ঝালকাঠির নলছিটি সুবিদপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জুয়েল (২৬) কে ঘর থেকে ডেকে অস্ত্র ঠেকিয়ে তুলে নেওয়ার তিন দিন পরে ইউনিয়নের তালতলা বাজার সংলগ্ন নাপিত বাড়ির পোলের পার্শ্ব থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে স্থানীয়রা জুয়েলকে উদ্ধার করে পুলিশের পরামর্শে নলছিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে শেবাচিম-এ ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।
জুয়েলের বাবা মজিবর হাওলাদার বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে দলীয় কোন্দলে জাড়িয়ে পরে তার ছেলে। এর সুত্র ধরে ১১ এপ্রিল তাকে ডেকে নিয়ে মারধর করে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারন সম্পাদক। এক বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখান থেকে ধরে নিয়ে মারধর করে তুলে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় রবিবার সকালে জুয়েলের মা নলছিটি থানায় গেলে থানা চত্বরে উপস্থিত ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি সিফাত হাওলাদার ও সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম তাড়িয়ে দেয়। নিরুপায় হয়ে পুত্রের সন্ধানে রবিবার দুপুর ১টার দিকে মুকুল বেগম ঝালকাঠি পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হলে দেখা না পেয়ে একটি ফোন নাম্বার দিয়ে কোন অভিযোগ থাকলে তার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে বলে।
এ অবস্থায় সেখান থেকে রাস্তায় বেড়িয়ে কাদতে কাদতে হেটে যাওয়ার সময় কয়েকজন সাংবাদিকের সাথে দেখা হলে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ জানিয়ে পুত্রকে ফিরে পেতে আহাজারী করেন। এরপর তিন দিন পরে আজ সকালে তাকে স্থানীয়রা রাস্তার পার্শ্বে দেখতে পেলে পুলিশের পরামর্শে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে নিয়েই আমরা ব্যস্ত রয়েছি। একটু সুস্থ হলে থানায় মামলা দায়ের করা হবে।
তিনি আরও জানান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মান্নান সিকদারের ছেলে মামুন সিকদার ঘটনা ভিন্নস্থানে প্রবাহিত করতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা না নেওয়ায় সাধারন ডায়েরী করতে গেলেও তা ওসি স্যার গ্রহণ করেনি।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি সিফাত ও সেক্রেটারী তরিকুল জানায়, তরিকুলে বেশ কয়েকটি মাছে ঘের আছে এবং গত ৬ এপ্রিলকে বা কারা তার একটি মাছের ঘেরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলছে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি জিডি করেন। তখন ওসি সাহেবের পরামর্শ অনুযায়ী তারা পাহারাদার নিয়োগ করলে শনিবার রাতে তাদের ঘেরের কাছে অজ্ঞাত লোকজন ঘোরাফেরা করলে তারা ধাওয়া করে ও ফোন করে তাদেরকে জানায়। এসময় নলবুনিয়া গ্রামে মোল্লারহাট ক্যাম্পের পুলিশের এএসআই নজরুলও সেখানে থাকে তাকে নিয়ে ঘেরের কাছে এসে খোজাখুজি করে কাউকে না পেলেও এএসআই নজরুল ঘেরের পাশে পরিত্যাক্ত ১টি মোবাইল ফোন ও ১টি বীষের বোতল পায়।
তিনি তাৎক্ষনিক বিষয়টি ওসিকে জানায় এবং আজ সকালে তারা মোবাইল ও বিষের বোতল নিয়ে থানায় গেলে তখন জুয়েলের মা তার ছেলেকে খুজে পাচ্ছেনা অভিযোগ নিয়ে আসে। আসলে অপকর্মের দায় এড়াতে জুয়েল আত্মগোপন করে গুমের নাটক করছে। আমরা তাকে মারধর বা গুম কোন ঘটনার সাথেই জড়িত নই।
এ ব্যাপারে নলছিটি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাখায়ত হোসেন বলেন, কাল সকালে জিডি করতে আসলে আমি সবার মোবাইল নম্বর চেয়েছি। তার ফিরে না আসায় জিডি করতে আসেনি। আজ সকালে আমাকে জানানোর পরে আমি হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেছি। তারা অভিযোগ দিতে এসেছিল। ঘটনা সাজানো তাই আমি এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেইনি।
এমআইপি/প্রিন্স/খবরপত্র