বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে বর্তমানে যে নির্বাচনগুলো হচ্ছে সেগুলো আইওয়াস নির্বাচন। শেখ হাসিনা নিজেকে গণতন্ত্রী দাবী করার জন্য নির্বাচন নামের তামাশা করছে। নির্বাচনের ফলাফল শেখ হাসিনার বাসায় আগেই ঠিক করা থাকে, নির্বাচনের দিন রাতে তিনি এটা প্রচার করেন। গতকাল রোববার সকালে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার নাগের হাট এলাকায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপি এ কম্বল বিতরনের আয়োজন করে।
সরকার একটি রক্তপাতের বাংলাদেশ তৈরী করে রেখেছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, দেশে গনতন্ত্র নেই, ভোট উৎসব নেই, কথা বলার অধিকার নেই। কেউ কথা বললেই গুম হয়ে যাচ্ছে অথবা খালের ধারে তার লাশ পাওয়া যাচ্ছে। মানুষ এখন নির্বাক হয়ে গেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে শেখ হাসিনার অনুগত চাকর উল্লেখ করে রিজভী বলেন, তার কাছে সুষ্ঠু নির্বাচন বড় কথা নয়, চাকুরীই বড়। সম্প্রতী সিরাজগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির নির্বাচিত কাউন্সিলর তরিকুল ইসলাম হত্যাকান্ডের ঘটনার তিব্র নিন্দা জানিয়ে রিজভি বলেন, বিরোধী দলের রক্তের ঘ্রাণ ও সাদ শেখ হাসিনার সবচেয়ে প্রিয়। তাই বিরোধী শক্তির কেউ মাথা চাড়া দিলেই সেই মাথা কেটে দিচ্ছে সরকার।
বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি উত্তম কুমার সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, রংপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রইচ আহমেদ, সহ-সভাপতি কাজী খয়রাত, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিজু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, রংপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি এডভোকেট মাহফুজ নবী ডন, বদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন শাহান, বদরগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন কবির মানিক, সাধারণ সম্পাদক কমল লোহানী, রংপুর মহানগর যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক আতিকুল ইসলাম লেলিন। পরে ১ হাজার শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। কুড়িগ্রাম: জনগণ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিয়ে যে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন সেই পরিস্থিতি প্রধামনন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ থেকে নিরুদ্দেশ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দেশব্যাপী চলমান পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশি তা-বের’ প্রতিবাদে শনিবার কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কিছু কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় দিনের ভোট রাতে নেয়ার জন্য। বর্তমান পরিস্থিতিতে বংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা মুমূর্ষু অবস্থায় পরিণত হয়েছে। নির্বাচন হয় ঠিকই, তফসিল হয় ঠিকই, কিন্তু কে জিতবেন তা নির্ধারণ হয় প্রধানমন্ত্রীর বাসা থেকে। সেখান থেকে যে তালিকা হয় সে তালিকা সিইসি কেএম নূরুল হুদা প্রকাশ করেন,’ বলেন তিনি। সুষ্ঠু ভোট ও জনগণ ভোট দিয়ে যে তার প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন সেই পরিস্থিতি এখন বাংলাদেশ থেকে নিরুদ্দেশ করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা এবং নির্বাচন কমিশন, দাবি করেন রিজভী। বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, আজ অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফা পৌরসভা নির্বাচনের অধিকাংশ জায়গায় সরকারি দল ও প্রশাসন যৌথভাবে বিএনপি নেতা-কর্মীদের হয়রানি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ভোটকেন্দ্র থেকে ধানের শীষের পক্ষের এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীদের কোথাও দাঁড়াতে দেয়া হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘উদ্বেগজনক তথ্য হলো কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ার চর পৌরসভার সব কেন্দ্র দুপুর ১২টার মধ্যে দখল করে নিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। এই হলো বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ব্যবস্থা।’ কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সৈয়দ শামসুল হক মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান, শফিকুল ইসলাম বেবু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।