বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

বাইডেনের ১০০ দিনের কর্ম পরিকল্পনা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২১

‘নিউক্লিয়ার ফুটবল’ সঙ্গে নিয়ে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজ ত্যাগ 

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সর্বশেষ খবরে জানা যায়, বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় হোয়াইট হাউজ ছাড়তে পারেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজ ছেড়ে তিনি উঠবেন ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো’তে। সাধারণত, নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেয়ার পর সদ্যবিদায়ী প্রেসিডেন্ট বিদায় নিয়ে থাকেন। বাংলাদেশের স্থানীয় সময় (গতকাল বুধবার) রাত ১১টার দিকে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেনের শপথ নেয়ার কথা। কিন্তু তার প্রায় ৪ ঘন্টা আগে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজ ছেড়ে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কারণ, তিনি সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন পারমাণবিক কোড। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘নিউক্লিয়ার ফুটবল’। তিনি এই ফুটবল সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন ফ্লোরিডায়।
সাধারণত এই ফুটবলটি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট নতুন প্রেসিডেন্টের কাছে দুপুরে হস্তান্তর করেন। এ সময়ে সদ্যবিদায়ী প্রেসিডেন্টের নিউক্লিয়ার কোড নিষ্ক্রিয় করে দেয়া হয়। নতুন প্রেসিডেন্টের হাতে যে নিউক্লিয়ার ফুটবল দেয়া হয়, তার কোড সক্রিয় করে দেয়া হয়। এটি বিশেষ একটি ফুটবল। এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট যেসব নির্দেশ ব্যবহার করে থাকেন তার সরঞ্জাম এবং কোথাও পারমাণবিক হামলা চালানোর সরঞ্জাম সংরক্ষিত থাকে। ফলে যতক্ষণ এই নিউক্লিয়ার ফুটবলের কোড নিষ্ক্রিয় করা না হচ্ছে, তা নিয়ে ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ থেকে বেরিয়ে গেলে কি ঘটতে পারে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে। এ ছাড়া তিনি নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্দেশে কোনো চিঠি রেখে যাবেন কিনা হোয়াইট হাউজে, তাও স্পষ্ট নয়। ১৮৬৯ সালের পর তিনিই হবেন নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত সদ্যবিদায়ী প্রেসিডেন্ট।
সিএনএনের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন বুলেটিন অব দ্য এটমিক সায়েন্টিস্টের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো স্টিফেন শওয়ার্টজ। তিনি বলেছেন, পারমাণবিক ফুটবল ইস্যুতে আরো বেশি কাজ করা উচিত ছিল এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীদের। তিনি আরো বলেছেন, একই রকম কমপক্ষে তিন থেকে চারটি ফুটবল আছে। এর একটি থাকে প্রেসিডেন্টের কাছে। একটি থাকে ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছে। শপথ অনুষ্ঠানে এবং স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাছে। ২০ শে জানুয়ারি একটি ফুটবল চলে যাবে শহরের বাইরে। এর ফলে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের ব্রিফিকেসে শুধু একটি ফুটবল থাকবে। ফলে বাইডেনের জন্য অন্য একটি ব্যাকআপ রাখতে হবে।
এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সব সময় বহন করেন একটি প্লাস্টিক কার্ড। এটি বিস্কুট বলে পরিচিত। এতে এমনসব কোড আছে, তা দিয়ে প্রেসিডেন্টকে শনাক্ত করা যায় এবং প্রেসিডেন্টই পারমাণবিক অস্ত্র সক্রিয় করার একমাত্র অনুমোদিত ব্যক্তি। জো বাইডেন শপথ না নেয়া পর্যন্ত পারমাণবিক হামলার কর্তৃত্ব যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ট্রাম্পকে দিয়েছে। এদিন স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা) ডিএকটিভেটেড বা নিষ্ক্রিয় করে ফেলার কথা। সঙ্গে সঙ্গে বাইডেনের বিস্কুট সক্রিয় হয়ে যাবে। ট্রাম্পের নিউক্লিয়ার ফুটবলসহ তার ব্রিফকেসের ওজন হবে ৪৫ পাউন্ড। এটি বহন করবেন তার এক সহযোগী। দুপুরে যখন ওই নিউক্লিয়ার ফুটবল নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে তখন তিনি সহযোগীর মাধ্যমে ফ্লোরিডা থেকে এটি পাঠিয়ে দেবেন ওয়াশিংটন ডিসি’তে।
