরাদ্দ রাখতে বাধ্য। কর্জে হাসানা বা কল্যাণ-ঋণের হকদার হলো ক্ষুদ্র উৎপাদনকারী, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও প্রান্তিক কৃষক, যাদের পক্ষে বিকল্প অর্থায়ন বা কার্যকরী মূলধন জোগাড় করা সম্ভব নয়। ছোট ছোট ব্যবসায়ী ও কৃষক ছাড়াও গরিব ভোক্তারা কর্জে হাসানা পেয়ে থাকেন। কর্জে হাসানা ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে ব্যাংক শুধু তার প্রশাসনিক খরচ উসুল করে থাকে।
সরাসরি বিনিয়োগ: ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেকোনো আর্থিক কারবারে সরাসরি বিনিয়োগ করতে পারে। সরাসরি বিনিয়োগে অংশগ্রহণের জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে কতগুলো শর্ত মেনে চলতে হয়। যেমন- ক. বিলাসদ্রব্য ও অপ্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদন করার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত কোনো প্রকল্পে অংশগ্রহণ করা যাবে না; খ. প্রকল্পের প্রাথমিক তহবিল মোট প্রয়োজনীয় তহবিলের ৪০ শতাংশের কম হতে পারবে না; গ. প্রকল্পের পুরো ফিক্সড ক্যাপিটাল আসতে হবে দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সম্পদ থেকে; ঘ. কোনো প্রকল্পে সরাসরি বিনিয়োগ করার আগে প্রকল্পটি ভালোভাবে মূল্যায়ন ও যাচাই করতে হবে। এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত ন্যূনতম মুনাফা অর্জন নিশ্চিত হতে হবে; ঙ. প্রকল্পে ব্যাংক নিজের তহবিল কত ও ডিপোজিটরের তহবিল কত বিনিয়োগ করেছে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে হবে; চ. বিনিয়োগকৃত প্রকল্পটি উৎপাদন শুরু করার পর ব্যাংক তার শেয়ার জনগণের কাছে বিক্রি করে দিতে পারবে এবং ছ. বাণিজ্যিক ব্যাংক কর্তৃক সরাসরি বিনিয়োগকৃত প্রকল্পগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক অডিট করতে পারবে।
এ ছাড়া ইরানের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এক বছরেরও কম সময়ে মেয়াদ পূর্ণ করবে এমন ডেট ইনস্ট্রুমেন্টগুলো ক্রয় করতে পারে। শর্ত হলোÑ ডেট ইনস্ট্রুমেন্টটি বাস্তব সম্পদের বিপরীতে ইস্যুকৃত হতে হবে।
ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ব্যাংক মারকাজি’র কর্তৃত্ব : ক. বিভিন্ন প্রকার ব্যাংক আমানতের বিপরীতে বিধিবদ্ধ সি তি সংরক্ষণ; খ. মুদারাবা ও মুশারাকা কারবারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ কত ভাগ মুনাফা নিতে পারবে তা নির্ধারণ; গ. ট্রাস্টি হিসাবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেসব বিনিয়োগ হিসাব পরিচালনা করে তার ওপর সে সর্বোচ্চ কত পার্সেন্ট কমিশন আদায় করতে পারবে তা নির্ধারণ ইত্যাদি।
ইরানের নয়া আর্থিক নীতি : ক. ন্যূনতম অনুমিত মুনাফা হার : অনুমিত মুনাফা হলো কোনো ব্যাংকিং অপারেশন হতে উদ্ভূত ভবিষ্যৎ নিট ইনকাম। এটা হলো কোনো প্রকল্পে ব্যাংক বিনিয়োগ করবে কি করবে না তার মানদণ্ড। কোনো বিনিয়োগ প্রস্তাব পর্যালোচনা করে যদি তার সম্ভাব্য মুনাফার হার এমএআরআরের সমান বা বেশি পাওয়া যায় তবেই সেই প্রকল্পে ব্যাংক বিনিয়োগ করতে পারবে- অন্যথায় নয়।
খ. সর্বোচ্চ মুনাফা হার : আর্থিক নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষই ঠিক করে দেয় সর্বোচ্চ মুনাফা হার। ইরানের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গ্রাহকের কাছে কোনো এসেট বা পণ্য বিক্রি করে তার মূল্যের ওপর কত পার্সেন্ট লাভ করবে তা নির্ধারণ করে দেয় এই এমআরপি।
লেখক : সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার, পূবালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংকিং