গরু বাজারের জন্য নির্ধারিত স্থান থাকলেও সাপ্তাহিক বাজারের দিনে গরু বাজারের দৌরাত্ম্যে বাজারের প্রধান সড়ক, গুরুত্বপূর্ণ মার্কেট, সোনালী ব্যাংকের প্রবেশপথ সহ প্রায় দেড় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কার্যত বন্ধ থাকে। এমন বাস্তব চিত্র নরসিংদির বেলাব উপজেলার পোড়াদিয়া বাজারের। উল্লেখ্য, বেলাব উপজেলার পোড়াদিয়া বাজারটি অনেক পুরাতন ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বেলাব, মনোহরদী, বাজিতপুর ও কটিয়াদি উপজেলার মানুষের নির্ভরযোগ্য ব্যবসা কেন্দ্র এ বাজারে হাজার হাজার মানুষ দরকারী পণ্য কেনা-বেচা, ব্যাংকে আর্থিক লেনদেন, রোগীদের স্বাস্থ্যসেবাসহ নানাবিধ প্রয়োজনে আসেন। সপ্তাহে দু’দিন বাজার বসলেও সাধারণত বৃহস্পতিবার সবচেয়ে জমজমাট হয়। বাজার ঘুরে দেখা যায় প্রধান সড়ক সংলগ্ন পশ্চিম পাশে গরু বাজারটি অবস্থিত। এর ঠিক উত্তরপাশে সোনালী ব্যাংক ও কাপড়ের মার্কেট। পাশাপাশি কসমেটিকস, ফ্রিজ, টেলিভিশন ও ইলেকট্রনিক পণ্যের শো-রুম। প্রতি বৃহস্পতিবার গরু বাজার থাকায় এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নারী ক্রেতাসহ সকল শ্রেণির ক্রেতার সংকটে কেনা-বেচা কার্যত বন্ধ থাকে। বিক্রেতারা চরম ক্ষোভ ও হতাশার কথা জানিয়ে গরু বাজারটি অন্যত্র সরানোর দাবি জানিয়ে আসছেন বহু আগে থেকেই। তবুও কর্ণপাত করছেননা কর্তৃপক্ষ। ফার্নিচার ব্যবসায়ী মোঃ এলাহি ভূঁইয়া জানান ‘বাজারের দিনে বহু ক্রেতা এসে ফিরে যায়। আমার দোকানের সামনে গরু উঠানামার কারণে বাজারের দিনে এক টাকার ব্যবসাও করতে পারছিনা। হাসেম আলী সুপার মার্কেটের সত্বাধিকারী মোঃ শাকিল মিয়া জানান ‘আমার মার্কেটে মূলত কাপড়ের দোকান সবগুলো। এখানকার ক্রেতারা প্রায় অধিকাংশই মহিলা। গরু বাজারের প্রচুর ভীড় থাকায় কেউ বাজারে আসতে চায়না। এতে ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারেনা। প্রতিনিয়ত তারা আমার কাছে অভিযোগ করছে। অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে নিদারুণ কষ্টে কাটাচ্ছে দিন।’ গরু বাজারের ইজারাদার সাইদুল হক জানান ‘বাজারের দিনে প্রায় ৭/৮ টি উপজেলার গরু এখানে আসে বিভিন্ন পরিবহনের মাধ্যমে। গরু বাজারের স্থান খুব ছোট থাকায় গরু নিয়ে ব্যবসায়ীদের রাস্তায়, অলিগলির মধ্যেও দাঁড়াতে হয়। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি গরু বাজারের পরিধি বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য।’ পোড়াদিয়া বাজার কমিটির সভাপতি জানান ‘আমরা ছড়িয়ে থাকা কাপড়ের মার্কেটটিকে পরিকল্পনা মাফিক একটা স্থানে নিয়ে এসে বড় দুইতলা বা তিনতলা মার্কেটের জন্য মাননীয় চেয়ারম্যান মহোদয়ের মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের আবেদন জানিয়েছি এক বছর আগেই।” এ ব্যাপারে পাটুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব ইফরানুল হক ভূঁইয়া জামান জানান ‘আমি আবেদন পেয়েছি। ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে বাজার কমিটির সাথে আলাপ করেছি। অচিরেই আমরা ইউএনও মহোদয়ের এ ব্যাপারে আবেদন জানাব। ভুক্তভোগীদের হাহাকার আমাকেও কষ্ট দেয়।’ এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব শামীমা শরমিন জানান ‘আমার নিকট আবেদন আসলে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।