আগেই বলা হয়েছে, ১৮৬৯ সালের পর প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে থাকবেন না ট্রাম্প। এই অনুষ্ঠানে বিদায়ী প্রেসিডেন্টের উপস্থিত থাকা মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী বাধ্যতামূলক নয়। এর আগে শপথ অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন সাবেক ও দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট জন এডামস, ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট জন কুইনসি এডামস এবং ১৭তম প্রেসিডেন্ট অ্যানড্রু জনসন। এর পর ট্রাম্প যোগ দিচ্ছেন তাদের দলে। তিনি হবেন এমন চতুর্থ প্রেসিডেন্ট। এখানে উল্লেখ্য, এই চার প্রেসিডেন্টই এক মেয়াদের ক্ষমতায় ছিলেন। নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে বিদায়ী প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিকে দেখা হয় যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের স্থিতিশীলতা হিসেবে।যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচেছন দেশটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বুধবার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে শপথ নিবেন তিনি।
প্রায় দুই বছরের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে দায়িত্ব পালনের প্রথম এক শ’ দিনের পরিকল্পনার কথা মার্কিন নাগরিকদের জানিয়ে আসছিলেন তিনি। নির্বাচনী বক্তব্য, সাক্ষাতকার ও প্রকাশিত পরিকল্পনায় বাইডেন তার ক্ষমতায় প্রথম এক শ’ দিনের এই পরিকল্পনার বিষয়ে জানিয়ে আসছেন। এখানে উল্লেখযোগ্য কিছু পরিকল্পনা সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো।
১. কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সরকারি স্থাপনার অভ্যন্তরে ও আন্তঃরাজ্য সফরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা
২. কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার ওপর নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো ৩. শিক্ষার্থীদের ঋণের বকেয়া দানে স্থগিতের আদেশ চলমান রাখা ৪. করোনা সংকট মোকাবেলায় এক দশমিক নয় ট্রিলিয়ন ডলারের কোভিড-১৯ রিলিফ লেজিসলেটিভ প্যাকেজ পরিচালনা ৫. যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরানো ৬. ২০১৭ সালে ট্রাম্পের সাতটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া ৭. মার্কিন অভিবাসন নীতি সংস্কার ও দেশটিতে এক কোটির বেশি অনিবন্ধিত অভিবাসীর নাগরিকত্বের প্রক্রিয়ার জন্য কংগ্রেসে বিল পাঠানো ৮. শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির অর্থনীতি অর্জনে পরিকল্পনা ও ২০৫০ সালের মধ্যে গ্রিন হাউজ গ্যাসের নিঃসরণ শূণ্যতে নিয়ে আসতে নির্বাহী আদেশ জারি ৯. সামরিক বাহিনীতে তৃতীয় লিঙ্গের প্রবেশে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা বাতিল এবং বিদ্যালয়ে তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থীদের জন্য ওবামা যুগের নির্দেশনা চালু করা ১০. আমেরিকার ৩০ ভাগ ভূমি ও পানি সম্পদ সম্পূর্ণভাবে রক্ষায় নির্বাহী আদেশ জারি ১১. অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও মার্কিন নাগরিকদের জন্য নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি ১২. বিশ্বনেতাদের নিয়ে ‘ক্লাইমেট ওয়ার্ল্ড সামিট’ আয়োজন ও জলবায়ুর পরিবর্তন ঠেকাতে একযোগে কাজ করা
১৩. ট্রাম্পের ট্যাক্স কর্তনের আদেশ বাতিল করে ধনী মার্কিন নাগরিকদের ওপর ট্যাক্স চাপানো ১৪. সহিংসতা রোধে অস্ত্র আইনের ফাঁকফোকর চিহ্নিত করে তা সংশোধনের জন্য কংগ্রেসে পাঠানো এবং ফেডারেল এজেন্সিকে এই আইন তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেয়া ১৫. নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধে ভায়োলেন্স এগেইনস্ট উইম্যান অ্যাক্ট-১৯৯৪ নবায়ন করা ১৬. এলজিবিটি সম্প্রদায়ভুক্ত আমেরিকানদের রক্ষায় ‘ইকুয়ালিটি অ্যাক্ট’ চালু ১৭. আফ্রিকান-আমেরিকানদের অধিকার রক্ষায় তাদের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগের উন্নতি ও উচ্চশিক্ষা অর্জনে বাধা দূরের ব্যবস্থা নেয়া ১৮. গ্রামীন আমেরিকাকে বাঁচাতে অর্থনৈতিক সাহায্য ও কর্মক্ষেত্রের ব্যবস্থা করা এবং আমেরিকান কৃষক, খামারি ও মৎসজীবিদের পাশে দাঁড়ানো সূত্র : সিবিএস নিউজ, জো বাইডেন ডট




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com