বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
সোনালু, কৃষ্ণচূড়া ও জারুল ফুল প্রকৃতিকে সাজিয়েছে ভিন্ন সাজে প্রচন্ড গরমে বরিশালের তৈরী হাত পাখা দেশব্যাপি মানুষের শরীর শীতল করছে, ভাল নেই পাখা কারিগররা সুটিয়াকাঠী ইউনিয়নের গণ মানুষের ঢল নেমেছে আনারস প্রতীকের পক্ষে মেধাবী শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ালো দুর্গাপুর উপজেলা প্রশাসন জলঢাকায় নির্ধারিত সময়ের আগেই স্কুল বন্ধ করার অভিযোগ কালীগঞ্জে পল্লী উদ্যোক্তাদের মাঝে বিআরডিবির ঋণ বিতরণ সৎ ও নিষ্ঠাবান উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবী-উল-কবির নকলায় জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ ফটিকছড়িতে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় বশর নামে এক সিএনজি ড্রাইভারকে মারধর! দুর্গাপুরে বিশ্বমা দিবস উপলক্ষে গাছের চারা বিতরণ

ইয়াবা সেবনে হতে পারে তাৎক্ষণিক মৃত্যু

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

চাহিদার চেয়ে যোগান কম। তাই আরও ক্ষতিকর উপাদান দিয়ে বানানো হচ্ছে নকল ইয়াবা। এতে করে তাৎক্ষণিক মৃত্যুও ঘটতে পারে সেবনকারীর। এমনটা জানালেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা।
মাদক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলো বলছে, মাদকাসক্তের একটা বড় অংশই ইয়াবায় আসক্ত। জব্দকৃত মাদকের প্রায় অর্ধেকই থাকে ইয়াবা। স্বভাবতই চাহিদার চেয়ে যোগান কম এই মাদকের। যার কারণে বিভিন্ন রাসায়নিক দিয়ে ভেজাল বড়ি বানিয়ে বাজারে ছাড়ছে কারবারিরা। যা সেবনে দেখা দেবে বিষক্রিয়া। তাৎক্ষণিক মৃত্যু হতে পারে মাদকসেবীর।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কেন্দ্রীয় প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক ডা. দুলাল কৃষ্ণ সাহা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা দিনে যতগুলো জব্দকৃত ইয়াবা চালানের নমুনা পরীক্ষা করি, তার মধ্যে ৪-৫টি চালানে নকল বা ভেজাল ইয়াবা পাই। প্রথম পেয়েছিলাম জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল। তবে এখন আরও অনেক কিছুর মিশ্রণে বানানো হচ্ছে নকল ইয়াবা। এগুলো সেবন করলে দেখা যায় মাদকসেবীরা সেভাবে উদ্দীপনা বোধ করে না। তখন তারা একাধিক ইয়াবা সেবন করে। তাতেও বেড়ে যায় তাৎক্ষণিক মৃত্যুর ঝুঁকি।’ এই রাসায়নিক পরীক্ষক আরও বলেন, ‘এ সব নকল ইয়াবার একেকটি বড়ি বানাতে ২-৩ টাকার বেশি লাগে না। এ কারণেও মাদক ব্যবসায়ীরা এ পথ বেছে নেয়। এই পিলগুলোকে ইয়াবার রূপ দিতে এমন কিছু রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়, যাতে বিষক্রিয়া হবেই।’
ইয়াবার চালানে জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের রাসায়নিক পরীক্ষাগারের সহকারী রাসায়নিক পরীক্ষক শফিকুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রায় বছরখানেক আগে আমরা একটি চালান পরীক্ষা করি। তাতে ইয়াবা তৈরির একটি প্রধান উপকরণই ছিল না। অবাক হয়েছিলাম আমরা। এখন প্রতিদিনই জব্দকৃত চালানে নকল ইয়াবার স্যাম্পল পাচ্ছি। গত এক বছরে কমপক্ষে এক হাজার ইয়াবা চালানের নমুনায় ভেজাল ইয়াবা পেয়েছি।’
শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু যে ঢাকার চালানগুলোতেই ভেজাল থাকে, তা নয়। সারা দেশ থেকে আসা বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাবের জব্দকৃত ইয়াবা চালানের নমুনাতেও ভেজাল মাদক পাচ্ছি।’
মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের গোয়েন্দা সূত্র বলছে, মাদক কারবারিরা গ্রাহকদের হাতে চালান তুলে দেওয়ার সময় ইয়াবার সঙ্গে গর্ভনিরোধক বড়িও মিশিয়ে দিচ্ছে। তাতেও আবার আসক্ত হচ্ছে আরেকটি শ্রেণি। রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ আশেপাশের কিছু বস্তিতে এমন মাদকসেবীর সন্ধান পাওয়া গেছে।’
ইয়াবা সেবনে ক্ষতি: ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ মেনটাল হেলথের সাইকোথেরাপির অধ্যাপক মনোবিজ্ঞানী ড. মোহিত কামাল বলেন, ‘অনেকে ইয়াবা গ্রহণ করে যৌন উদ্দীপক হিসেবে। কিন্তু এটি সেবনে ক্রমান্বয়ে যৌনক্ষমতা ধ্বংস হয়ে যায়। শুক্রাণু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে সন্তান উৎপাদন ক্ষমতাও কমে যায়। মেয়েদের মাসিকেও সমস্যা হয়।’ ‘এ ছাড়াও, হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, লিভার, কিডনি থেকে শুরু করে শরীরের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। ইয়াবা খেলে রক্তচাপ বাড়ে। লিভার সিরোসিস থেকে লিভার ক্যান্সারও হতে পারে।’
মোহিত কামাল আরও বলেন, ‘ইয়াবা খেলে মস্তিষ্কের সরু রক্তনালী ছিড়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঘটনাও আমরা দেখেছি। ব্রেইন ম্যাটার তথা মগজটাও সঙ্কুচিত হয়ে যায়। সুস্থ মানুষের যদি ১৫০০ গ্রাম থাকে সেটা শুকিয়ে এক হাজার গ্রামের নিচে নেমে যায় মাদকসেবীর। জেনেটিক মলিকিউলও নষ্ট করে দিতে পারে ইয়াবা। ফলে পরবর্তী প্রজন্মও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র বলছে, ইয়াবার বড় চালানগুলো মূলত মিয়ানমার থেকে নাফ নদী হয়ে কক্সবাজার ও টেকনাফে প্রবেশ করে। এরপর সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ও বিমানবন্দর দিয়ে বিদেশে পাচার হয়।
সঙ্গে ভেজাল মদ: নকল ইয়াবার পাশাপাশি সম্প্রতি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভেজাল মদ ছড়িয়ে পড়েছে। বছরের প্রথম মাসেই মদপানে মৃত্যু হয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক নারী ও পুরুষের। তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছেন। বেশিরভাগ মৃত্যুর ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ ও বিষাক্ত মদপানকে দায়ী করা হচ্ছে। সম্প্রতি রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকায় ভেজাল মদের কারখানায় অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। অভিযানে ভেজাল মদ তৈরির সময় ৬ জনকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)-এর উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভেজাল মদ খেয়ে যারা মারা গেছেন, সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছি আমরা। ধারণা করা হচ্ছে, এই কারখানা (ভাটারা) থেকে মদগুলো সেখানে গিয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।’-বাংলাট্রিবিউন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com