বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০৮ অপরাহ্ন

আমাদেরকে অপরাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে -আবদুল কাদের মির্জা

সিরাজ উল্যাহ কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২১

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আগামীতে কোম্পানীগঞ্জের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনসহ সকল নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। তিনি নিজের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, কোম্পানীগঞ্জে মাস্তানী চলবে না, মারামারি, হানাহানি চলবে না, সাবধান করে দিচ্ছি কোন অস্ত্রবাজি চলবে না, কোন প্রকার অনিয়ম বরদাশত করা হবে না। বসুরহাট বাজারের ১৫-২০টা ব্যবসায়ী সংগঠন আছে, সে সংগঠনের নেতা নির্বাচিত হবে ভোটের মাধ্যমে। আগের মত ওমুককে সভাপতি, তমুককে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সিলেকশন করা হবে না। আমি মন্ত্রী মহোদয়কে বলতেছি, চরবালুয়া থেকে স্বন্দ্বীপ পর্যন্ত ক্রস ড্যাম নির্মাণ করতে হবে, এটার কোন বিকল্প নেই। এটা না হলে আমাদের কোম্পানীগঞ্জে বড় একটা অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। স্বন্দ্বীপ থেকে ভূমিদস্যুরা এসে আমাদের হাজার হাজার একর জমি দখল করে নিচ্ছে, মাননীয় মন্ত্রীর নিকট দাবী করব যে, সেখানে ভূমি দস্যুদের বিতাড়িত করে ভূমিহীন ও অসহায়দেরকে ভূমি দিতে হবে। কাদের মির্জা বলেন, সমবেত ভাইয়েরা আমি আপনাদেরকে নির্বাচনে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা রক্ষা করব, সময়ে প্রমাণ করে দিব, আজকে আমাদের দাবী হচ্ছে গ্যাস, এ গ্যাস বসুরহাট পৌরসভাসহ কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট উপজেলায় দিতে হবে, আমাদের ছেলে-মেয়েদের চাকুরীর ব্যবস্থা করতে হবে, ছেলে-মেয়েরা অসামাজিক কাজে লিপ্ত হচ্ছে, হতাশ হচ্ছে। কোম্পানীগঞ্জে ৫০০জন ও কবিরহাট উপজেলায় ৫০০জনকে চাকুরী দিতে হবে। তবে সরকারী চাকুরী মেধার ভিত্তিতে হবে, সে চাকুরী আমার নেত্রী দিবে। তিনি বলেন, আমি গতকাল আমার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরী ও মোশাররফ হোসাইন এর সাথে দেখা করেছি। ওনারা আমাকে কোম্পানীগঞ্জে সকল বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। আমি আজ এ সমাবেশ থেকে তাদের দুইজনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি অনুরোধ করব আমাদেরকে অপরাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তাদেরকে বলেছি তাদের দলের যাদের কাছে অস্ত্র আছে তা পানিতে ফেলে দিতে। তিনি সোমবার বেলা ১১টায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌর মিলনায়তনে ভোটারদের সাথে নির্বাচনোত্তর কুশল বিনিময়কালে এসব কথা বলেন। কুশল বিনিময়কালে ভোটারদেরকে ফুলের পাঁপড়ি ছিঁটিয়ে অভিবাদন জানান। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানের সভাপতিত্বে ও চরপার্বতী ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম তানভীরের সঞ্চালনায় কুশল বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহাব উদ্দিন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সাম্পাদক নূর নবী চৌধুরী, শিল্পপতি বাবু অরবিন্দ ভৌমিক, আ’লীগ নেতা ও শিল্পপতি গোলাম শরিফ চৌধুরী পিপুল, আ’লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ইস্কান্দার মির্জা শামীম, বসুরহাট পৌরসভা আ’লীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আজম পাশা চৌধুরী রুমেল প্রমুখ। কাদের মির্জা আরও বলেন, আমাদের নেতা সাহাব উদ্দিন সাহেব, আ’লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমাকে বিপুল ভোটে জয় করার জন্য এবং এখানে উপস্থিত হওয়ার জন্য। আমি পরম করুণাময়ের নিকট শুকরিয়া আদায় করছি। আমি দেখেছি কোম্পানীগঞ্জে গাংছিল থেকে মেহেরুন নেছা পর্যন্ত, মিরের পুল থেকে মুছাপুরের গুচ্ছগ্রাম পর্যন্ত আমার দলের ইউনি চেয়ারম্যান, মেম্বার, আ’লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা বসুরহাট পৌরসভায় এসে আমার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে হাত পা ধরে আমার জন্য ভোট চেয়েছেন। আমি যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন তাদেরকে স্মরণ করব। আমার পৌরসভার বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা, পেশাজীবি সংগঠন, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আমার জন্য ভোট করেছেন, আমি তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। আপনারা আপনাদের প্রার্থীকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয় করিয়েছেন, এ বিজয় বাংলাদেশে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে, এ বিজয় জনগণের বিজয়, এ বিজয় পৌরবাসির বিজয়, এ বিজয় বঙ্গবন্ধুর আর্দশের একটি অসাম্প্রদায়িক সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বিজয়, এ বিজয় জননেত্রী শেখহাসিনার উন্নয়নের বিজয়, এ বিজয় ওবায়দুল কাদেরের বিজয়। আমি এ বিজয় আমার পৌরবাসী এবং বাংলাদেশ আ’লীগে বিভিন্ন পর্যায়ে ছড়িয়ে ছিঁড়িয়ে থাকা ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসর্গ করে দিলাম। তিনি আরও বলেন, আজ থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সকল দল তাদের দলীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারবেন। আমাদের নেতা উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ শাহাব উদ্দিনকে দায়িত্ব দিয়েছি কোম্পানীগঞ্জের সকল রাজনৈতিক দলকে ডেকে এনে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু করার। আ’লীগ ক্ষমতায় আসলে বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়, তারা এলাকা ছাড়া হয়, বিএনপি জামায়াত ক্ষমতায় আসলে আ’লীগের বিরুদ্ধে মামলা হয়, তারা এলাকা ছাড়া হয়, এ সংস্কৃতি থেকে আমদেরকে বের হয়ে আসতে হবে। তিনি উপস্থিত এক মসজিদের ইমামকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনি যে দল করেন কোন সমস্যা নাই, কিন্তু মসজিদের মিম্বরে বসে বঙ্গবন্ধুর বিরোধীতা করবেন না, শহীদ মিনারের বিরোধীতা করবেন না, তিনি নোয়াখালীর এমপি একরাম চৌধুরীর দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, নোয়াখালীর কিছু এমপিরা মদের সাথে জড়িত, নারীর সাথে জড়িত, জুয়ার সাথে জড়িত। আমার বোনেরাও মদের সাথে জড়িত। একরাম চাকুরী বাণিজ্য করে, টেন্ডার বাণিজ্য করে, সরকারী কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণ করে এবং নানা অনিয়মের সাথে সে জড়িত। পুলিশ প্রশাসন তাদেরকে এসব অপকর্মের সহযোগিতা করেন। আমি দেখেছি একজন এসপি নোয়াখালীর আ’লীগ অফিসে গিয়ে এমপিকে পাহারা দেয়, সেখানে যাবে ছোট ছোট অফিসার, দারোগা, একজন এসপি কি করে সেখানে যায়? এগুলো করলে এদের ওপর থেকে জনগণের আস্থা উড়ে যাবে। একরাম চৌধুরী প্রতিপক্ষ একজন সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী আমাকে ফোন করে ধন্যবাদ জানায়। তিনি বিভিন্ন দল করে এখন আ’লীগে এসেছেন। ঋণ খেলাপীর কারণে এমপি প্রার্থী হতে পারেন নাই, নিজের স্ত্রীকে এমপি বানিয়েছেন। আমি মরে গেলে আমার ছেলে এমপি হবে, স্ত্রী এমপি হবে, এ সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে, তবে কারো যোগ্যতা থাকলে সে এমপি হতে পারে। আমি আজকে এ সমাবেশ থেকে সেতুমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি আপনি মাহমুদুর রহমান বেলায়েত ও খাইরুল আলম সেলিমকে দিয়ে নোয়াখালীতে কমিটি গঠন করেন। প্রধানমন্ত্রী ও তাদেরকে ভালো জানেন। তাদের দিয়ে কমিটি ঘোষণা করেন, যোগ্য নেতাদের ও ত্যাগী নেতাদেরকে দলের টানুন, শয়তানি করবেন না, দলটাকে ধ্বংস করবেন না, ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না হলে মানুষের মণি কোঠায় আপনি নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনা পারেন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করতে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com